ঘটনাস্থলে পুলিশ।—নিজস্ব চিত্র
যুবক খুনের ঘটনায় রাজনৈতিক তরজা শুরু হল তৃণমূলের অন্দরে।
সোমবার সন্ধ্যায় বহরমপুর শহরে জনবহুল এলাকায় এনারুল শেখ (২৮) নামে এক যুবককে প্রথমে গুলি করে ও পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে শ্বাসনালি কেটে খুন করে দুষ্কৃতীরা। ওই ঘটনার পরেই জেলার যুব তৃণমূল সভাপতি অশেষ ঘোষ ও বহরমপুর টাউন তৃণমূলের সভাপতি কানাই রায় বলেন, “এনারুলের সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই।” অন্য দিকে, বহরমপুর পুরসভার বিরোধী দলনেতা তৃণমূলের প্রদীপ নন্দী বলেন, “এনারুল আমাদের দলের সক্রিয় কর্মী। তবে কী কারণে খুন হয়েছে সেটা এখনই বলা যাচ্ছে না। আমরা বিষয়টি দলীয় ভাবে তদন্ত করছি।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গৌতম নামে এক সমাজবিরোধীর অনুগামী ছিল এনারুল। বছর আড়াই আগে বাপি ঘোষ নামে কংগ্রেসের এক কর্মী বহরমপুর সদর হাসপাতাল লাগোয়া এলাকায় খুন হয়েছিলেন। ওই খুনে এনারুল ও তার ভাই এমান অভিযুক্ত। সপ্তমীর দিন দুই ভাই জামিনে ছাড়া পায়। তাদের বাড়ি কান্দির মথুরা গ্রামে হলেও তার মা মেহেরুল বেওয়া থাকে বহরমপুর শহরের বড়মনি থানে। সোমবার বিকেলে মায়ের সঙ্গে দেখা করতে আসে এনারুল। সেখান থেকে ফেরার সময় সন্ধ্যে সাতটা নাগাদ মহাকালী পাঠশালা লাগোয়া জয়কালী বাড়ির সামনে ওই যুবককে লক্ষ্য করে দুষ্কৃতীরা প্রথমে গুলি ছোড়ে। তারপর তার শ্বাসনালি কেটে দেয় দুষ্কৃতীরা। ধারাল অস্ত্র দিয়েও আঘাত করা হয়। এনারুলের মা মেহেরুল বেওয়া বলেন, “ছেলে অনেকদিন জেলে ছিল। ক’দিন হল জামিনে ছাড়া পেয়েছে। আজ সে আমাকে দেখতে এসেছিল। বিকেল তিনটে নাগাদ সে বাড়ি থেকে বের হয়। তারপর লোকমুখে শুনি ছেলে আর নেই।” মুর্শিদাবাদ জেলার পুলিশ সুপার সি সুধাকর বলেন, “কেন ও কী ভাবে খুনের ঘটনা ঘটেছে তা জানতে একজন ডিএসপির নেতৃত্বে তদন্ত চলছে।’’
মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেসের মুখপাত্র অশোক দাস বলেন, “হাসপাতালে রোগী ও তাঁদের পরিবারের লোকজনদের সহায়তা করার জন্য দলের পক্ষ থেকে বাপি ঘোষকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। বছর আড়াই আগে তাঁকে খুন করা হয়। সেই খুনের ঘটনায় এনারুল ও তার ভাই এমান অভিযুক্ত। কিন্তু সেই খুনের সঙ্গে এই খুনের কোনও যোগসূত্র নেই বলেই মনে হচ্ছে।”
২০১১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের আগে বহরমপুর শহরের ঘোড়াবাজার এলাকায় ভরা সন্ধ্যায় খুন হন তৃণমূল কর্মী কামাল শেখ। তারও কয়েক বছর আগে খাগড়া এলাকায় একই ভাবে খুন হন ফরওয়ার্ড ব্লকের সভাপতি সম্পদ দাস। ভরসন্ধ্যায় বহরমপুর শহরে এই খুনের ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে নাগরিকদের মধ্যে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy