Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

শুনানি শেষ, রায় ঘোষণা সাত দিনে

শেষ হল সজল ঘোষ হত্যা মামলার শুনানি। ১০ নভেম্বর থেকে পর্যায়ক্রমে মামলার সরকার পক্ষ এবং অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবীদের সওয়াল শেষে, বুধবার নবদ্বীপের অতিরিক্ত এবং সেশন জজ সুধীর কুমার ঘোষণা করেন, আগামী ২৬ নভেম্বর, বুধবার মামলার রায় ঘোষণা করা হবে।

দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়
নবদ্বীপ শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০১৪ ০০:১০
Share: Save:

শেষ হল সজল ঘোষ হত্যা মামলার শুনানি। ১০ নভেম্বর থেকে পর্যায়ক্রমে মামলার সরকার পক্ষ এবং অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবীদের সওয়াল শেষে, বুধবার নবদ্বীপের অতিরিক্ত এবং সেশন জজ সুধীর কুমার ঘোষণা করেন, আগামী ২৬ নভেম্বর, বুধবার মামলার রায় ঘোষণা করা হবে।

সরকার পক্ষের আইনজীবী বিকাশকুমার মুখোপাধ্যায়ের কাছে ছ’দিন ধরে চলা সওয়ালে উঠে আসা বিভিন্ন বিষয়ে জানতে চান বিচারক। তবে তার আগে অভিযুক্তের আইনজীবী বিষ্ণুপ্রসাদ শীল দুটি বিষয়ে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

বিষ্ণুবাবু জানান, সাক্ষীরা সকলেই বলেছেন সজল ঘোষকে খুব কাছ থেকে গুলি করা হয়েছিল। তাহলে হয় গুলি শরীর ভেদ করে বেরিয়ে যাওয়ার কথা, নয়তো কোনও হাড়ে বাধা পেয়ে হাড় ভেঙে যাওয়ার কথা। কিন্তু এ ক্ষেত্রে কোনওটিই হয়নি। তাঁর দাবি, সজল ঘোষকে কাছে থেকে গুলি করাই হয়নি। তিনি জানান, এই মামলায় আদালতে আলামত হিসেবে যা যা হাজির করা হয়েছে তার কোনওটিতেই সরকারি শিলমোহর ছিল না।

বিকাশবাবুকে প্রশ্ন করতে শুরু করেন বিচারক। প্রথম জিজ্ঞাসা ছিল, সজল ঘোষের মৃত্যুর সময় নিয়ে। দেহের ময়না-তদন্তকারী চিকিৎসকের কথা অনুযায়ী, সজল ঘোষের মৃত্যু ময়না-তদন্তের ১৬ থেকে ১৮ ঘণ্টা আগে হয়েছিল। যার অর্থ ৯ জানুয়ারির রাতে নয়, সজলবাবুর মৃত্যু হয়েছিল সন্ধ্যা নাগাদ। বিকাশবাবুর ব্যাখ্যা, ওই চিকিৎসকের পক্ষে এ মন্তব্য করা সম্ভব নয়। কারণ বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা ছাড়া, কেবল অনুমানের ভিত্তিতে তিনি এ কথা বলেছেন। ওই চিকিৎসক আদালতে সে কথা স্বীকার করেছেন বলেও জানান বিকাশবাবু।

প্রশ্ন ওঠে, সজল ঘোষ খুনের তদন্ত শুরু হওয়ার অনেক পরে এফআইআর দায়ের করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের মতে তখন সেটিকে এফআইআর হিসাবে ধরা যায় না। বিকাশবাবু তথ্য প্রমাণ দিয়ে বলেন, হত্যার তদন্ত শুরু হওয়ার আগেই এফআইআর দায়ের করা হয়। তিনি জানান, সাক্ষ্য দিতে এসে নবদ্বীপ থানার তৎকালীন আইসি শঙ্কর রায় চৌধুরী বলেছিলেন, নবদ্বীপ হাসপাতালে গোলমালের খবর পেয়েই পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়েছিলেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গেই এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল এবং শঙ্করবাবু ঘটনাস্থলেই বিভাস সেনকে তদন্তের ভার দেন। বিচারক এরপরে মামলার অন্যতম প্রতক্ষ্যদর্শী সৌভিক আইচকে নিয়ে কিছু প্রশ্ন করেন। কলেজের গোলমালে আহত সৌভিক আইচ ন’দিন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। অথচ মামলার অন্য এক সাক্ষী, চিকিৎসক বিমল হোড় বলেন, সৌভিক হেঁটে হাসপাতালে ভর্তি হতে এসেছিলেন। তাহলে ন’দিন ভর্তি তাকলেন কীভাবে? কি করেই বা হাতে স্যালাইনের চ্যানেল নিয়ে দোতলা থেকে নেমে এলেন? বিকাশবাবুর জবাব, ভর্তি রাখাটা চিকিৎসকদের বিষয়। কিন্তু চিকিৎসকদের জেরার সময় এই প্রশ্ন কেউ তোলেননি।

শেষ পর্যায়ে জানতে চাওয়া হয়, কলেজে গোলমালের পরে পূর্বস্থলী থানায় যে এফআইআর দায়ের করা হয়, তাতে প্রদীপ সাহার নেতৃত্বে গোলমালের অভিযোগ করা হয়নি। কেবল তাঁর বাড়ির উল্লেখ ছিল। এ থেকে যোগাযোগ প্রমাণ হচ্ছে কী ভাবে? বিকাশবাবু বলেন, ওই এফআইআরে স্পষ্ট বলা হয়েছে দুপুরে জনা কুড়ি ছেলে লাঠি, রড নিয়ে প্রদীপ সাহার বাড়ি থেকে বেরিয়ে কলেজে যায়। এ থেকেই স্পষ্ট ওই ঘটনা প্রদীপ সাহার নেতৃত্বেই হয়েছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE