প্রকৃতি প্রেম বরাবরই আকৃষ্ট করে বছর একুশের তরুণী রূপকথা রুদ্রকে। প্রকৃতির অনন্য রূপকে স্মৃতির পাতায় ধরে রাখতে রূপকথা আগেও বহু বার লেন্সবন্দি করে পছন্দের মুহূর্তগুলিকে। ইচ্ছের সুতোয় বেঁধে ছবির ফ্রেমে সে সব মুহূর্তকে তুলে ধরাই আলোকচিত্রীর কাজ। তেমনই হরেক ছবির ঝাঁপি নিয়ে ফেব্রুয়ারি মাসেও হাজির হয়েছিল রূপকথা। তার কয়েক মাসের মধ্যেই গত রবিবার, ৭ জুলাই কলকাতায় উদ্বোধন হল রূপকথার নিজের ফোটোগ্যালারি, ‘রূপকথা’স স্ন্যাপস্কেপ’। ১০০০ স্কোয়্যারফিটের এই ফোটোগ্যালারিতে মোটামুটি ১১০ থেকে ১২০টি ছবির প্রদর্শনী করা যেতে পারে।
বছর পাঁচেক বয়স থেকেই মায়ের ক্যামেরা হাতে তুলে নিয়ে নাড়াচাড়া করতে করতে ছবির প্রতি একটা ভাললাগা তৈরি হয়েছিল রূপকথার। সেই থেকেই পথচলা শুরু। মাঝখানে পেয়েছেন বেশ কিছু সম্মান ও পুরস্কার। পেয়েছেন ‘পিকচারেস্ক ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ২০২২’ পুরস্কার, ‘ফটোফুনিয়া ২০২৩’-এ ‘স্টার ফটোগ্রাফার’ ইত্যাদির মতো দেশ বিদেশের একগুচ্ছ খেতাব।
রবিবার ‘সাপোর্টঅ্যাক্ট’-এর উদ্যোগে রূপকথার এই গ্যালারির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভিড় জমিয়েছিলেন ছবির সমঝদাররা। অনুষ্ঠানে মুখ্য অতিথি হিসাবে ছিলেন অভিনেত্রী দেবলীনা দত্ত এবং অভিনেতা-কাহিনিকার পদ্মনাভ দাশগুপ্ত। সেই উপলক্ষে রূপকথার তোলা ছবিতেই সেজেছিল নতুন গ্যালারি। প্রকৃতি থেকে রাস্তাঘাট, পোর্ট্রেট থেকে ল্যান্ডস্কেপ, কিংবা ফ্যাশন শ্যুট, মানবিক ভাবাবেগ, সব রকমের থিমে অন্য ধাঁচের ছবির গল্পগুলি অতিথিদের মনে জায়গা করে নেয়।
ছবির প্রদর্শনী ঘুরে দেখে অভিনেত্রী দেবলীনা দত্ত বলেন, “মাত্র ২১ বছর বয়সেই রূপকথার এই সাফল্য সত্যিই আমাদের সকলকে খুব মুগ্ধ করে। কারণ নতুন প্রজন্মকে নিয়ে আমাদের সবসময়ই একটা অভিযোগ থাকে, যে তারা ফোনের প্রতি এখন খুবই আসক্ত। প্রকৃতির সঙ্গে যোগাযোগ নেই। কিন্তু রূপকথার এই প্রকৃতি প্রেম যে ভাবে তাঁর ছবিতে ফুটে উঠেছে, দেখে মনে হচ্ছে এই মুহূর্তগুলি প্রকৃতিরই ওকে উপহার দেওয়া।”
রূপকথার নিজের কথায়, “মানুষ প্রদর্শনীতে এসে ছবি দেখেছেন, প্রশংসা করেছেন এটাই বড় পাওনা। চাইব আগামীতে এই গ্যালারি শুধু আমার ছবি নয়, আরও অনেকের প্রদর্শনীর ঠিকানা হয়ে উঠুক।” পরবর্তীতে ছবি, পেন্টিং, ভাস্কর্য, ব্যুটিকের পোশাক-গয়না বা প্রসাধন সামগ্রী, সব কিছু নিয়েই এই গ্যালারিতে প্রদর্শনীর সুযোগ দেওয়ার ভাবনা রয়েছে রূপকথার।
এ বারের প্রদর্শনীতেও ছিল নানা ঘরানার ছবি। তালিকায় ভ্রমণ, প্রকৃতি থেকে শুরু করে ল্যান্ডস্কেপ, বন্যপ্রাণ, মানবিক আবেগ-অনুভূতি, পোর্ট্রেট এবং ফ্যাশন বা সাজগোজের নানা মুহূর্তকে তুলে ধরেছেন তরুণী আলোকচিত্রী। রূপকথার লেন্সের জাদুতে ধরা দিয়েছে কাশ্মীর, হিমাচল প্রদেশ, মাইসোর, অরুণাচল প্রদেশ, লাদাখ এবং দেশ বিদেশের অজস্র সুন্দর দৃশ্য। নিজের চেষ্টায় বহু প্রদর্শনী ও কর্মশালায় গিয়ে একটু একটু করে এ ভাবেই নিজেকে নিজেকে দক্ষ করে তুলছেন বছর একুশের রূপকথা রুদ্র।
অনুষ্ঠানের ডিজিটাল মিডিয়া পার্টনার ছিল আনন্দবাজার অনলাইন।