পরপর রাহুল সিংহের দু’টি সভায় সংখ্যালঘুদের ভিড় দেখে রীতিমতো চাঙ্গা জেলার বিজেপি নেতারা। এখন থেকেই দুই পুরসভা দখলের লক্ষ্যে মুর্শিদাবাদে ঝাঁপিয়ে পড়তে চাইছে বিজেপি। রবি ও সোমবার রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ জেলার সফর সেরে ফিরে যেতেই মঙ্গলবার জেলা বিজেপি জানিয়ে দিল জানুয়ারি মাসে রাহুল সিংহ-সহ দলীয় বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্য ও কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় আসছেন জেলায়। ৬ জানুয়ারি শমীক সভা করবেন বেলডাঙায়, ১২ জানুয়ারি রাহুল সিংহ সভা করবেন লালবাগে। জানুয়ারিতেই বাবুল সুপ্রিয় একাধিক সভা করবেন জেলায়। তবে সভার স্থান ও তারিখ এখনও ঠিক হয়নি।
কেন্দ্রে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর রাজ্য সভাপতি রাহুল পাঁচ বার এলেন মুর্শিদাবাদে। তিন বার করেছেন দলীয় কর্মিসভা, দু’টি জনসভা। বিজেপি-র মুর্শিদাবাদ জেলার সাধারণ সম্পাদক সুভাষ মণ্ডল বলেন, ‘‘এপ্রিল মাসে মুর্শিদাবাদ জেলায় বহরমপুর বাদে ৬টি পুরসভার নির্বাচন হবে। সেই পুরসভা নির্বাচনের দিকে লক্ষ্য রেখেই এখন সমস্ত সভা করা হবে ওই ছ’পুরসভায়। এ ছাড়াও কেন্দ্রীয় স্তরের নেতারাও আসবেন পুরসভার প্রচারে।” সুভাষবাবু আরও বলেন, “পুরসভার পরেই বিধানসভা নির্বাচন। পুর-নির্বাচনে প্রচারের ঢেউকে যাতে বিধানসভা নির্বাচন পর্যন্ত টেনে নিয়ে যাওয়া যায় তার জন্য জেলা জুড়ে বিজেপির সদস্য সংগ্রহ অভিযানে জোর দেওয়া হয়েছে।”
বিজেপি সূত্রে জানা দিয়েছে, সরকারি স্তরে মুর্শিদাবাদ জেলাকে একটি জেলা ও ২৬ ব্লক হিসেবে ধরা হলেও দলের সাংগঠনিক স্তরে এই জেলা দু’ভাগে ভাগ করা হয়েছেমুর্শিদাবাদ ও উত্তর মুর্শিদাবাদ। ২৬টির জায়গায় ৩৪টি ব্লক বা মণ্ডল গড়া হয়েছে, যার ২২টি রয়েছে মুর্শিদাবাদে, বাকি ১২টি রাখা হয়েছে উত্তরে। নির্বাচনের দিকে তাকিয়েই মুর্শিদাবাদের দুই জেলায় ৩ লক্ষ সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে বিজেপি। সদস্য করতে বহরমপুর, জলঙ্গি, কান্দি, লালবাগ, হরিহরপাড়া-সহ বহু জায়গায় শিবির করে সদস্য সংগ্রহ করা হয়েছে। ওই সব ক্যাম্প থেকে ইতিমধ্যে মুর্শিদাবাদে ৩৭ হাজার এবং উত্তর মুর্শিদাবাদে ১০ হাজার সদস্য সংগ্রহ করা হয়েছে। উত্তর মুর্শিদাবাদের জেলা সভাপতি ষষ্ঠীচরণ ঘোষ বলেন, “বিজেপির সদস্য হওয়ার জন্য টোল ফ্রি নম্বরে মিসড কল দিলেই হয়। রবি ও সোমবার ধুলিয়ান এবং সাগরদিঘির্য সভায় রাহুল সিংহ সেই নম্বর ঘোষণা করতেই প্রায় দেড় হাজার মানুষ এদিন মেসেজ পাঠিয়ে দলের সদস্য হয়েছেন। এই সব সদস্যদের প্রত্যেককে নিজের এলাকায় প্রচারে নামানো হবে।” তবে তিনি স্বীকার করেন, সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এই জেলায় দলের নেতৃত্বে সংখ্যালঘু মুখ এতদিন সেভাবে তৈরি করা যায়নি। জেলায় ৪১ জনের সংখ্যালঘু সেল থাকলেও তাদের সক্রিয়তার অভাব রয়েছে। এখন অবশ্য সংখ্যালঘুরা যেভাবে দলে আসছেন, তাতে নেতৃত্ব দেওয়ার সেই ঘাটতি দূর হয়ে যাবে।” এক বিজেপি নেতা জানান, অরঙ্গাবাদের এক শিল্পপতির ঘনিষ্ঠ বহু বিক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতা ও পঞ্চায়েত সদস্য ইতিমধ্যেই যোগ দিয়েছেন বিজেপিতে। ওই সংখ্যালঘু শিল্পপতিকে প্রার্থী করার চেষ্টা হচ্ছে বিধানসভায়।”