Advertisement
১৯ মে ২০২৪

স্কুলে হাতাহাতি শিক্ষকদের

স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীদের সামনেই হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়লেন শিক্ষকেরা। তা দেখে এর বিরুদ্ধে সরব হয়ে স্লোগান দিতে-দিতে ক্লাস ছেড়ে বেরিয়ে এল ছাত্র-ছাত্রীরা। গ্রাম থেকে ছুটে এসে অভিভাবকেরাও বিক্ষোভে ফেটে পড়লেন স্কুলে। শেষ পর্যন্ত স্কুলে গিয়ে ছুটির ঘণ্টা বাজিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিল পুলিশ। শনিবার সামশেরগঞ্জ ব্লকের দোগাছি গ্রাম পঞ্চায়েতের ডিবিএস হাই মাদ্রাসায় ঘটনাটি ঘটে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রঘুনাথগঞ্জ শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০১৪ ০০:০০
Share: Save:

স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীদের সামনেই হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়লেন শিক্ষকেরা। তা দেখে এর বিরুদ্ধে সরব হয়ে স্লোগান দিতে-দিতে ক্লাস ছেড়ে বেরিয়ে এল ছাত্র-ছাত্রীরা। গ্রাম থেকে ছুটে এসে অভিভাবকেরাও বিক্ষোভে ফেটে পড়লেন স্কুলে। শেষ পর্যন্ত স্কুলে গিয়ে ছুটির ঘণ্টা বাজিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিল পুলিশ। শনিবার সামশেরগঞ্জ ব্লকের দোগাছি গ্রাম পঞ্চায়েতের ডিবিএস হাই মাদ্রাসায় ঘটনাটি ঘটে।

বিরোধ এতটাই যে প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে সামশেরগঞ্জ থানায় তিন-তিনটি অভিযোগ দায়ের করেছেন মাদ্রাসার শিক্ষক ও পরিচালন সমিতির সদস্যরা। স্কুলে শিক্ষকদের মধ্যে হাতাহাতির অভিযোগ পেয়ে আজ (সোমবার) জঙ্গিপুরের সহকারী বিদ্যালয় পরিদর্শক প্রধান শিক্ষক-সহ কয়েকজন সহকারি শিক্ষককে রঘুনাথগঞ্জে তাঁর দফতরে ডেকে পাঠিয়েছেন। উচ্চ মাধ্যমিক ওই মাদ্রাসায় প্রায় দু’হাজার ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে। শিক্ষক রয়েছেন ৩০ জন। এতদিন স্কুলের দায়িত্বে ছিলেন এক ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক। গত ১ মার্চ স্কুলে প্রধান শিক্ষক হিসেবে কাজে যোগ দেন রফিকুল ইসলাম। শিক্ষকদের অভিযোগ, সহকর্মীদের সঙ্গে তাঁর দুর্ব্যবহার মাত্রা ছাড়িয়েছে। এই দুর্ব্যবহারের অভিযোগকে ঘিরেই ঘটনা।

স্কুলের পূর্বতন ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক সাহাদাত হোসেন প্রথম ঘণ্টা শেষে ক্লাস থেকে বেরিয়ে স্কুলের পূর্বতন সম্পাদক ও এলাকার বর্তমান পঞ্চায়েত সদস্যের সঙ্গে বাইরে গেটে দেখা করতে চাইলে বাধা দেন প্রধান শিক্ষক। এই নিয়ে দু’জনের মধ্যে বচসা শুরু হয়ে যায়। তা থেকেই শুরু হয় ধাক্কাধাক্কি, হাতাহাতি। চিৎকার শুনে স্কুলের অন্য শিক্ষকেরা ছুটে আসেন। বচসা ও ধাক্কাধাক্কিতে জড়িয়ে পড়েন তাঁরাও। তা দেখে ক্লাস ছেড়ে বেরিয়ে আসে ছাত্ররা। শিক্ষকদের মধ্যে মারপিট দেখে ছাত্ররাও হইচই শুরু করে। স্কুলের গেটের বাইরে তখন জড়ো হয়েছেন গ্রামবাসী। পরিস্থিতি দেখে স্কুলের গেটের তালা খুলে দেন এক স্কুল কর্মী। হঠাৎই দেখা যায় ছাত্ররা এই ঘটনার বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে শুরু করেছে স্কুলের মধ্যেই। খবর পেয়ে স্কুলে ছুটে আসে পুলিশ। পরিস্থিতি সামলাতে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়।

এ দিকে সামিরুদ্দিন শেখ এলাকারই পঞ্চায়েত সদস্য। এক সময় ওই মাদ্রাসার পরিচালন সমিতির সম্পাদকও ছিলেন। তিনি বলেন, “আমি প্রধান শিক্ষককে ফোনে না পেয়ে স্কুলে যাই। অনুরোধ করি গেটটা খুলে দিতে। কিন্তু তিনি তাতে রাজি না হয়ে আমার সঙ্গে অত্যন্ত দুর্ব্যবহার করেন। তখন আমার পরিচিত হিসেবে ওই শিক্ষককে ডাকি। তিনি আমার সঙ্গে দেখা করতে চাইলে মারপিটের ঘটনা ঘটে।”

এই মাদ্রাসার পরিচালন সমিতির মেয়াদ শেষ হয়েছে গত ১৬ জুলাই। সময়সীমা বাড়াতে চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছিল জেলা শিক্ষা দফতরে। কিন্তু তার কোনও উত্তর আসেনি। প্রশাসক হিসেবেও স্কুলে কাউকে নিয়োগ করা হয়নি। একজন স্কুল পরিদর্শককে ডিডিও করে বেতন তোলা হচ্ছে শিক্ষকদের। সেই পরিচালন সমিতির সম্পাদক আব্দুল জলিলও এদিন শিক্ষকদের হাতাহাতির খবর পেয়ে স্কুলে আসেন। তিনিও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তোলেন। পুলিশ জানায় , এদিন সন্ধে নাগাদ স্কুলের শিক্ষক ও পরিচালন সমিতি পৃথক পৃথক ভাবে ৩টি অভিযোগ দায়ের করেছেন প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।

মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম এদিনের ঘটনা নিয়ে প্রথমে সংবাদমাধ্যমের কাছে কিছু বলতে চাননি। পরে তিনি বলেন, “আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। আমাকে স্কুল থেকে তাড়াতেই এসব মিথ্যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে।” জঙ্গিপুরের সহকারী বিদ্যালয় পরিদর্শক পঙ্কজ পাল বলেন, “ঘটনাটি ঘটনা খুব লজ্জাজনক। থানায় অভিযোগও হয়েছে। আমি প্রধান শিক্ষক ও অন্যান্য শিক্ষকদের ডেকে পাঠিয়েছি সোমবার। তাদের কাছে সব শুনে যা ব্যবস্থা নেওয়ার তা নেওয়া হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

teacher raghunathganj
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE