Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

পিতৃবিয়োগের পরেও অঙ্কে ১০০

ভাল ফল করেও উচ্চশিক্ষা নিয়ে চরম সংশয়ে নদিয়ার তাহেরপুর বাদকুল্লারা সৌমিক রায়। বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে চিকিৎসক হতে চায় সে। কিন্তু পথ প্রায় অন্ধকার। মাধ্যমিক পরীক্ষা চলাকালীন মারা যান সৌমিকের বাবা। তার পর থেকেই অনিশ্চয়তা ঘিরে ধরেছে তাঁদের পরিবারকে। দীর্ঘ দিন ক্যানসারে আক্রান্ত সুজিতবাবুকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য ভেলোর গিয়েছিলেন সৌমিকের মা। পরীক্ষার আগে বাড়িতে একা থেকে, নিজে রান্না করে খেয়ে পরীক্ষা দিয়েছে সে।

সৌমিক রায়। —নিজস্ব চিত্র।

সৌমিক রায়। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রানাঘাট শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০১৪ ০০:৩২
Share: Save:

ভাল ফল করেও উচ্চশিক্ষা নিয়ে চরম সংশয়ে নদিয়ার তাহেরপুর বাদকুল্লারা সৌমিক রায়। বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে চিকিৎসক হতে চায় সে। কিন্তু পথ প্রায় অন্ধকার। মাধ্যমিক পরীক্ষা চলাকালীন মারা যান সৌমিকের বাবা। তার পর থেকেই অনিশ্চয়তা ঘিরে ধরেছে তাঁদের পরিবারকে।

দীর্ঘ দিন ক্যানসারে আক্রান্ত সুজিতবাবুকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য ভেলোর গিয়েছিলেন সৌমিকের মা। পরীক্ষার আগে বাড়িতে একা থেকে, নিজে রান্না করে খেয়ে পরীক্ষা দিয়েছে সে। ২ মার্চ মারা যান সৌমিকের বাবা। ঠিক তার পরের দিনই ছিল মাধ্যমিকের অঙ্ক পরীক্ষা। চরম প্রতিকূলতাকে হারিয়েও সৌমিক মাধ্যমিকে ৬২০ পেয়েছে। শুধু তাই নয়, গণিতে প্রাপ্ত নম্বর ১০০। বাদকুল্লা ইউনাইটেড অ্যাকাডেমির ছাত্র সৌমিক বিজ্ঞান নিয়ে পড়তে চায়, নিজের স্কুলেই। তার কথায়, “বাবা চাইতেন আমরা সফল হই। কিন্তু আজ বাবা নেই। আমরা চরম সঙ্কটে। কী করে এই পরিস্থিতি সামলাব, বুঝতে পারছি না।” বাদকুল্লা পোস্ট অফিসের কাছে নিজেদের বাড়িতে বসে সৌমিকের মা বিশাখা রায় বললেন “আমরা ভেলোরে ছিলাম। ও একা বাড়িতে থাকত। পড়তে পড়তে রান্না করতে ভুলে যেত। ফোন করে খোঁজ নেওয়া ছাড়া আর কিছু করার ছিল না। কী করে যে পরীক্ষা দিয়ে পাশ করল ও-ই জানে।” তবে সৌমিক অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী। অজুহাত দূরে রেখে সে তিনটি বিষয়ের খাতা স্ক্রুটিনি করতে চায়। তার দাবি ওই তিনটি বিষয়ের পরীক্ষা আরও ভাল হয়েছিল তার। কিন্তু আত্মবিশ্বাসের অভাব ঘটছে আর্থিক ক্ষেত্রে। বিশাখাদেবী জানান, “আমার স্বামী একটি সমবায় সংস্থায় কাজ করতেন। তাঁর চিকিৎসায় নিঃশেষ হয়ে গিয়েছে শেষ সম্বলটুকুও। এখন ছেলেকে লেখাপড়া শেখানো তো দূর, কী করে সংসার চলবে সেটাই আমার চিন্তার বিষয়।” সৌমিকের দাদা সৌতিক স্নাতক। এখন তিনিই চাকরির চেষ্টা করছেন। তবে সৌমিকের পড়াশোনার বিষয়ে খানিকটা আশ্বাস দিয়েছেন তাঁর স্কুল শিক্ষকরা। বাদকুল্লা ইউনাইটেড অ্যাকাডেমির সহকারী প্রধান শিক্ষক রবি ভট্টাচার্য বলেন, “ বিজ্ঞান নিয়ে পড়তে অসুবিধা হবে না। স্কুলের তরফে ফি-মুকুব করে দেওয়া হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

badkulla soumik roy
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE