Advertisement
E-Paper

নন-নেট বৃত্তি বন্ধে বিপাকে পড়ুয়ারা

ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি টেস্ট বা নেট পাশ না-করেও গবেষণা চালিয়ে যাওয়ার জন্য একটা কেন্দ্রীয় বৃত্তির ব্যবস্থা থাকায় পড়ুয়ারা উপকৃত হচ্ছিলেন। কিন্তু আগামী আর্থিক বছর থেকে সেই ‘নন-নেট ফেলোশিপ’ বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। এতে সারা দেশের বহু ছাত্রছাত্রীই প্রমাদ গুনছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০১৬ ০৪:১২

ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি টেস্ট বা নেট পাশ না-করেও গবেষণা চালিয়ে যাওয়ার জন্য একটা কেন্দ্রীয় বৃত্তির ব্যবস্থা থাকায় পড়ুয়ারা উপকৃত হচ্ছিলেন। কিন্তু আগামী আর্থিক বছর থেকে সেই ‘নন-নেট ফেলোশিপ’ বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। এতে সারা দেশের বহু ছাত্রছাত্রীই প্রমাদ গুনছেন।

পশ্চিমবঙ্গে ‘পোটেনশিয়াল সেন্টার ফর এক্সসেলেন্স’ বা উৎকর্ষ কেন্দ্র হিসেবে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় এবং কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে বিশ্বভারতীর পড়ুয়ারা ওই ‘নন-নেট বৃত্তি’ পান। আগামী এপ্রিলেই সেই ফেলোশিপ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়ে দিয়েছে যাদবপুর। শুধু যাদবপুর নয়, সারা দেশে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং ‘পোটেনশিয়াল সেন্টার ফর এক্সসেলেন্স’ মিলিয়ে যে-পঞ্চাশটি প্রতিষ্ঠানে নন-নেট বৃত্তি দেওয়া হচ্ছিল, সেগুলোর কোনও পড়ুয়া-গবেষকই আর ওই আর্থিক সহায়তা পাবেন না। দেশ জুড়ে পঁয়ত্রিশ হাজারেরও বেশি পড়ুয়া-গবেষক সমস্যায় পড়বেন। অন্য কোনও বিশ্ববিদ্যালয় বা উৎকর্ষ কেন্দ্র এই বিষয়ে এখনও নোটিস জারি করেনি। তবে যাদবপুর ইতিমধ্যেই বিষয়টি ওয়েবসাইটে জানিয়ে দিয়েছে।

কী এই ‘নন-নেট ফেলোশিপ’?

নেট উত্তীর্ণ না-হয়েও এমফিল বা পিএইচডি করার জন্য যে-ফেলোশিপ বা বৃত্তি দেওয়া হয়, সেটাকেই বলা হয় ‘নন-নেট ফেলোশিপ’। ২০১২ সালে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)-এর দ্বাদশ পরিকল্পনায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যাঁরা নেট পাশ করেননি, সেই ছাত্রছাত্রী এবং গবেষকদের একটি বৃত্তি দেওয়া হবে। সেই টাকায় তাঁরা গবেষণার কাজ চালিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন। সেই সিদ্ধান্ত অনুসারে নন-নেট পিএইচডি গবেষকদের মাসে আট হাজার এবং নন-নেট এমফিল পড়ুয়াদের মাসে পাঁচ হাজার টাকা বৃত্তি দেওয়া হয়।

ছাত্রছাত্রীদের গবেষণার কাজে সুরাহার জন্য চালু করেও ওই বৃত্তি হঠাত্ বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে কেন?

ইউজিসি সূত্রের খবর, গত অক্টোবরে তত্কালীন কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি ওই বৃত্তি বন্ধের কথা জানিয়েছিলেন। তার প্রতিবাদে বিক্ষোভে নামেন জেএনইউ থেকে শুরু করে যাদবপুরের পড়ুয়ারাও। কিন্তু বৃত্তি বন্ধের সিদ্ধান্ত বদলায়নি। ইউজিসি-র নিয়মবিধি অনুযায়ী তাদের প্রতিটি পরিকল্পনারই মেয়াদ পাঁচ বছর। সেই হিসেবে তাদের পাঁচ বছরের দ্বাদশ পরিকল্পনার মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২০১৭ সালের মার্চে। তখনই বন্ধ হয়ে যাবে নন-নেট ফেলোশিপ বা বৃত্তি।

যাদবপুরের পড়ুয়া-গবেষকেরা আবার আন্দোলনে নামবেন বলে হুমকি দিয়েছেন। বৃত্তি বন্ধের ব্যাপারে যাদবপুরের নোটিসের পরিপ্রেক্ষিতে পড়ুয়াদের তরফে অরুমিতা মিত্র বলেন, ‘‘নন-নেট ফেলোশিপ অবিলম্বে ফের চালু করতেই হবে। শিক্ষার প্রগতি বন্ধ হলে আমরা তীব্রতর লড়াইয়ের পথ যাবো।’’

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস জানান, নন-নেট বৃত্তি চালু করার সময় যে-কমিটি গড়া হয়েছিল, তিনি তার অন্যতম সদস্য ছিলেন। তখন এই বৃত্তি বন্ধের বিপক্ষেই সওয়াল করেছিলেন তিনি। ‘‘বৃত্তির বিষয়টি আবার বিবেচনা করার জন্য আমরা ইউজিসি-কে চিঠি দিয়েছি। ইউজিসির তরফে কোনও উত্তর আসেনি। আমরা অপেক্ষায় আছি,’’ বললেন সুরঞ্জনবাবু।

ইউজিসি তাদের ১১তম পরিকল্পনার পরেই ওই ফেলোশিপ খাতে টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে বলে জানান বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য স্বপনকুমার দত্ত। বিশ্বভারতী নিজেদের তহবিল থেকে এখনও ওই বৃত্তি দিয়ে যাচ্ছে। স্বপনবাবু বলেন, ‘‘শুরু করে মাঝপথে বৃত্তি বন্ধ করে দেওয়াটা ভাল দেখায় না। তবে এর পরে আমরা ঠিক করেছি, প্রতিটি বিভাগ থেকে শুধু বিশেষ মেধা বা বিশেষ গবেষণার ভিত্তিতে খুব বাছাই করা পড়ুয়াদের এই বৃত্তি দেব।’’

প্রশ্ন উঠছে, পড়ুয়াদের সমস্যা এবং পরিস্থিতি বিচার করে ইউজিসি-র ১৩তম পরিকল্পনায় কি ওই বৃত্তির বিষয়টিকে আবার ঠাঁই দেওয়া হবে?

স্মৃতির জায়গায় ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের দায়িত্বে এসেছেন প্রকাশ জাভড়েকর। কিন্তু ওই বৃত্তির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত বদলের খবর এখনও নেই। ইউজিসি-র কেউ এই ব্যাপারে মুখ খুলতে চাননি।

non net fellowship NET
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy