Advertisement
E-Paper

যন্ত্রে পাট ছাড়ানোর পরামর্শ নিগমের

যন্ত্রের সাহায্যে পাট ছাড়ানোর পরামর্শ দিচ্ছেন জুট কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া-র আধিকারিকেরা। তাঁদের দাবি, যন্ত্রের সাহায্যে পাট ছাড়ানো হলে তাতে পাটের গুণগত মান ভাল হয়। পাট ছাড়াতে খরচও কম হয়। পাট পচাতে জলেরও প্রয়োজন হয় কম। ফলে সব দিক থেকেই লাভবান হবেন চাষিরা। সম্প্রতি নদিয়ার গাংনাপুরে জেসিআই অফিসে যন্ত্রের সাহায্যে পাট ছাড়ানোর একটি প্রদর্শনী ও আলোচনাচক্রের আয়োজন করা হয়েছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:২৭

যন্ত্রের সাহায্যে পাট ছাড়ানোর পরামর্শ দিচ্ছেন জুট কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া-র আধিকারিকেরা। তাঁদের দাবি, যন্ত্রের সাহায্যে পাট ছাড়ানো হলে তাতে পাটের গুণগত মান ভাল হয়। পাট ছাড়াতে খরচও কম হয়। পাট পচাতে জলেরও প্রয়োজন হয় কম। ফলে সব দিক থেকেই লাভবান হবেন চাষিরা।

সম্প্রতি নদিয়ার গাংনাপুরে জেসিআই অফিসে যন্ত্রের সাহায্যে পাট ছাড়ানোর একটি প্রদর্শনী ও আলোচনাচক্রের আয়োজন করা হয়েছিল। দেবগ্রাম, মাঝেরগ্রাম-সহ আশপাশের কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার শতাধিক চাষি ওই আলোচনাচক্রে যোগ দেন। জুট কর্পোরেশনের সহকারি মার্কেটিং ম্যানেজার প্রণব দাস, কৃষ্ণনগরের আঞ্চলিক ম্যানেজার গোপাল ব্রহ্ম, গাংনাপুর শাখার ম্যানেজার শুভেন্দু কুমার সাহা-সহ অনান্যরা উপস্থিত ছিলেন। রানাঘাট মহকুমা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মহকুমার চাকদহ, হরিণঘাটা,শান্তিপুর, হাঁসখালী এবং রানাঘাট-১ ও ২ ব্লকে এ বার সাড়ে ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। মহকুমার কৃষি আধিকারিক রঞ্জন রায়চৌধুরী জানান, পাট চাষে পাট ছাড়ানোর ব্যাপারটি যেমন ব্যয়বহুল তেমনি সময়সাপেক্ষ। এক বিঘা জমিতে কমপক্ষে ৪ কুইন্টাল পাট পাওয়া যায়। বিঘা প্রতি খরচ হয় প্রায় সাত হাজার টাকা। তার মধ্যে ওই খাতে খরচ হয় সবচেয়ে বেশি। কিন্তু যন্ত্রে যদি চাষিরা পাট ছাড়ান তাহলে খরচের পাশাপাশি সময়ও বাঁচবে। তাছাড়া যন্ত্রে পাট ছাড়িয়ে পচাতে দিলে পাঁচ ভাগের এক ভাগ জলের প্রয়োজন হয়। পাটের গুণগত মান ভাল হয়। তিনি বলেন, “এই কারণে আমরা চাষিদের যন্ত্রে পাট ছাড়ানোর জন্য পরামর্শ দিচ্ছি।”

আলোচনা চক্রের উদ্যোক্তারা জানান, ওই পদ্ধতিতে মাঠ থেকে সরাসরি পাট কেটে নিয়ে এসে ৮ ঘণ্টায় ২ বিঘা জমির পাট ছাড়ানো সম্ভব। অনেক সময় জলের অভাবে পাট পচানোর সমস্যা হয়। সেক্ষেত্রে চাষিরা সময় মতো পাট কাটতে পারেন না। ফলে পরের বার চাষ শুরু করতে দেরি হয়ে যায়। উদ্যোক্তারা জানান, সাধারণত আট রকমের তোর্ষা পাট রয়েছে। তোর্ষা ৬ নম্বর গ্রেডের পাটের সহায়ক মূল্য ২ হাজার ৩২৭ টাকা। ৫ নম্বর গ্রেডের পাটের সহায়ক মূল্য কুইন্টাল প্রতি ২৪০০ টাকা এবং ৪ নম্বর গ্রেডের সহায়ক মূল্য ২ হাজার ৫৯২ টাকা। দেখা যাচ্ছে, গ্রেডের পরিবর্তনের জন্য কুইন্ট্যাল প্রতি বেশি টাকা পাওয়া যায়। মেশিনে পাট ছাড়াতে পারলে উন্নত মানের তন্তু পাওয়া যায়। সেক্ষেত্রে চাষিদের বেশি দাম পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গোপালবাবু বলেন, “মেশিনের দাম ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। ইচ্ছা করলে যে কোনও চাষি তা কিনতেও পারেন। সরকার তাঁদের ভর্তুকি দেবেন।”

আধিকারিকদের এই পরামর্শে চাষিদের মধ্যে অবশ্য মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গিয়েছে। মাঝেরগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের দুবলি গ্রামের চাষি আতাবুদ্দিন ঢালি বলেন, “যন্ত্রের সাহায্যে পাট ছাড়ালে পাটকাঠি টুকরো টুকরো হয়ে যাচ্ছে। যা কোনও কাজে আসবে না। অথচ জ্বালানি করতে বা চাষের জমিতে মাচা করতে এর খুব প্রয়োজন হয়।” গোপালবাবু অবশ্য জানান, টুকরো পাটকাঠি পেপার মিলে বিক্রি করার চেষ্টা চলছে। সেটা হলে চাষিরা কিছু পয়সা পাবেন। আর এক চাষি দেবপ্রসাদ মণ্ডল বলেন, “এই পদ্ধতিতে পাট ছাড়াতে সময় কম লাগবে। আবার অনেক বেশি পাটও পাওয়া যাবে। কারণ, হাতে পাট ছাড়ালে পাটকাঠিতে পাট লেগে থাকে। এক্ষেত্রে সেই সম্ভাবনা থাকে না।”

jute processing nigam ranaghat
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy