হারানো মেয়ের খোঁজ মিলেছিল সপ্তাহ দুয়েক আগে। আশায় বুক বেঁধে ছিলেন পরিবারের লোকজন। মেয়েকে ফিরে পাওয়ার আশায় থানা, ব্লক অফিস— কোথাও দরবার করতে বাকি রাখেননি বাপ-মা। কিন্তু পুলিশের ভাব গতিক দেখে তাঁরা বুঝতে পারছেন না, কবে তাঁরা ফিরে পাবেন হারানো মেয়েকে।
স্কুলে রেজাল্ট দেখতে গিয়েছিল অষ্টম শ্রেণির মেয়েটি। কিন্তু, শক্তিপুর ছুতারপাড়ার সেই স্কুলের চৌহদ্দি থেকে বেরিয়েই উধাও হয়ে গিয়েছিল সে। পরের দিন, ২৪ ডিসেম্বর থানায় পরিবারের পক্ষ থেকে একটি নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। তার পর অপেক্ষা আর অপেক্ষা।
খবরটা এসেছিল আচমকাই, ৬ জানুয়ারি। সটান দিল্লির একটি থানা থেকে খবর আসে ওই ছাত্রী দিল্লির একটি হোমে রয়েছে। শক্তিপুর থানা থেকে সে খবর মেয়েটির পরিবারকে জানানোও হয়। কিন্তু তারপরে দু’সপ্তাহ হতে চলল ছাত্রীকে ফিরিয়ে আনতে গা করছে না পুলিশ বলে বাড়ির লোকের অভিযোগ।
কিন্তু পুলিশের এমন গড়িমসি কেন? আড়মোড়া ভেঙে শক্তিপুর থানার এক পুলিশ কর্মীর দাবি, ‘‘কাগজপত্র এখনও তৈরি হয়নি, এখনই লোক পাঠানো যাচ্ছে না।’’ তিনি জানান, রাজ্যের বাইরে তদন্তকারী দল পাঠাতে গেলে আইজি-র অনুমতি প্রয়োজন। সে অনুমতি না আসায় এই বিলম্ব।
তবে রাজ্য পুলিশের শীর্ষ কর্তারা বলছেন, নিয়মটা তেমন নয়। তাঁদেরই এক জনের কথায়, ‘‘থানা থেকে তদন্তকারী দল পাঠাতে গেলে এসপি কিংবা এসডিপিও-র অনুমতি নিয়ে লোক পাঠালেই চলে। সেই চিঠি নিয়ে সংশ্লিষ্ট থানায় দেখালেই তাদের সাহায্যও পাওয়া য়ায়।’’ এ ভাবে একটি কিশোরীকে উদ্ধারের ক্ষেত্রে এমন দায়সারা মনোবাবের জন্য জেলা পুলিশ সুপারের কাছে জবাবদিহিও চাওয়া হবে বলে জানান ওই শীর্ষ পুলিশ কর্তা।
ওই ছাত্রীর স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, ফল প্রকাশ হলে জানা যায়, ভাল ফল হয়নি তার। বন্ধুদের কাছে ‘মনখারাপ’ করছে বলে বেরিয়ে গিয়েছিল মেয়েটি। আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল, বাড়ি পিরলে তাকে বকাবকিও করা হবে। বাড়ি তাই আর ফেরেনি সে। বাড়ির লোকের অনুমান, পালিয়েই গিয়েছিল সে। তা বলে দিল্লি গেল কী করে?
পুলিশ মেয়েটির খোঁজ করতে গিয়ে জানতে পারে, ওই দিন স্থানীয় বাজারসৌ রেলস্টেশন থেকে কাটোয়াগামী ট্রেনে উঠে পরে সে। মেয়েটির দিদির বাড়ি পরের স্টেশন মিঞায়। বন্ধুরা মনে করেছিল সেখানেই যাচ্ছে সে। তারা তাকে তাই আটকায়নি। তারপর সে কি ভাবে দিল্লি পৌঁছল কেউ বুঝতে পারছে না।