Advertisement
E-Paper

বাদ আশু ঘোষ, নতুন ১১ মুখ

দাবি উঠেছিল লোকসভা ভোটের পরই। শুক্রবার নতুন জেলা কমিটি গঠন করে সেই দাবিকেই যেন সিলমোহর দিল সিপিএম। জেলা কমিটি থেকেই বাদ পড়লেন সিপিএম এর এক সময়কার দাপুটে নেতা আশু ঘোষ। টানা পাঁচবার তিনি সম্পাদক নির্বাচিত হন। যদিও গত বারের জেলা সম্মেলনে তিনি সম্পাদক নির্বাচিত হলেও এক মাস পরেই তাঁকে সরিয়ে সুমিত দে-কে সম্পাদক করা হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০১৪ ০১:০৭

দাবি উঠেছিল লোকসভা ভোটের পরই। শুক্রবার নতুন জেলা কমিটি গঠন করে সেই দাবিকেই যেন সিলমোহর দিল সিপিএম। জেলা কমিটি থেকেই বাদ পড়লেন সিপিএম এর এক সময়কার দাপুটে নেতা আশু ঘোষ। টানা পাঁচবার তিনি সম্পাদক নির্বাচিত হন। যদিও গত বারের জেলা সম্মেলনে তিনি সম্পাদক নির্বাচিত হলেও এক মাস পরেই তাঁকে সরিয়ে সুমিত দে-কে সম্পাদক করা হয়। তিন বছর আগেও জেলা পার্টিতে প্রবল প্রভাবশালী থাকা সত্ত্বেও কী ভাবে তিনি দু’বারই জেলা কমিটি থেকেই বাদ পড়লেন, তা নিয়ে দলের সাধারণ কর্মীদের মধ্যে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। যদিও দলের দাবি, শারীরিক অক্ষমতার কারণেই তাঁকে এবার জেলা কমিটিতে রাখা হয়নি। এবং সেটা নাকি আশুবাবুই চেয়েছিলেন। শুধুই কি শারীরিক অক্ষমতা, নাকি এর পিছনে অন্য কোনও কারণ লুকিয়ে আছে, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। যদিও এ দিন সম্মেলন শেষে রাজ্য সম্পাদক বিমান বসুর দাবি, “কিছু নতুন মুখ প্রথম সারিতে তুলে এনেছি। যারা দৌড়ঝাঁপ করতে পারবে। সেই কারণেই কাউকে কাউকে সরে যেতে হয়েছে। এটাই নিয়ম। যেভাবে পুরনো পাতা না ঝরলে নতুন পাতা গজায় না।”

তবে শুধু আশুবাবুই নয়, তাঁর সঙ্গে সঙ্গে জেলা কমিটি থেকেই বাদ গিয়েছেন সম্পাদক মণ্ডলীর আরও তিন সদস্য। তাঁদের মধ্যে আছেন এক সময়কার দাপুটে প্রাক্তন দুই মন্ত্রী কমলেন্দু সান্যাল ও নয়ন সরকার। এছাড়াও সেই তালিকায় আছেন গোপাল কর্মকারের মতো নেতাও। তাঁদেরকেও মূলত বয়স ও শারীরিক অসুস্থতার কারণেই সরে যেতে হয়েছে। এছাড়াও জেলা কমিটি থেকে সরে যেতে হয়েছে ঝর্ণা চট্টোপাধ্যায়, গৌর দাস, সুবোধ গঙ্গোপাধ্যায়, সুনীল বিশ্বাস, শিবানী ভৌমিক, শিশির কুমার ও সনৎ সেনগুপ্তদের। তাঁদের জায়গায় নতুন সদস্য করা হয়েছে সলিল কর, সুবোধ বিশ্বাস, নসরতুল্লা শেখ, সোমেশ কংসবণিক, সরস্বতী মিস্ত্রী, সেলিনা খাতুন, সুধন্য সরকার, মীনা ভট্টাচার্য, আমিন আলি, আকালি শেখ ও গোপাল চক্রবর্তীর মতো অপেক্ষাকৃত তরুণ নেতাদের।

লোকসভা ভোটে ভরাডুবির পরে প্রথম জেলা কমিটির বৈঠকেই সূর্যকান্ত মিশ্রের উপস্থিতিতেই দাবি উঠেছিল, নিষ্ক্রিয় ও অসুস্থ নেতাদের সরিয়ে দিতে হবে। যাঁরা তৃণমূলের সন্ত্রাসের সামনে দাঁড়িয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তাঁদেরকেই নেতৃত্বের প্রথম সারিতে তুলে আনার দাবি উঠেছিল। একই দাবি উঠেছিল দলের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআই এর সভাতেও। সেই মতো ডিওয়াইএফআই ও এসএফআই-এর জেলা কমিটিতেও এক ঝাঁক নতুন মুখ তুলে আনা হয়েছিল। তার পরই প্রশ্ন ওঠে, শাখা সংগঠনগুলি নেতৃত্বে তরুণ মুখ এলেও শেষ পর্যন্ত সিপিএম কি তাঁদের ‘পায়াভারী’ নেতাদের পদ থেকে সরিয়ে নতুন মুখ তুলে আনতে পারবে? সম্মেলন শেষে সিপিএম-এর নেতৃত্ব সেই কাজটা করল।

তবে এর প্রস্তুতি অনেক আগে শুরু হয়েছিল। জেলা সম্পাদক মন্ডলীর এক সদস্যের কথায়,‘‘আমরা ঠিকই করে নিয়েছিলাম যে বেশ কয়েকজনকে সরিয়ে দেব। প্রবীণ, অসুস্থ জেলা কমিটি ও সম্পাদক মন্ডলীর সদস্যদের সঙ্গে কথা বলা হয়। তাঁরা কিন্তু সরে যেতে রাজি হয়ে যান। আশুবাবু যেমন নিজেই সরে যেতে চেয়েছিলেন।’’ নেতুন কমিটি তৈরি করা নিয়ে দলের অভ্যম্তরে তেমন বিতর্ক তৈরি হয়নি।

বরং এ দিন প্রশ্ন ওঠে, বিপদের দিনে জেলা নেতৃত্বকে কেন সে ভাবে পাশে পাওয়া যায় না। দলীয় সূত্রে জানা গেছে যে জেলা কমিটির নেতাদের অভিযোগ, নবদ্বীপ, হাঁসখালি-সহ বিভিন্ন এলাকায় দলের কর্মীরা আক্রান্ত হলে জেলার নেতাদের সেভাবে পাশে পাওয়া যায়নি। বিশেষ করে আইনি সহায়তা ও পরামর্শের ক্ষেত্রে জেলা নেতৃত্বের দুর্বলতার কথা তুলে ধরেন কেউ কেউ। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করে বিমানবাবু বলেন,‘‘এটা একেবারেই ছেঁদো কথা। যখন যেখানে যে ভাবে প্রয়োজন হয়েছে, আমরা ছুটে গিয়েছি। জেলা নেতৃত্ব চাইলে আমরাও চলে এসেছি। কৃষ্ণগঞ্জেও পাশে থেকেছি।’’

district committee cpm ashu ghosh
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy