স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) ইন্টারভিউয়ের তালিকায় নাম রয়েছে ‘অযোগ্য’ প্রার্থীদের। পুরো নম্বর পেয়েও নতুন পরীক্ষার্থীদের অনেকে ইন্টারভিউয়ে ডাক পাননি। অথচ কেউ কেউ আবার প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা দেখিয়ে অতিরিক্ত ১০ নম্বর পেয়ে গিয়েছেন! এ বার এমনই নানাবিধ অনিয়মের অভিযোগ উঠল স্কুল সার্ভিস কমিশনের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে মামলাও করলেন শিক্ষকদের একাংশ।
সোমবার হাই কোর্টে মামলা দায়ের করা হয়েছে শিক্ষকদের তরফে। মামলাকারীদের দাবি, ইন্টারভিউয়ে ডাক পাওয়া চাকরিপ্রার্থীদের তালিকায় একাধিক ‘দাগি অযোগ্য’-এর নাম রয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করে কী ভাবে তাঁদের এই সুযোগ দেওয়া হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বাকিরা। এমনকি, অভিযোগ, প্রাইমারি স্কুলে চাকরি করেছেন এমন অনেকেই শিক্ষকতার অভিজ্ঞতার নিরিখে অতিরিক্ত ১০ নম্বর পেয়ে গিয়েছেন। আইনজীবী ফিরদৌস শামিমের দাবি, আংশিক সময়ের জন্য কাজ করতেন এমন কর্মীরাও তাঁদের কাজের অভিজ্ঞতা দেখিয়ে একই সুবিধা নিয়েছেন। এ সব অনিয়মের বিরুদ্ধেই হাই কোর্টে গিয়েছেন শিক্ষকেরা। আগামী বুধবার বিচারপতি অমৃতা সিংহর বেঞ্চে ওই মামলার শুনানি হওয়ার সম্ভাবনা।
আরও পড়ুন:
শনিবার রাতে এসএসসির একাদশ-দ্বাদশের ইন্টারভিউয়ের তালিকা প্রকাশ পায়। এর পরেই শুরু হয় বিতর্ক। কারণ, দেখা যায়, তালিকায় ২০ হাজার জনের নাম থাকলেও যাঁরা দীর্ঘ দিন ধরে আন্দোলন করেছেন, তাঁদের অনেকেরই নাম নেই। আবার, নতুন পরীক্ষার্থীদের মধ্যে অনেকে ৬০-এ ৬০ পেয়েও ইন্টারভিউয়ে ডাক পাননি! যারপরনাই ক্ষুব্ধ হন তাঁরাও। চাকরিহারা শিক্ষক তথা এসএসসি আন্দোলনের অন্যতম মুখ চিন্ময় মণ্ডল বলেন, ‘‘তালিকায় নাম নেই। কাট অফের থেকে তিন নম্বর কম পেয়েছি। অথচ তালিকা মিলিয়ে দেখলাম, অযোগ্যদের তালিকা থাকা একজনকে পর্যন্ত ইন্টারভিউয়ে ডাকা হয়েছে!’’ আর এক চাকরিহারার কথায়, ‘‘পাঁচ থেকে ছ’বছর চাকরি করার পর, নিরপরাধ হয়েও প্রাতিষ্ঠানিক অসঙ্গতি এবং বিচারব্যবস্থার ব্যর্থতায় বঞ্চিত হয়েছি। এতে তো আমাদের কোনও দোষ নেই! আমাদের এখন কী হবে?’’ একাদশ-দ্বাদশে সুযোগ না পেলেও আপাতত নবম-দশমের ফলপ্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছেন তাঁরা।
যদিও এসএসসি-র দাবি, সব কিছু নিয়ম মেনেই হয়েছে। এ বছর একাদশ-দ্বাদশে শূন্যপদ ছিল ১২,৪৪৫টি। লিখিত পরীক্ষার পর ২০ হাজার পরীক্ষার্থীর নামের তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। এই ২০ হাজার চাকরিপ্রার্থীকে প্রথমে নথি যাচাইকরণ এবং পরে ইন্টারভিউয়ের জন্য ডাকা হবে। অর্থাৎ, ইন্টারভিউয়ে প্রতিটি শূন্যপদের জন্য ডাকা হয়েছে ১৬ জনকে।