Advertisement
E-Paper

ভোলবদল ৮ মাসেই, দার্জিলিঙে ফের স্বাগত মমতা

মঙ্গলবার, ৬ ফেব্রুয়ারি সুকনা, রোহিণী, কার্শিয়াং হয়ে সেই একই পথে দার্জিলিং পৌঁছলেন মুখ্যমন্ত্রী। সুকনা বনবাংলো থেকেই তাঁর জন্য রাস্তার দু’ধারে দাঁড়ানো মানুষ।

কিশোর সাহা

শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৪:০২
মমতাময়ী: মন ঘিসিঙ্গের মেয়েকে মুখ্যমন্ত্রীর আদর। পাশে বিনয় তামাঙ্গ। কার্শিয়াঙের সভায় মঙ্গলবার।
ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

মমতাময়ী: মন ঘিসিঙ্গের মেয়েকে মুখ্যমন্ত্রীর আদর। পাশে বিনয় তামাঙ্গ। কার্শিয়াঙের সভায় মঙ্গলবার। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

ঠিক আট মাসের ফারাক।

গত বছর ৯ জুন রাতে এই রাস্তা দিয়েই দার্জিলিং থেকে শিলিগুড়ি নেমেছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পথের বেশির ভাগটাই ছিল অন্ধকার। প্রতি পদে ছিল মোর্চার বিক্ষোভের আশঙ্কা। পুলিশ-গোয়েন্দারা ছড়িয়ে ছিলেন সর্বত্র। ভয় ছিল, বিমল গুরুঙ্গের অনুগামীরা হয়তো কোথাও রাস্তা কেটে রেখেছেন। হয়তো পাহাড়ের কোনও লুকনো জায়গা থেকে নীচে পাথর গড়িয়ে দেবেন। এই সব আতঙ্ককে সঙ্গে নিয়ে দ্রুত নেমেছিল কনভয়। সঙ্গী ছিল তার আগের দিন মন্ত্রিসভার বৈঠকের সময় গুরুঙ্গপন্থীদের তাণ্ডবের স্মৃতি।

মঙ্গলবার, ৬ ফেব্রুয়ারি সুকনা, রোহিণী, কার্শিয়াং হয়ে সেই একই পথে দার্জিলিং পৌঁছলেন মুখ্যমন্ত্রী। সুকনা বনবাংলো থেকেই তাঁর জন্য রাস্তার দু’ধারে দাঁড়ানো মানুষ। কেউ এসেছেন জিএনএলএফের হয়ে। কেউ আবার মোর্চার কর্মী-সমর্থক। খুঁজে দেখলে চোখে পড়বে তৃণমূলের মুখও। সঙ্গে জিএনএলএফ আর মোর্চার পতাকা-ফেস্টুন, সুবাস ঘিসিঙ্গের ছবি। আবার কোথাও ‘মমতা জিন্দাবাদ’। কারও হাতে খাদা, কারও হাতে বুনো ফুলের তোড়া। রাস্তার দু’দিকে ছিল পুলিশ। তাদের ঠেলেই সামনে আসতে চাইছিলেন তরুণ-তরুণীরা। দেখে হাসি ফোটে মুখ্যমন্ত্রীর মুখে। রোহিনীর অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘‘আমি পাহাড়কে হাসিখুশি দেখতে চাই। আমি এখান থেকে কিছু নিতে আসিনি।’’ দার্জিলিং অবধি এই ছবির বদলায়নি। বরাবরের মতোই রাস্তায় অন্তত ১৬-১৭টি বার দাঁড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তবু এই ভিড়ের মাঝেই শোনা গিয়েছে ছোট্ট মন্তব্য, ‘‘এই যে এত লোক দেখছেন, এত হাত নাড়ছে মুখ্যমন্ত্রীর কনভয় দেখে, ৯ তারিখে এদের অনেকেই ওঁর রাস্তা কাটার ছক কষছিল!’’ এক জন বললেন, ‘‘পাহাড়কে পাহাড় বদলে গিয়েছে!’’ পাশ থেকে আর এক জন: ‘‘নেতাই তো বদলে গিয়েছেন।’’ সেই ‘বদলে যাওয়া নেতার’ প্রতি কট্টরপন্থীদের টিপ্পনি: টোপ দিয়ে লোক নামানো হয়েছে। বিনয়ের জবাব, ‘‘পাহাড়ের শান্তি, উন্নয়নের জন্য যিনি এত করছেন, তাঁর জন্য দাঁড়াব না আমরা?’’

গত ৮ জুন রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠক ছিল দার্জিলিঙে। সেই বৈঠক চলাকালীনই অশান্তি ছড়াতে শুরু করে। প্রথমে বিমল গুরুঙ্গে নেতৃত্বে ভানুভবনের সামনের রাস্তায় বসে পড়েন মোর্চা কর্মীরা। তার পরে আক্রমণ করেন পুলিশের গাড়িকে। ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে আসে পেট্রোল বোমা, তির, লোহার টুকরো। মন্ত্রিসভার সতীর্থদের বিকেলেই শিলিগুড়ি পাঠিয়ে মমতা নিজে থেকে যান দার্জিলিঙে। পরদিন কয়েক দফায় পুলিশ-প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করে রাতে ফেরার পথ ধরেন।

আরও পড়ুন: কার ফ্ল্যাটে ২ কোটি ৪০ লক্ষ! দাবি ঘিরে ধন্দ

সেই পথেই যে ছবিটা পাল্টেছে, তাতে খুশি মুখ্যমন্ত্রীও। ৯ তারিখ তাঁর সঙ্গী ছিলেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। সন্ধ্যায় দার্জিলিং ম্যালের এক রেস্তোরাঁয় বসে কফি খাচ্ছিলেন তিনি। কী বুঝছেন? জবাবে হেসে অরূপ বলেন, ‘‘সবাই সব বুঝতে পারছেন।’’ মুখ্যমন্ত্রীকে পেয়ে খুশি পর্যটন ব্যবসায়ীরাও। এক নামী হোটেলের কর্ণধার অজয় এডওয়ার্ড বলেন, ‘‘পাহাড়ের মানুষ ঘরে ঢুকে গিয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রীর টানে বাইরে এসে দাঁড়ানোর সাহস পাচ্ছেন। এটা কম কী!’’

Darjeeling Mamata Banerjee দার্জিলিং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy