ভাগীরথীর পাড়ে এক কিশোরীকে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠল আট যুবকের বিরুদ্ধে।
শুক্রবার রাতে মুর্শিদাবাদের বেলডাঙা থানার মির্জাপুরের ঘটনা। দু’জনকে পুলিশ হাতে-নাতে আটক করেছিল রাতেই। শনিবার দুপুরে ওই কিশোরীর বাবা এসে থানায় গণধর্ষণের অভিযোগ করেন। আটক দু’জনকে গ্রেফতার দেখিয়ে পরদিন, রবিবার বহরমপুরের সিজেএম আদালতে তোলে পুলিশ। ভারপ্রাপ্ত বিচারক সুতীর্থ বন্দ্যোপাধ্যায় তাদের চার দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠান। আদালতে গোপন জবানবন্দিও দেয় ওই কিশোরী। এ দিনই মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ওই কিশোরীর ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয়। আপাতত বহরমপুরের একটি হোমে আছে সে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নওদা থানা এলাকার বাসিন্দা, ওই কিশোরী নবম শ্রেণির ছাত্রী। শুক্রবার গাজনের মেলা দেখবে বলে বাড়িতে কাউকে কিছু না জানিয়েই বেরিয়ে গিয়েছিল সে। কিশোরী পুলিশকে জানিয়েছে, প্রায় ৮-১০ কিলোমিটার দূরে বেগুনবাড়িতে এক দূর সম্পর্কের আত্মীয়ের কাছে সে যায়। পরে ওই আত্মীয়ের বন্ধুদের সঙ্গে মির্জাপুরে বেড়াতে যায়। সেখানে তাকে চার যুবক ভাগীরথীর পাড়ে নিয়ে গিয়ে পরপর ধর্ষণ করে। পরে কিছুটা দূরে একটি ঝোপে টেনে নিয়ে গিয়ে আরও চার জন ধর্ষণের চেষ্টা করে বলে তার অভিযোগ।
ওই রাতেই বেলডাঙা থানার পুলিশের কাছে খবর আসে, নদীর পাড়ে এক কিশোরীর উপর ‘অত্যাচার’ হচ্ছে। থানা থেকে ৭ জন পুলিশ কর্মী ও অফিসার বেরিয়ে পড়েন। পুলিশের দাবি, মির্জাপুরে একটি ঝোপের কাছে চার জনের সঙ্গে কিশোরীকে দেখতে পায় তারা। পুলিশ দেখে পালায় দুই যুবক। বাকি দু’জনকে আটক করা হয়। রাতেই কিশোরী ও দুই যুবককে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। পর দিন কিশোরীর বাবা আট জনের নামে গণধর্ষণের অভিযোগ করেন।
অভিযুক্তপক্ষের আইনজীবী রুদ্রনীল ঘোষাল বলেন, “৩৬৭ (ডি) ধারায় গণধর্ষণের মামলা দায়ের হয়েছে। তবে, অভিযুক্তদের মধ্যে বেশ কয়েক জনের ১৮ বছরের নীচে বয়স। জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডে মামলার জন্য আমরা বয়সের প্রমাণপত্র-সহ আদালতের কাছে আবেদন করব।” এ দিন আদালত চত্বরে ধৃত দু’জনই ধর্ষণের অভিযোগ অস্বীকার করে। এক জনের দাবি, “এলাকায় গাজনের মেলা থেকে আমরা দু’জন বন্ধু শনিবার রাতে যখন বাড়ি ফিরছিলাম, সেই সময়ে পুলিশ গ্রেফতার করে। ওই ঘটনার সঙ্গে আমি কোনও ভাবেই জড়িত নই।” আর এক জন বলে, “ঘটনার রাতে চার বন্ধু মাঠে শৌচকর্ম করতে গিয়েছিলাম। কোথা থেকে কী হয়ে গেল, বুঝতে পারছি না।”
পুলিশের দাবি, কিশোরীর কথাতেও কিছু ধোঁয়াশা রয়েছে। একা-একা সে বাড়ি থেকে কেন বেরিয়েছিল, দূর সম্পর্কের কোন আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছিলস্পষ্ট ভাবে তা জানাতে পারেনি ওই স্কুলছাত্রী। মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার সৈয়দ ওয়াকার রাজা বলেন, “বেলডাঙায় গণধর্ষণের অভিযোগটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। বাকি অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy