Advertisement
০২ মে ২০২৪

জঙ্গি মোকাবিলায় ভাষার অস্ত্র শানাচ্ছে এনআইএ

সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলা করতে এ বার নতুন ভাষার তালিমও নিতে হচ্ছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)-র গোয়েন্দাদের। মাতৃভাষা, হিন্দি ও ইংরেজির বাইরে আর একটি ভাষা শেখা তাঁদের জন্য বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

মেহবুব কাদের চৌধুরী ও সুরবেক বিশ্বাস
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৬ ০২:৫৪
Share: Save:

সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলা করতে এ বার নতুন ভাষার তালিমও নিতে হচ্ছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)-র গোয়েন্দাদের। মাতৃভাষা, হিন্দি ও ইংরেজির বাইরে আর একটি ভাষা শেখা তাঁদের জন্য বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। দিল্লির সদর দফতর তো বটেই, কলকাতা, গুয়াহাটি, মুম্বই, লখনউ, হায়দরাবাদ ও কোচিতে এনআইএ-র শাখা অফিসের অফিসার ও কর্মীরাও শিখছেন অতিরিক্ত ভাষা।

এনআইএ-র অধিকাংশ মামলা ইসলামিক স্টেট (আইএস), জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি), লস্কর-ই-তইবা বা ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের মতো জেহাদি জঙ্গিদের বিরুদ্ধে। তার ওপর দিনকে দিন ভারতে আইএস-এর প্রভাব বেড়ে চলার প্রমাণ পাচ্ছেন গোয়েন্দারা। এই অবস্থায় আরবি, উর্দু, ফারসির মধ্যে যে কোনও একটি ভাষা জানা জরুরি বলে মনে করছেন গোয়েন্দাদের একাংশ।

তবে উত্তর ভারতীয় কোনও অফিসার তামিল বা তেলুগু শিখতে চাইলে তাঁকে সেই সুযোগও দেওয়া হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে মাওবাদীদের বিরুদ্ধে তদন্তে সুবিধে হবে। আবার ভারত থেকে ইরাক-সিরিয়ায় গিয়ে আইএস-এ যোগ দেওয়া যুবকদের একটা বড় অংশ দক্ষিণ ভারতের। সে সব মামলাতেও সুবিধে পাবেন এই অফিসারেরা।

এনআইএ-র আইজি সঞ্জীব সিংহ বলেন, ‘‘নিজের মাতৃভাষা ছাড়া এনআইএ-র গোয়েন্দারা সকলেই ইংরেজি ও হিন্দি জানেন। সঙ্গে আরও একটি ভাষা শেখাটা এখন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তদন্তে এটা কাজে লাগবে।’’ আইজি জানিয়েছেন, গত তিন-চার মাস ধরে এনআইএ-র সদর দফতর ও প্রতিটি শাখা অফিসে এটা ভাষা শিক্ষা চলছে।

জানুয়ারির ৪ তারিখে এনআইএ-র কলকাতার তদানীন্তন এসপি বিক্রম খলাটে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে চিঠি লিখে জানান— জঙ্গি সংক্রান্ত মামলাগুলির তদন্তে আরবি ও উর্দু থেকে অনুবাদ করার লোক পেতে সমস্যা হচ্ছে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় যেন এই শহরে এনআইএ-র শাখা অফিসের গোয়েন্দাদের উর্দু ও আরবি ভাষা শেখানোর ব্যবস্থা করেন। এর পর মে মাস থেকে সল্টলেকে এনআইএ অফিসে গিয়ে গোয়েন্দাদের আরবি, ফারসি ও উর্দু শেখাচ্ছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি ও ফারসি বিভাগের প্রধান ইশারত আলি মোল্লা বলেন, ‘‘আমাদের বিভাগের তিন জন শিক্ষক ঘুরিয়ে ফিরিয়ে প্রতি সপ্তাহে ক্লাস নিতে যান।’’ তিনি জানান, চার মাসে আরবি বর্ণপরিচয় শেষ। এখন মৌলিক শব্দ গঠন শেখানো চলছে।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ উপাচার্য (শিক্ষা) স্বাগত সেন বলেন, ‘‘আপাতত এক বছরের জন্য এই ভাষা প্রশিক্ষণ চলবে। প্রয়োজনে প্রশিক্ষণের মেয়াদ বাড়াতে পারে এনআইএ।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

terrorism NIA
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE