Advertisement
E-Paper

শোভনের পর নতুন মেয়র বসাতে আইন বদলের চিন্তা

পুরসভার বর্তমান আইনে বলা আছে কাউন্সিলর না হলে মেয়র পদে বসা যাবে না। কিন্তু মেয়র হিসেবে যাঁর কথা বিবেচনায় আসছে, তিনি কাউন্সিলর নন। নতুন সংশোধনীতে প্রস্তাব থাকবে, বাইরে থেকে যে কেউ মেয়র হতেই পারেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০১৮ ০৪:০৪
ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

মেয়র পদে শোভন চট্টোপাধ্যায়কে ইস্তফা দিতে বলার পর এখন নতুন মেয়র করা নিয়ে প্রশাসনের সর্বোচ্চ স্তরে ভাবনা চিন্তা শুরু হয়েছে। এ জন্য প্রয়োজনে আইন সংশোধন করবে সরকার। চলতি বিধানসভাতেই সেই সংশোধনী আনা হতে পারে বলে সূত্রের খবর।

কী সেই সংশোধনী? পুরসভার বর্তমান আইনে বলা আছে কাউন্সিলর না হলে মেয়র পদে বসা যাবে না। কিন্তু মেয়র হিসেবে যাঁর কথা বিবেচনায় আসছে, তিনি কাউন্সিলর নন। নতুন সংশোধনীতে প্রস্তাব থাকবে, বাইরে থেকে যে কেউ মেয়র হতেই পারেন। তবে আগামী ৬ মাসের ভেতরে তাঁকে কোনও ওয়ার্ড থেকে জিতে কাউন্সিলর হতে হবে। যে নিয়ম বিধানসভা এবং লোকসভা ভোটের ক্ষেত্রে রয়েছে। নবান্ন সূত্রের খবর, পুরসভার কাজে ‘দক্ষ’ কাউকে বসাতে চান তৃণমূল নেতৃত্ব। তাই বর্তমান পুর আইনের সংশোধনী আনার ভাবনা। চলতি বিধানসভা অধিবেশনে পুর আইনের সেই সংশোধনী তোলা হতে পারে। নবান্নের এক শীর্ষকর্তার মন্তব্য, ‘‘যিনি পুরসভার কাজ ভাল বোঝেন। যাঁর কাজের সঙ্গে পুর প্রশাসনটাও চালানোটাও মসৃণ হবে। তেমন কাউকে ওই পদে বসাতেই আইের সংশোধন করা হবে। প্রয়োজনে আগামী বৃহস্পতিবার চলতি বিধানসভা অধিবেশনে ওই আইন সংশোধনের প্রসঙ্গ উঠতে পারে।’’

এ দিন, মেয়র এবং মন্ত্রী দুটো পদ থেকেই ইস্তফা দিয়েছেন শোভন চট্টোপাধ্যায় মঙ্গলবার দিনভর এই খবর নিয়ে তোলপাড় হয় রাজ্য রাজনীতি। যদিও রাতে মন্ত্রী পদ থেকে তাঁর ইস্তফার খবর সরকারি ভাবে প্রকাশ পেলেও মেয়র পদ ছাড়া নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েই যায়। এ ব্যাপারে বার বার ফোন করলেও শোভনবাবুর প্রতিক্রিয়া মেলেনি। যদিও শোভনবাবু মেয়র পদ যে ছাড়তে চলেছেন তার আভাস মিলেছে পুরসভার প্রশাসনিক মহলেও। মেয়র ইস্তফা দিলে কী করতে হবে পুর প্রশাসনকে, তার ছক কিন্তু তৈরি হয়ে গিয়েছে এ দিন রাতেই। পুরসভার এক পদস্থ অফিসার জানান, পুরসভার ১৯৮০ সালের আইনের ৩৮ ধারা অনুসারে বলা আছে মেয়র ইস্তফা দিলে তাঁর কাজ দেখতে পারেন ডেপুটি মেয়র। আর নতুন মেয়রকে নির্বাচিত করতে হবে ইস্তফা দেওয়ার এক মাসের মধ্যে। পুরসভা সূত্রের খবর, সন্ধ্যায় পুরসভা থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন পুর কমিশনার খলিল আহমেদ। পরে নবান্নের নির্দেশ পেয়ে ফের পুরভবনে আসেন। এরপরই মেয়রের ওএসডি অম্লান লাহিড়িকে ডেকে পাঠান। ডাকা হয় পুরসভার আইন দফতরের চিফ অফিসার-সহ পদস্থ অফিসারদের। কলকাতা পুর আইনের বই ঘেঁটে ৩৮ ধারায় কী লেখা আছে, তা জানানো হয় নবান্নকেও।

এখন প্রশ্ন হল, ডেপুটি মেয়র তো এমনিতেই অসুস্থ রয়েছেন এখন। বেশ কয়েকদিন হল তিনিও পুরসভায় আসছেনও না। তা হলে কী হবে? সেই প্রসঙ্গে সরকারি তরফে এমন কথাও ওঠে, পুর কমিশনার নিজেই সেই কাজ দেখবেন। এ বিষয়ে একাধিক অফিসার বলেন, নির্বাচিত বোর্ডে পুর কমিশনার এ ভাবে ক্ষমতায় থাকতে পারেন না। তা হলে কি ডেপুটি মেয়রকে দায়িত্ব দিয়ে বকলমে পুর কমিশনার সেই কাজ দেখবেন? এত সব জটিলতার প্রশ্ন ওঠায় বিকল্প রাস্তা খোঁজার পথ শুরু হয়।

এ দিকে, প্রথমত মেয়রকে ইস্তফা দিতে হলে ইস্তপা পত্র পৌঁছতে হবে পুরসভার চেয়ারপার্সন মালা রায়ের কাছে। রাত পর্যন্ত তেমন কোনও চিঠি মালাদেবীর কাছে জমা পড়েনি বলে তিনি জানিয়েছেন। এ দিকে আজ বুধবার পুরসভার ছুটি। তাই এখনও পর্যন্ত মেয়র শোভনবাবু কখন ইস্তফা দেবেন তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েই গিয়েছে।

মন্ত্রী ও মেয়র পদে শোভনবাবুর ইস্তফা নিয়ে শোরগোল শুরু হয় বিকালে। সকালে বিধানসভায় আবাসন দফতরের মন্ত্রী হিসেবে তিনি প্রশ্নোত্তর পর্বে উত্তরও দিয়েছেন। পরে বিধানসভা ছেড়ে কলকাতা পুরসভার মাসিক অধিবেশনেও যোগ দিতে যান মেয়র। সেখানেও তাঁকে সাবলীল হতে দেখা যায়নি। মিনিট কুড়ি থেকেই চলে অধিবেশন কক্ষ থেকে বেরিয়ে যান। পরে চলে যান নবান্নে দমকল দফতরের এক অনুষ্ঠানে।

KMC Mayor
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy