Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪
নদিয়া জেলা সম্মেলন

জেলা স্তরেও নতুন মুখ আনার লক্ষ্য সিপিএমে

লোকসভা ভোটের পরপরই দাবি উঠেছিল দলের বিভিন্ন স্তরে। এবার সেই দাবিকে একপ্রকার মান্যতা দিয়ে তারুণ্যকে সামনে রেখে নদিয়া জেলা সম্মেলন করতে চলেছে সিপিএম। আজ, ঘূর্নি পুরসভা লজে শুরু হচ্ছে দু’দিনের সম্মেলন। সেখানে জেলা কমিটিতেও বেশ কিছু রদবদল ঘটতে চলেছে বলে অন্দরের খবর।

সুস্মিত হালদার
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০১৪ ০০:০৫
Share: Save:

লোকসভা ভোটের পরপরই দাবি উঠেছিল দলের বিভিন্ন স্তরে। এবার সেই দাবিকে একপ্রকার মান্যতা দিয়ে তারুণ্যকে সামনে রেখে নদিয়া জেলা সম্মেলন করতে চলেছে সিপিএম। আজ, ঘূর্নি পুরসভা লজে শুরু হচ্ছে দু’দিনের সম্মেলন। সেখানে জেলা কমিটিতেও বেশ কিছু রদবদল ঘটতে চলেছে বলে অন্দরের খবর। জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, ‘‘সংগঠনের লোকাল ও জোনাল কমিটিগুলির পরে এ বার জেলা স্তরের নেতৃত্বেও নতুন মুখ তুলে আনা হবে। যাতে তাঁরা একেবারে রাস্তায় নেমে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে পারেন। পাশাপাশি জেলা কমিটিতে মহিলা ও সংখ্যালঘু প্রতিনিধি বাড়ানো হবে।”

সিপিএমের নদিয়া জেলা কমিটির সদস্য সংখ্যা ৫৪। এর মধ্যে ৫০ বছরের নীচে সদস্য সংখ্যা এই মুহুর্তে মাত্র ২৫। ৫০ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৯ জন। ৬০ থেকে ৬৫ বছরের সদস্য সংখ্যা ১০, আর ৬৫ থেকে ৭০ বা তার বেশি বয়সের সদস্যের সংখ্যা ২০। ফলে শুধু লোকাল বা জোনাল স্তরে নেতৃত্বের পরিবর্তন করলেই যে কাজ শেষ হয়ে যাবে না, সেই সঙ্গে জেলা স্তরেরও পরিবর্তন দরকার, তা বুঝতে পারছেন সিপিএম নেতৃত্ব। দলের এক সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বলেন, ‘‘আমরা প্রস্তুত। এখনও পর্যন্ত যা ঠিক আছে তাতে প্রায় ৮ থেকে ১০টা মুখের পরিবর্তন হবে। এই মুহুর্তে আমাদের জেলা কমিটির সদস্যদের গড় বয়স ৫৮। সেটাকে কমিয়ে অন্তত ৫৫ বছর করার পরিকল্পনা আছে।’’

তবে নেতৃত্বে নতুন ও সক্রিয় মুখ তুলে আনার এই উদ্যোগ কিন্তু শুরু হয়েছে অনেক দিন আগে থেকেই। লোকসভা ভোটে ভরাডুবির পরে সূর্যকান্ত মিশ্রর উপস্থিতিতে জেলা কমিটির সদস্যরা নিষ্ক্রিয় ও প্রবীণ নেতৃত্বকে সরিয়ে লড়াকু ও অপেক্ষাকৃত সক্রিয় নেতৃত্বকে তুলে আনার দাবি জানিয়েছিলেন। একই দাবি ওঠে ডিওয়াইএফ-এর ভিতর থেকেও। এর আগে ডিওয়াইএফ ও এসএফআই-এর জেলা সম্মেলনে অপেক্ষাকৃত নতুন মুখকে নেতৃত্বে তুলে আনা হয়েছিল। সিপিএমের অন্দরেও নতুন মুখ তুলে আনার দাবি জোরালো হচ্ছিল তাই।

দলীয় সূত্রে খবর, সাংগঠনিক খোলনলচেও বদলাচ্ছে সিপিএমে। ৭১টি লোকাল কমিটি বেড়ে হয়েছে ৮২টি। হাঁসখালিতে ৪ থেকে ৭টি, শান্তিপুরে ৩ থেকে ৭টি, নাকাশিপাড়ায় ৪ থেকে ৬টি, ধুবুলিয়ায় ২ থেকে ৪টিআরও বেশ কিছু জোনাল কমিটিতে লোকাল কমিটির সংখ্যা বেড়েছে। এই ৮২টি লোকাল ও ১৬টি জোনাল কমিটিতে কিছু নতুন মুখের সম্পাদক করা হয়েছে। যেমন কল্যাণী জোনাল কমিটির সম্পাদক পরিবর্তন হয়েছেন, তেমনই এই জোনাল কমিটির মধ্যে ছ’টি লোকাল কমিটির সম্পাদকও পরিবর্তন হয়েছে। একই ভাবে জেলা কমিটিতেও যে পরিবর্তন আসতে চলেছে, তা আর অস্বীকার করেননি সিপিএম-এর জেলা কমিটির সম্পাদক সুমিত দে। তিনি বলেন, ‘‘আমরা এবার অভিজ্ঞতা ও তারুণ্যের মধ্যে সমন্বয় রেখেই জেলা কমিটি গঠন করব।’’

জেলা নেতৃত্বের দাবি, এই কঠিন সময়েও আগের তুলনায় সদস্য সংখ্যা বেড়েছে। ২০১১ সালে নদিয়া জেলায় সিপিএম-এর সদস্য সংখ্যা ছিল প্রায় নয় হাজার তিনশো। ২০১২ সালে অনেক সদস্যই সদস্যপদ পুনর্নবীকরণ করাননি। ২০১৩ সালে সদস্য সংখ্যা আবার বেড়ে হয় প্রায় নয় হাজার পাঁচশো। এই বছর সদস্য সংখ্যা আরও প্রায় দু’শো বেড়েছে বলে সিপিএম-এর দাবি। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই বছর প্রায় ছ’শো জনকে নতুন সদস্য পদ দেওয়া হয়েছে। আবার প্রায় চারশো জনের হয় সদস্য পদ খারিজ হয়েছে কিংবা নবীকরণ করেননি তাঁরা। নেতৃত্বের দাবি, নতুন ছ’শো সদস্যের মধ্যে সিংহভাগই নতুন প্রজন্মের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE