Advertisement
০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
CPIM

পতনের জেলায় সিপিএমের নিয়মের ‘নিরঞ্জন’, সম্মেলন থেকে চতুর্থ বারের জন্য সম্পাদক হলেন সেই সিহিই

যদিও এ হেন ‘ব্যতিক্রম’ প্রথম নয়! এর আগে মালদহ জেলা সম্মেলনেও দেখা গিয়েছিল একই চিত্র। চতুর্থ বারের জন্য মালদহের জেলা সম্পাদক পদে ফের বহাল হন তিন বারের সম্পাদক অম্বর মিত্র। একই ঘটনা ঘটল পূর্ব মেদিনীপুরে।

চতুর্থ বারের জন্য পূর্ব মেদিনীপুরে সিপিএমের জেলা সম্পাদক নির্বাচিত হলেন  নিরঞ্জন সিহি।

চতুর্থ বারের জন্য পূর্ব মেদিনীপুরে সিপিএমের জেলা সম্পাদক নির্বাচিত হলেন নিরঞ্জন সিহি। — নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২০:১৩
Share: Save:

২০১১ সালে সিপিএম সরকারের পতনের অন্যতম সূচক ছিল নন্দীগ্রাম। রাজনৈতিক পালাবদলের আগে ২০০৮ সালেও পঞ্চায়েত ভোটে পূর্ব মেদিনীপুরে জেলা পরিষদ হারাতে হয়েছিল সিপিএমকে। সেই নন্দীগ্রামের জেলা পূর্ব মেদিনীপুরে সিপিএমের জেলা সম্মেলনে দলীয় নিয়মই কার্যকর হল না! টানা তিন বার জেলা সম্পাদক পদে থাকার পরেও চতুর্থ বারের জন্য জেলা সম্পাদক নির্বাচিত হলেন সেই নিরঞ্জন সিহি-ই!

গত কয়েক বছর ধরেই সিপিএমের সাংগঠনিক নিয়ম অনুযায়ী, দলের কোনও একটি স্তরে এক জন ব্যক্তি তিনটি মেয়াদের বেশি একই পদে থাকতে পারবেন না। অর্থাৎ টানা তিন দফার বেশি কোনও কমিটির সম্পাদক পদে থাকা যায় না। জেলা সম্পাদকের বয়সের ঊর্ধ্বসীমাও বাঁধা রয়েছে ৭০ বছরে। সাংগঠনিক এই নিয়ম-নীতি কার্যকর হওয়ার পরে অতীতে ২০২২ সালের সম্মেলনে বেশ কিছু জেলায় সম্পাদক বদল হয়েছিল। কিন্তু পূর্ব মেদিনীপুরের ক্ষেত্রে তা কার্যকর হল না!

সিপিএমের অন্দরের খবর, এর নেপথ্যে রয়েছে গোষ্ঠী রাজনীতি। নতুন কাকে দায়িত্ব দেওয়া হবে, তা নিয়ে দলের অন্দরে অনেকগুলি পক্ষ তৈরি হয়েছিল। সেই কারণেই ‘ব্যতিক্রমী’ হিসাবে নিরঞ্জনকেই ফের জেলা সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

যদিও এ হেন ‘ব্যতিক্রম’ প্রথম নয়! এর আগে মালদহ জেলা সম্মেলনেও দেখা গিয়েছিল একই চিত্র। চতুর্থ বারের জন্য মালদহের জেলা সম্পাদক পদে ফের বহাল হন তিন বারের সম্পাদক অম্বর মিত্র। একই ঘটনা ঘটল পূর্ব মেদিনীপুরে। দলীয় সূত্রে খবর, পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় সিপিএমের যে পশ্চিম (মেদিনীপুর) প্রভাবিত গোষ্ঠী, তাঁদের একাংশ খেজুরির নেতা হিমাংশু দাসকে জেলা সম্পাদক করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু এর উল্টো মতও তৈরি হয়। হিমাংশুর উল্টো দিকে আবার জেলা সম্পাদক পদের দাবিদার হয়ে ওঠেন দু’জন। এক দিকে ছিলেন প্রাক্তন বিধায়ক ইব্রাহিম আলি, অন্য দিকে প্রাক্তন ছাত্রনেতা পরিতোষ পট্টনায়ক। তরুণ নেতা ইব্রাহিম দলের রাজ্য কমিটির সদস্য, একই সঙ্গে দলের যুব সংগঠনেরও জেলার দায়িত্বে রয়েছেন। যে হেতু তিনি গণসংগঠনের নেতা, তাই তাঁকে এখনই দলীয় সম্পাদকের দায়িত্ব দিতে চাননি সিপিএমের একাংশ। অন্য দিকে, এককালের ছাত্রনেতা পরিতোষ আবার রাজ্য কমিটির সদস্য নন। এমনই নানা কারণে কোন্দল এড়াতে নিরঞ্জনকেই রেখে দেওয়া হল জেলা সম্পাদক পদে।

গত শুক্রবার থেকে পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ায় দলের জেলা সম্মেলন শুরু হয়েছিল। সেই সম্মেলনেই চতুর্থ বারের জন্য জেলা সম্পাদক হয়েছেন নিরঞ্জন। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মণ্ডলীর তরফে পূর্ব মেদিনীপুরের দায়িত্বে রয়েছেন সুজন চক্রবর্তী। নিরঞ্জনকে চতুর্থ বারের জন্য জেলা সম্পাদক করা নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘এ কথা ঠিক যে, দলীয় নিয়মে বলা হয়েছে তিন বারের বেশি কাউকে কোনও স্তরে সম্পাদক পদে রাখা যায় না। আবার এও ঠিক, দলের নথিতেই বলা হয়েছে, বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে দুই তৃতীয়াংশের মত নিয়ে এই নিয়মের ব্যতিক্রম হতে পারে। এ ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

CPIM CPM district comitee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy