E-Paper

বুথ পুনর্বিন্যাস বকেয়া কেন, এল নয়া নির্দেশ

যে বার্তা রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের (সিইও) দফতরের মাধ্যমে পাঠানো হয়েছে জেলাশাসক তথা জেলা নির্বাচনী আধিকারিকদের, তাতে বলা হয়েছে, বুথ পুনর্বিন্যাস সংক্রান্ত প্রস্তাব নিয়ে প্রায় দু’হাজার অভিযোগ জমা পড়েছে।

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০২৫ ০৮:১৯
জাতীয় নির্বাচন কমিশন।

জাতীয় নির্বাচন কমিশন। —ফাইল চিত্র।

পার হতে চলছে প্রায় এক মাস। এখনও ভোটকেন্দ্রের (বুথ) পুনর্বিন্যাস প্রস্তাব কার্যকর না হওয়ায় জেলাশাসকদের উপর চাপ বাড়াল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি, বকেয়া এই প্রশাসনিক কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে কমিশনের প্রতিনিধিদের রাজ্য সফরের (৭ বা ৮ অক্টোবর তার সম্ভাবনা রয়েছে, তবে ৮ তারিখ জেলাশাসকদের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্স হওয়া মোটামুটি নিশ্চিত) আগেই। তবে এ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে আবারও কথা বলার যে প্রয়োজন নেই, জেলা-কর্তাদের তা স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে।

যে বার্তা রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের (সিইও) দফতরের মাধ্যমে পাঠানো হয়েছে জেলাশাসক তথা জেলা নির্বাচনী আধিকারিকদের, তাতে বলা হয়েছে, বুথ পুনর্বিন্যাস সংক্রান্ত প্রস্তাব নিয়ে প্রায় দু’হাজার অভিযোগ জমা পড়েছে। কমিশনের স্থির করে দেওয়া বিধিকে মান্যতা দিয়ে এবং মাথা খাটিয়ে তার সমাধানসূত্র বার করতে হবে জেলা প্রশাসনগুলিকেই। এই প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পরে প্রক্রিয়ার প্রতিটি স্তর পুনরায় খতিয়ে দেখবে সিইও কার্যালয়। তার পরে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য তা পাঠানো হবে দিল্লির নির্বাচন সদনে। কমিশন যে দ্রুত এই কাজ শেষ করতে চাইছে, জেলা-কর্তাদের তা স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। তবে এই পর্বে নতুন করে রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে কথা বলার যে প্রয়োজন নেই, তা-ও বলে দেওয়া হয়েছে তাঁদের। কারণ, খসড়া বুথ বিন্যাসের তালিকা নিতে রাজ্যস্তরে সব ক’টি স্বীকৃত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক আগেই সেরে ফেলেছিল সিইও কার্যালয়।

অভিজ্ঞ কর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, এ রাজ্যে ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধনের (এসআইআর) কাজ শুরু হওয়ার আগে বুথের পুনর্বিন্যাস চূড়ান্ত করে ফেলতেই হবে। কারণ, এক-একটি বুথে এক জন করে বুথ লেভেল অফিসার (বিএলও) এসআইআর-এর কাজ করবেন। ১০টি বুথে এক জন করে বিএলও সুপারভাইজ়ার নজরদারির দায়িত্বে থাকবেন। আবার বুথ সংখ্যা বাড়লে বিএলও সংখ্যাও বাড়াতে হবে। স্বাভাবিক ভাবেই বুথের বিন্যাস চূড়ান্ত না হলে দায়িত্ব ভাগ করা সম্ভব নয়।

প্রসঙ্গত, জাতীয় নির্বাচন কমিশনের নতুন সিদ্ধান্ত, একটি বুথে সর্বাধিক ১২০০ জন ভোটার থাকবেন। আগে একটি বুথে সর্বাধিক ১৫০০ জন ভোটার থাকতেন। এই সূত্রে এ রাজ্যে ৮০ হাজার ৬৮১টি বুথকে ভেঙে নতুন বিন্যাস করার প্রয়োজন ছিল। জেলাশাসকেরা নিজেদের এলাকায় কোথায় এমন বিন্যাস করা যায়, তার রূপরেখা স্থির করে সিইও কার্যালয়ে পাঠিয়েছিলেন। তার ভিত্তিতে নতুন বুথ বিন্যাসের খসড়া তৈরি হয়। প্রস্তাবিত সেই বিন্যাসে বুথ সংখ্যা আরও ১৩ হাজার ৮৫৩টি বাড়ছে। ফলে এই তালিকা চূড়ান্ত হলে রাজ্যে মোট বুথের সংখ্যা হবে ৯৪ হাজার ৪৯৭টি। প্রস্তাবিত খসড়ায় ৩৭টি বুথ সংযুক্ত অথবা বাদ দেওয়া হচ্ছে। পুনর্গঠিত হচ্ছে ১২৫৩টি বুথ। ৭০৩টি বুথ স্থানান্তর করার প্রস্তাব দিয়েছিল জেলা প্রশাসনগুলি। তাতে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক বুথ বাড়ছে দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। সেখানে থাকা ৮৮৫৯টির সঙ্গে আরও ১৫৫৩টি নতুন বুথ যুক্ত করার প্রস্তাব রয়েছে। সবচেয়ে কম সংখ্যক, ১৬টি বুথ বাড়ানোর প্রস্তাব রয়েছে কালিম্পংয়ে।

বুথ বিন্যাসের এই খসড়া পাঠানো হয়েছিল রাজনৈতিক দলগুলির কাছে। তার ভিত্তিতেই হয় সর্বদল বৈঠক। তাতে স্থির হয়েছিল, গত ৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলি কারণ এবং যুক্তি-সহ এ ব্যাপারে তাদের মতামত-অভিযোগ জমা করবে। সেই প্রস্তাবগুলি পাঠানো হবে সব জেলাশাসককে। কোন প্রস্তাব মানা সম্ভব, কারণ-সহ তা জানাবেন জেলাশাসকেরাও। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে কমিশন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। এই কাজটিই জেলাস্তর থেকে সম্পূর্ণ হয়নি বলে সূত্রের দাবি।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Election Commission of India Polling Booth District magistrate

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy