Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

ডাকবাংলো-পানুটিয়া সড়কে শুরু হল সংস্কার

গ্রামীণ রাস্তার তকমা সরিয়ে এবার পূর্ত দফতরের খাতায় গুরুত্ব পেতে চলেছে ডাকবাংলা-পানুটিয়া সড়ক। এতদিন খাতায় কলমে গ্রামীণ রাস্তা হিসাবে থাকলেও ১১.৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়কে চলাচল করত ভারী পণ্যবাহী গাড়ি। কিন্তু সেই অনুপাতে রক্ষণাবেক্ষণ হত না। ক্রমশই খারাপ হচ্ছিল রাস্তার অবস্থা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কান্দি শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০১৪ ০০:২৩
Share: Save:

গ্রামীণ রাস্তার তকমা সরিয়ে এবার পূর্ত দফতরের খাতায় গুরুত্ব পেতে চলেছে ডাকবাংলা-পানুটিয়া সড়ক। এতদিন খাতায় কলমে গ্রামীণ রাস্তা হিসাবে থাকলেও ১১.৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়কে চলাচল করত ভারী পণ্যবাহী গাড়ি। কিন্তু সেই অনুপাতে রক্ষণাবেক্ষণ হত না। ক্রমশই খারাপ হচ্ছিল রাস্তার অবস্থা। গত তিন বছর ধরে স্থানীয় বাসিন্দারা ক্রমাগত দাবি জানিয়েও কোনও ফল পাননি। সম্প্রতি অবশ্য পূর্ত দফতরের নেক নজরে পড়েছে রাস্তাটি। শুরু হয়েছে মেরামতির কাজ। পূর্ত দফতরের মুশির্দাবাদ হাইওয়ে ২ নম্বর বিভাগের বিভাগীয় আধিকারিক মুস্তাফা কালাম জানান, “রাস্তাটি ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছিল, সে কথা অস্বীকার করার কোনও উপায় নেই। অনেক চেষ্টার পর রাস্তা মেরামতির কাজ শুরু করা গিয়েছে। আশা করছি বছরখানেকের মধ্যেই সব কাজ সেরে ফেলা সম্ভব হবে।”

পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কোনও গ্রামীণ সড়কে সর্বোচ্চ তিন টন ওজনের পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল করার কথা। সেই হিসেবেই তৈরি হয়েছিল ডাকবাংলা-পানুটিয়া সড়ক। কিন্তু এই রাস্তায় যাতায়াত করে ৩০-৪০ টনের পণ্যবাহী ট্রাক। কারণ হিসেবে সকলেই রাস্তাটির এলাকাগত অবস্থানকেই দায়ী করছেন। ময়ূরাক্ষী নদীর পাশ দিয়ে যাওয়া ওই রাস্তায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পরিবাহিত হয় বালি বোঝাই ট্রাক। নদী থেকে বালি তুলে ভারী ট্রাকে বোঝাই হয়ে মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন এলাকা এবং পার্শ্ববর্তী নদিয়া, বর্ধমান জেলাতেও পৌঁছে যায়। তাই শুধু ওজনে নয়, সংখ্যাতেও ভারী গাড়ি পরিবহনের হার যথেষ্ট বেশি।

পূর্ত দফতরের এক কর্তা জানালেন, শুধু ভারী গাড়ি পরিবহনের জন্যই নয়। যে বালি নিয়ে যাওয়া হয়, তার বেশিরভাগই ভিজে। ট্রাক থেকে ক্রমাগত জল পড়ে রাস্তায়। একের পর এক লরি থেকে এভাবে জল পড়েও রাস্তার ক্ষতি হচ্ছে। বিশেষত যে অংশে গাড়ি দাঁড় করিয়ে ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতর কর আদায় করে সেখানে লাইন দিয়ে লরি দাঁড়িয়ে পড়ে। ফলে খুব ছোট অংশের উপর বেশি চাপ পড়তে থাকে। এতেই পিচের চাদরে ঢাকা রাস্তার হাল খারাপ হচ্ছে।

এ সব কথা মাথায় রেখেই পূর্ত দফতর তিন কিলোমিটার রাস্তা ঢালাই করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ময়ূরাক্ষীর পাড় ঘেঁষে ১১.৩ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটির উপরে রয়েছে মোট ১০ টি বালিঘাট। রয়েছে ডাকবাংলো বাজার। তাই বাজার সংলগ্ন এক কিলোমিটার এবং বালিঘাট সংলগ্ন প্রায় ২ কিলোমিটার রাস্তা ঢালাই করে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে পূর্ত দফতর। বছর খানেক আগে বাহাদুরপুর মোড় এলাকায় একটি চেক পোষ্টের চার দিকে প্রায় চারশো মিটার রাস্তা পরীক্ষা মূলক ভাবে ঢালাই করে দেওয়া হয়। তাতে সুফল পেয়েই নারায়ণপুর, মড্ডা, প্যাটারীর মতো দশটি বালির ঘাট সংলগ্ন এলাকায় গড়ে দু’শো মিটার রাস্তা ঢালাই করার সিদ্ধান্ত নিয়েই ওই কাজ শুরু করা হয়েছে বলে দাবি পূর্তকর্তাদের। দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তা ঢলাই করতে খরচ পড়বে পাঁচ কোটি টাকা। বাকি রাস্তা মেরামতির জন্য খরচ হবে আট কোটি টাকা।

বিভাগীয় আধিকারিক মুস্তাফা কালাম বলেন, “ওই রাস্তাটি বীরভূম জেলার সঙ্গে যোগাযোগের বিকল্প রাস্তা হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। তাই গুরুত্ব অনুযায়ী আমরা চেষ্টা করছি রাস্তাটিকে আরও উন্নত করার।” এ দিকে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে বছর চারেক আগেও ওই রাস্তা একবার মেরামতি করা হয়েছিল। কিন্তু কিছু দিনের মধ্যেই সে রাস্তা ভেঙে যায়। দীর্ঘদিন রাস্তা মেরামতির দাবি জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। বড়ঞার কংগ্রেস বিধায়ক প্রতিমা রজক বলেন, “রাস্তা মেরামত করার দাবি জানিয়ে ছিলাম বিধানসভাতে। তারপরে কথা বলেছিলাম পূর্তমন্ত্রীর সঙ্গেও। দেরিতে হলেও কাজ শুরু হওয়ায় আমি খুশি।” কান্দি ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনে সভাপতি ফুলু মিঞা বলেন,“সংগঠনের পক্ষ থেকে আমরা বহুবার বিভিন্ন মহলে দাবি জানিয়ে আসছি। এতদিনে রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু হওয়ায় পূর্ত দফতরের কর্তাদের ধন্যবাদ জানাই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

dakbungalow panutia kandi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE