সাত বছর চাকরি করার পর আবার কেন পরীক্ষা দিতে হবে? এই প্রশ্ন তুলে আন্দোলন করছেন এসএসএসির চাকরিহারা ‘যোগ্য’ শিক্ষক-শিক্ষিকারা। শুক্রবার তাঁদের নবান্ন অভিযানকে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার কাণ্ড বাধে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে। চলে পুলিশি ধরপাকড়ও। ‘অর্ধনগ্ন’ হয়ে চাকরিহারাদের নবান্ন অভিযান আটকে দেওয়ায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন আন্দোলনকারীরা। তাঁদের দাবি, পুলিশ বেছে বেছে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের গ্রেফতার করেছে! এই ঘটনার প্রতিবাদে রবিবার নতুন কর্মসূচির ঘোষণাও করেছেন তাঁরা।
নিজেদের দাবিদাওয়া নিয়ে সরকারের উপর আরও চাপ বৃদ্ধি করতে শুক্রবার শিয়ালদহ থেকে নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছিলেন চাকরিহারাদের একাংশ। সেইমতো সকাল থেকেই শহরের বিভিন্ন জায়গায় জমায়েত শুরু করেছিলেন তাঁরা। তবে মিছিল শুরুর আগেই তাঁদের আটকে দেয় পুলিশ। শুরু হয় ধস্তাধস্তি। বেশ কয়েক জনকে আটক করে প্রিজ়নভ্যানে তোলা হয়। শুধু শিয়ালদহ নয়, ধর্মতলা, সল্টলেক থেকেও ধরপাকড় করে পুলিশ।
এই প্রসঙ্গে শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠকে চাকরিহারা শিক্ষকশিক্ষিকাদের অন্যতম মুখ মেহবুব মণ্ডল বলেন, ‘‘আমাদের ঘোষিত কর্মসূচি ছিল। পুলিশকে বিষয়টি মেল করে জানানো হয়। কিন্তু তার পরেও আমাদের খুঁজে খুঁজে বার করে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রায় ১৫০ জন শিক্ষক-শিক্ষিকাকে জোর করে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’’
শুক্রবার পুলিশের এই ধরপাকড়ের প্রতিবাদে নয়া কর্মসূচির ঘোষণা করলেন চাকরিহারারা। তাঁরা জানিয়েছেন, আগামী রবিবার শুধু কলকাতা নয়, রাজ্য জুড়ে নাগরিক সমাজকে সঙ্গে নিয়ে ধিক্কার দিবস মিছিল পালন করা হবে। একই সঙ্গে শুক্রবার যাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁদের নিঃশর্ত মুক্তিরও দাবি জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। যদি তাঁদের ছাড়া না হয়, তবে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিলেন চাকরিহারারা।
আরও পড়ুন:
শুক্রবার থেকেই চাকরিহারারা তাঁদের অবস্থান বিকাশ ভবনের সামনে থেকে সরিয়ে নেন। হাই কোর্টের নির্দেশমতো সেন্ট্রাল পার্কে অবস্থান শুরু করলেন তাঁরা। শুক্রবারই সরকারি স্কুলে নবম-দশম এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির জন্য সহকারী শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)। এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার নতুন বিধিও প্রকাশিত হয়েছে। নয়া বিধি অনুসারে, প্রার্থীদের শিক্ষকতার পূর্ব অভিজ্ঞতা এবং ক্লাস নেওয়ার দক্ষতার উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। সেই বিজ্ঞপ্তি এবং বিধিপ্রকাশ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন চাকরিহারারা। তাঁদের দাবি, এক চাকরির জন্য দ্বিতীয় বার পরীক্ষা কেন দেব? মাত্র দু’মাসের মধ্যে কী ভাবে প্রস্তুতি সম্ভব? তাঁদের সঙ্গে ‘দ্বিচারিতা’ করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ চাকরিহারাদের।