সাগ্নিক আর অ্যানি।
মধুচন্দ্রিমায় প্যারিসে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে অ্যানি আর সাগ্নিকের। সোমবার সকালে স্নান সেরে বাসি বিয়ের আসরে যাওয়ার আগে সাগ্নিক বলেন, ‘‘পুজোর ছুটি তো প্রায় শেষ হয়ে এলো। আর কিছুদিনের মধ্যেই আমাদের দু’জনের স্কুল খুলে যাবে। ইচ্ছে আছে মার্চ মাসে মধুচন্দ্রিমায় প্যারিস যাওয়ার।’’ হাসি-হাসি মুখে এই কথা বলেই শাশুড়ি এবং মায়ের নির্দেশে বাসি বিয়ের আসরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে ছুটলেন সাগ্নিক চক্রবর্তী। রবিবার রাতে জলপাইগুড়ি শহরের টাউন ক্লাবের ম্যারেজ হলে রীতিমত শাস্ত্রীয় নিয়ম মেনে মালা বদল হয় সাগ্নিক ও অনীক ওরফে অ্যানির।
এ দিন দুপুরে প্রথা মেনে পুরোহিতের মন্ত্রোচ্চারণের সঙ্গে অ্যানির সিঁথিতে সিঁদুর দেন সাগ্নিক। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আত্মীয় স্বজন ও বন্ধু-বান্ধব। এ দিন দুপুরেও খাওয়ার মেনু ছিল বেশ ভারী। ভাত, মুগ ডাল, আলু ভাজা, ছোটো নদীয়ালি মাছের তরকারি, কাতলা মাছের কালিয়া, চাটনি ও রসগোল্লা। এ দিন বিকেল গড়িয়ে সন্ধে নামতেই টাউন ক্লাবের ম্যারেজ হল থেকেই শ্বশুরবাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হন অ্যানি।
অ্যানির মা প্রীতিরানি দত্ত বলেন, ‘‘আমাদের একমাত্র সন্তান অনীক। ছোটোবেলা থেকেই ওর আচার-আচরণ অনেকটাই মেয়েদের মতো। মেয়েদের জামা কাপড় পড়ার ঝোঁকও নজরে পড়েছিল। একটু বড়ো হতেই নাচ শেখা শুরু। নাচের প্রতি আগ্রহ দেখে আমরা ওকে নাচের তালিম স্কুলে শেখানো শুরু করি।’’ প্রীতিরানিদেবী জানান, খুব অল্প সময়ের মধ্যেই অনীক নৃত্যশিল্পী হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলে। একই সঙ্গে চলে লেখাপড়াও।’’ বড় হতে অনীক সব সময়ই তাঁর মাকে বলতেন যে, পুরুষ থেকে নারীতে রূপান্তরিত হবেন তিনি। কবে কোথায় কী ভাবে অনীক অস্ত্রোপচার করে নারী হয়েছেন তা তাঁরা কেউই জানতে পারেননি বলে জানিয়েছেন প্রীতিরানিদেবী।
আরও পড়ুন: অনীক থেকে অ্যানি, বিয়ে করলেন সাগ্নিককে
তিনি বলেন, ‘‘এই সম্পর্কের কথা প্রথমে যখন জানতে পারি। তখন তা মেনে নিতে খুবই কষ্ট হয়েছে ঠিকই। এরপর আমাদের একমাত্র সন্তানের সুখ-শান্তির দিকে তাকিয়ে আমরা এই বিয়ে মেনে নিয়েছি। আসলে আমরা অনেকেই প্রগতিশীল চিন্তাভাবনায় বিশ্বাস করলেও বাস্তব জীবনে সেইসব বিষয়ে বিরূপ মন্তব্য করে থাকি। আমি সমাজের দিকে তাকিয়েই জলপাইগুড়ি এসে ওদের চার হাত একসঙ্গে করে দিতে পেরে খুবই খুশি।’’
সাগ্নিকের নব্বই ছুঁইছুঁই ঠাকুমা শান্তি চক্রবর্তী এ দিন সন্ধ্যায় নাতি-নাতবৌকে বরণ করে ঘরে তোলেন। সাগ্নিকের বাবা সুব্রত চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বুধবার টাউন ক্লাবের ম্যারেজ হলেই বৌভাতের আসর বসবে। আমার ছেলে ও বৌমর দাম্পত্য জীবন যেন সুখ স্বাচ্ছন্দ্যে ভরে ওঠে এই কামনাই করি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy