Advertisement
E-Paper

নিকাশিনালার জল পড়ে লক্ষাধিক টাকার মাছ নষ্ট

নিকাশি নালার জল মিশে প্রায় ৩০ কুইন্ট্যাল মাছ পচেছে। দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে বিস্তীর্ণ বেলডাঙার এলাকা জুড়ে। ডুমনি দহের এই চেহারায় আশপাশের মানুষের যেমন দুর্দশা, তেমনই মাথায় হাত ব্যবসায়ীদের। কিন্তু ঠিক কী কারণে এত মাছের মৃত্যু হল তা কেউই বলতে পারছেন না। তবে মৎস্যজীবী থেকে সাধারণ মানুষ, সকলেই মনে করছেন গত পাঁচ দিনের বৃষ্টিতে গোটা এলাকার বর্জ্য এসে পড়েছে ডুমনি দহে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০১৪ ০০:৫১
ঘটনাস্থলে গ্রামবাসীরা (বাঁ দিকে)। এ ভাবেই পড়ে রয়েছে মরা মাছ (ডান দিকে)। ছবি: সেবাব্রত মুখোপাধ্যায়।

ঘটনাস্থলে গ্রামবাসীরা (বাঁ দিকে)। এ ভাবেই পড়ে রয়েছে মরা মাছ (ডান দিকে)। ছবি: সেবাব্রত মুখোপাধ্যায়।

নিকাশি নালার জল মিশে প্রায় ৩০ কুইন্ট্যাল মাছ পচেছে। দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে বিস্তীর্ণ বেলডাঙার এলাকা জুড়ে। ডুমনি দহের এই চেহারায় আশপাশের মানুষের যেমন দুর্দশা, তেমনই মাথায় হাত ব্যবসায়ীদের।

কিন্তু ঠিক কী কারণে এত মাছের মৃত্যু হল তা কেউই বলতে পারছেন না। তবে মৎস্যজীবী থেকে সাধারণ মানুষ, সকলেই মনে করছেন গত পাঁচ দিনের বৃষ্টিতে গোটা এলাকার বর্জ্য এসে পড়েছে ডুমনি দহে। প্রবল জল স্রোতে প্রচুর পলিব্যাগ ভেসে এসে জড়ো হয়েছে, আর তা থেকেই এই অবস্থা। রুই, কাতলা, ভেটকি, আমেরিকান রুই, গ্লাস কাপের মত বড় বড় মাছ মরে গিয়েছে।

মুর্শিদাবাদের বেলডাঙা পুরসভার ছোট ছোট নিকাশি নালাগুলি মিশেছে একটি বড় নিকাশি হাইড্রেনে। সেই হাইড্রেন এসে পড়ছে ডুমনি দহে। এটা নতুন ব্যবস্থা নয়। ইংরেজ আমল থেকেই এই ব্যবস্থা প্রচলিত। আবার প্রায় এক-দেড়শো বছর ধরেই এই দহে মাছ চাষ করে আসেছেন স্থানীয় মৎস্যজীবী সম্প্রদায়। কিন্তু এমনটা কোনও দিন হয়নি।

বেলডাঙা-১ ব্লকের বেগুনবাড়ি ও কাপাসডাঙায় প্রায় চার কিলোমিটার লম্বা ডুমনি দহ। এর মধ্যে দু’কিলোমিটার অংশে মাছ চাষ করেন ২৬৪ জন মৎস্যজীবী। আন্ডিরণ মৎসজীবী সমবায় সমিতির সম্পাদক মহাদেব হালদার বলেন, ‘‘দীর্ঘ দিন ধরে জল জমে ছিল। আবর্জনা জমে থাকায় সেই জল বেরিয়ে যেতে পারছিল না। গত পাঁচ দিন প্রবল বৃষ্টিতে সব আবর্জনা ধুয়ে নোংরা জল ডুমনীতে মিশতে শুরু করে। তার পরই মাছ মরা শুরু হয়।” তিনি জানান সদর মহকুমা প্রশাসনকে বিষয়টি জানান হয়েছে। প্রশাসনের প্রতিনিধিরা অবস্থা দেখে মৃত মাছের ছবি তুলে নিয়ে গিয়েছেন। সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন।

কিন্তু কেন এমনটা হবে? তা নিয়েও রয়েছে মতভেদ। শতাধিক বছরের পুরনো ওই নিকাশি ব্যবস্থা, আবার ওই ডুমনি দহে সেই সময় থেকেই মৎস্য চাষ করে আসছেন স্থানীয় মানুষ। তা হলে কী এমন হল এই বছর। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন বেলডাঙা পুরসভার বয়স মাত্র ৩৩ বছর। আর এই কয়েক বছর হল নিকাশি নালাগুলিকে বাঁধিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাসিন্দাদের আশঙ্কা তাতেই বিপত্তি। আন্ডিরণ মৎসজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি সুরজিৎ হালদার বলেন, “আগে ঐ নিকাশি নালাটি মাটির ছিল। ফলে মাটিতে কিছুটা জল টেনে নিতো। এখন তা হয় না। তাছাড়া আগে ডুমনি দহের সঙ্গে ভাগীরথীর যোগ ছিল। এখন সে যোগ নেই। বদ্ধ জলেই এই বিপর্যয়। আমাদের লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে।” বেলডাঙার পুরপ্রধান কংগ্রেসের অনুপমা সরকার বলেন, “এরকম সমস্যা এর আগে কখনও হয়নি। এই বিষয়টি নিয়ে কী করা যায় তা আমরা আলোচনা করে দেখছি।” অন্যদিকে বিডিও জানান, ঠিক কী কারণে এত মাছ নষ্ট হল তা খতিয়ে দেখবেন তাঁরা। তার পরই উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে।

fish waste beldanga
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy