শিল্পী লতিকা পাল। নিজস্ব চিত্র
বাবার মৃত্যুর পরে সাত বোনকে নিয়ে অথৈ জলে পড়েছিলেন তিনি। সংসারের হাল ধরতে বাবার মতো তিনিও প্রতিমা তৈরি শুরু করেছিলেন। সেই ছোট বয়স থেকেই লড়াই শুরু হয়েছিল লতিকা পালের। সাত বোনের পড়াশোনা থেকে তাঁদের বিয়ে দেওয়া এবং নিজের পড়াশোনাও— সব সামলেছেন একার হাতে। বর্তমানে তিনি একটি মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্রের শিক্ষিকা। বয়স ৬০ পেরিয়েছে। স্কুল, সংসার সামলে এখনও প্রতিমা তৈরি করেন শিলিগুড়ি মহকুমার নকশালবাড়ির এই প্রতিমা শিল্পী।
লতিকা এ বার এখনও অবধি পাঁচটি দুর্গা প্রতিমার বরাত পেয়েছেন। তাঁর কাজে সাহায্য করেন বোন মায়া পাল এবং পরিবারের লোকজন। সকাল থেকে শুরু হয় কাজ। কাঠামো তৈরি থেকে প্রতিমার গায়ে মাটি লাগানো, রং করা— সবই নিজের হাতে করেন লতিকা। তবে বয়সের ভারে বেশি পরিশ্রমের কাজ করতে তাঁকে নানা সমস্যায় পড়তে হয়।
এক সময় নকশালবাড়ি, হাতিঘিসা, মণিরাম থেকে খড়িবাড়ি এলাকার পুজোর প্রতিমার জোগান দিতেন তাঁর বাবা। আগে বহু পুজো কমিটি লতিকাদের হাতে তৈরি প্রতিমাই নিত। এখন নানা ‘থিম’-এর পুজো আর বিভিন্ন সামগ্রী দিয়ে তৈরি প্রতিমারই কদর বেশি। ফলে, লতিকার তৈরি চিরাচরিত প্রতিমার কদর কমেছে। তবে লতিকার হাতের তৈরি প্রতিমা এখনও নজর কাড়ে স্থানীয় পুজোমণ্ডপে।
লতিকা পালের বোন মায়া পালের কথায়, ‘‘নকশালবাড়ি সুব্রতী সঙ্ঘের পিছনে আমাদের প্রতিমা তৈরির কারখানা। নানা কারণে সে জমি সঙ্কুচিত হয়ে যাচ্ছে।’’ এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনকেও তাঁরা জানিয়েছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস মিলেছে। লতিকা বলেন, ‘‘এক সময় প্রতিমা তৈরিই ছিল সংসারের প্রধান ভরসা। তাই যত দিন পারব, ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে এই কাজ করে যাব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy