উদ্বাস্তু পুনর্বাসন দফতরের জমি বেআইনি ভাবে দখল করে দোকানঘর বানিয়েছিলেন কিছু ব্যবসায়ী। জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের জন্য মাসখানেক আগে তাঁদের উঠে যেতে বাধ্য করে প্রশাসন। তার জন্য উপযুক্ত ক্ষতিপূরণও তাঁরা পেয়েছেন। অভিযোগ, তা সত্ত্বেও সেই জমির পাশে অবস্থিত বেথুয়াডহরি চকহাতিশালা হাইস্কুল সংলগ্ন জায়গায় বা স্কুলের পাঁচিল ঘেঁষে ফের জমি জবরদখল করে দোকানঘর গড়ে তুলেছেন কয়েকজন ব্যবসায়ী। এই নিয়ে অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার), নাকাশিপাড়ার ওসি ও বিডিও-র কাছে লিখিত নালিশ জানিয়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। মুখ্যমন্ত্রী ও উচ্চ শিক্ষামন্ত্রীর গোচরে বিষয়টি আনা হয়েছে দাবি স্কুল কর্তৃপক্ষের।
চার দশকেরও পুরনো চকহাতিশালা স্কুলটি। বছর খানেক আগে সেটি উচ্চমাধ্যমিক স্তরে উন্নীত হয়। বর্তমানে ওই স্কুলে ১৬ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা ও ৬৫০ জন পড়ুয়া রয়েছে। স্কুল কর্তৃপক্ষ জানালেন, ভবন তৈরির জন্য উদ্বাস্তু পুনর্বাসন মন্ত্রক জাতীয় সড়কের পাশে বেশ কয়েকটি দাগ নম্বরে ১১৬ শতক জায়গা দেয়। প্রশাসন সূত্রে খবর, জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের জন্য ব্যবসায়ীদের উঠে যেতে হলেও স্কুলের কোনও জমি অধিগ্রহণ করা হয়নি। তাই রাস্তার কোল ঘেঁষে যে সব ব্যবসায়ী দোকানঘর গড়ে তুলেছিলেন, তাঁরা পিছিয়ে এসে স্কুলের জমির উপর দোকানঘর তুলছেন বলে অভিযোগ। স্কুল পরিচালন সমিতির সম্পাদক বিজয় চৌধুরী বলেন, উচ্ছেদ হওয়া ব্যবসায়ীরা স্কুলের পিছনের জায়গার দখল নিয়েছে। স্কুলের মূল ফটকের কাছেও দোকান বানানো হয়েছে।
ব্যবসায়ীদের এই জবরদখলের ফলে রাস্তা থেকে দেখলে স্কুলের অস্তিত্বই মালুম হওয়া মুশকিল। মূল ফটক দিয়ে স্কুলে ঢোকাও দুষ্কর হয়ে দাঁড়াচ্ছে বলে দাবি শিক্ষকদের। শুধু তাই নয়, স্কুলের পিছনে ব্যবসায়ীরা যৌথ উদ্যোগে গড়ে তুলেছেন শৌচাগার। নিয়মিক তা পরিষ্কার না হওয়ায় একটু হাওয়া দিলেই দোতলা ভবনের নীচের তলার ঘরগুলিতে কটু গন্ধ এসে নাকে লাগছে। প্রধান শিক্ষক আজম আলি ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, “এমনিতেই আমাদের স্কুলে পরিকাঠামোগত সমস্যা রয়েছে। তার উপর গন্ধের ঠেলায় নীচের তলার কয়েকটা ঘরে ক্লাস নেওয়া অসম্ভব হয়ে উঠেছে।” অভিযোগ পাওয়ার পর প্রশাসন কয়েকবার ব্যবসায়ীদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু ব্যবসায়ীরা অনড়।
দিন কয়েক আগেই রাজকুমার হালদার নামে এক ব্যবসায়ীকে স্কুল সংলগ্ন জায়গায় নির্মাণ বন্ধ রাখার জন্য বলা হয়েছে। এসডিও কোর্টের নির্দেশে পরিষ্কার উল্লেখ রয়েছে, “সুষ্ঠু পঠনপাঠন বজায় রাখতে ইটের গাঁথনি বন্ধ রাখতে হবে।” রাজকুমারবাবু নির্মাণ বন্ধ রেখেছেন। কিন্তু কেন ব্যবসায়ীরা স্কুলের পাশে বেআইনিভাবে দোকান গড়ে তুলছেন তার উত্তরে তিনি বলেন, “দোকানপাট চলে গেলে আমাদের রুটিরুজি মার খাবে। তাই স্কুলের কাছে দোকান তৈরি করছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy