মাণিকপুরের রাস উত্সবে কল্লোল প্রামাণিকের তোলা ছবি।
এক সময় জায়গাটি ছিল জঙ্গলে ভরা। কিন্তু স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা মিলে সেখানেই রাস উত্সবের আয়োজন করেছিলেন। দিন বদলের সঙ্গে সঙ্গে প্রতি বছর পঞ্চাশ হাজারেরও বেশি মানুষ সেই উত্সব দেখার জন্য জড়ো হন। প্রতি বছরের মতো তাই এ বারও রাসের আয়োজনে কোনও খামতি রাখছেন না উদ্যোক্তারা। হরেক থিম আর আলোকসজ্জায় সেজে উঠেছে করিমপুর-মানিকপুরের রাস উত্সব।
মানিকপুর রাস উত্সবের উদ্যোক্তারা জানালেন, রাস উত্সব এবার ২১ বছরে পা দিল। পুজো দু’দিনের হলেও মেলা চলবে বারো দিন। প্রতি বছরই নতুন নতুন থিমের মণ্ডপসজ্জা করা হয়। এ বারের থিম মহাভারতের ‘কুরুক্ষেত্র’। আর মণ্ডপের ভিতরের থিম ‘যমপুরী’। কমিটির সম্পাদক সুজয় বিশ্বাস বলেন, “কোনও রকম খামতি রাখা হচ্ছে না। গত দেড় মাস আগে থেকে পুজোর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “প্রায় দু’শো মাটির পুতুল দিয়ে মণ্ডপ সাজানো হয়েছে। থাকছে আলোকসজ্জাও।”
রাস উত্সবের প্রতিষ্ঠাতা ও উদ্যোক্তা লক্ষ্মণ মণ্ডল বলেন, “আগে এখানে ছিল ঘন জঙ্গল। বিকেলের পর তো বটেই দিনের বেলাতেও মানুষ আসতে ভয় পেত। ফার্মেরমোড়ে ছোট রাস উত্সব হত। সেখানে জায়গা কম থাকায় কয়েকজন মিলে এখানেই রাস উত্সব শুরু করেছিলাম। এখন যত দিন যাচ্ছে মেলা জনপ্রিয় হচ্ছে। এ বছরের পুজো ও মেলার খরচের বাজেট সাত লক্ষ টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছে।”
সভাপতি বৈদ্যনাথ বিশ্বাস বলেন, “মেলায় ভিড় সামলাতে পুলিশ -প্রশাসন, কমিটির সদস্যদের পাশাপাশি প্রায় শতাধিক স্বেচ্ছাসেবকের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এলাকার হিন্দু, মুসলিম ও আদিবাসী সকল সম্প্রদায়ের মানুষ আমাদের এই মেলার সঙ্গে যুক্ত থাকেন।” করিমপুরের আনন্দপল্লির বধূ পূর্ণিমা বিশ্বাস বা নাটনার মাজেদা বেগম বলেন, “দুর্গাপুজা বা ঈদ শেষে শীতের শুরুতে সকলেই চেয়ে থাকেন এই রাসের জন্য। মানিকপুরে মেলা দেখতে অনেক মানুষ আসেন। পরিস্থিতে সামলাতে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়। ফলে এলাকার মেয়েরা ওই মেলায় যাওয়ার সাহস পান।”
নাটনার রফিকুল মণ্ডল বলেন, “মেলা উপলক্ষ্যে হিন্দু-মুসলিম সকলের বাড়িতে আত্মীয়রা বেড়াতে আসেন। মেলার জন্য এলাকার অর্থনীতিও খানিকটা পুষ্ট হয়। যত দিন যাচ্ছে মেলাকে ঘিরে মানুষের উন্মাদনা ক্রমশ বেড়েই চলেছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy