জখম তৃণমূল কর্মী। এমজেএন হাসপাতালে তোলা নিজস্ব চিত্র।
এলাকায় নিয়ন্ত্রণ কায়েমকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে এক নিরীহ পথচারী-সহ দুই জন গুলিবিদ্ধ হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। শনিবার রাতে ঘটনাটি ঘটে কোচবিহারের সুটকাবাড়ি বাজারে। সব মিলিয়ে ৭ জন জখম হয়েছেন। ৪ জনকে এমজেএন হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। এক জনকে নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, দুই পক্ষই গুলি ছুড়েছে। একে অপরকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়েছে।
জখমদের নাম হাফিজুল মিঁয়া, বদরেদ্দোজা মিঁয়া, মকছেদ হক এবং নবিউল মিঁয়া। এদের মধ্যে হাফিজুলের বাঁ হাতে ও বদরেদ্দোজার বাঁ পায়ে গুলি লেগেছে। পুলিশ অবশ্য গুলি চালানো হয়নি বলে দাবি করেছে। কোচবিহারের পুলিশ সুপার রাজেশ যাদব বলেন, “ঘটনার অভিযোগ এখনও জমা হয়নি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
কোচবিহার জেলা তৃণমূলের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ এবং সহ সভাপতি আব্দুল জলিল আহমেদের গোষ্ঠীর মধ্যে ওই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। দুই নেতাই অবশ্য গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা অস্বীকার করেন। জেলা তৃণমূলের সভাপতি রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “সমাজবিরোধীদের একটি দল কিছু দিন ধরে ওই এলাকায় সক্রিয় রয়েছে। তারাই কিছু নিরীহ মানুষের উপরে হামলা চালিয়েছে। আমরা পুলিশকে সব জানিয়েছি। দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করে এলাকায় শান্তি ফিরিয়ে আনার দাবি করা হয়েছে।” আব্দুল জলিলেন বক্তব্য, “আমি কলকাতায় রয়েছি। ওই এলাকায় ঠিক কী হয়েছে, জানি না। ব্যক্তিগত গণ্ডগোল হলে পার্টির নাম জড়িয়ে যায়। খোঁজ নিয়ে দেখব।”
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ওই দিন সন্ধ্যায় এলাকার কালিগঞ্জে বাজারে হোসেন আলির নেতৃত্বে তৃণমূলের একটি মিছিল বার হয়। ওই মিছিলকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে বচসা হয়। রাতে হোসেন আলির নেতৃত্বে বাজারে একটি সশস্ত্র মিছিল বার হয়। বাজারেই সিরাজুল হকের নেতৃত্বে তৃণমূলের এক গোষ্ঠীর কর্মী-সমর্থকরা জমায়েত হন। দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে হাফিজুল হক, নবিউল মিঁয়া, আমজাদ হোসেন, মকছেদ আলি, বদরেদ্দোজা মিঁয়া সহ সাত জন জখম হন। তাঁদের শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাত আছে। দু’পক্ষ গুলি ছোড়ে বলে অভিযোগ। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
গ্রাম পঞ্চায়েতের আঠারোনালার বাসিন্দা গুলিবিদ্ধ বদরেদ্দোজা বলেন, “আমি কোনও দল করি না। কাজ সেরে কোচবিহার শহর থেকে বাড়ি ফিরছিলাম। আচমকা গণ্ডগোল শুরু হয়। একটি গুলি এসে আমার পায়ে লাগে।” হাফিজুল বলেন, “আমি সুটকাবাড়ি বাজারে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে ছিলাম। সে সময় কালিগঞ্জ থেকে ফেরত আসা লোকেরা হামলা চালায়। আমার হাতে গুলি লাগে। ধারালো অস্ত্র দিয়ে আমার মাথায় আঘাত করা হয়।” সুটকাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য সিরাজুল হকের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত মন্টু মিয়াঁ বলেন, “বাইরের থেকে কিছু লোকজন তৃণমূলের নামে স্লোগান দিয়ে এসে আমাদের কর্মীদের মারধর করে।” সুটকাবাড়ি অঞ্চলের তৃণমূল সভাপতি হোসেন আলি বলেন, “কালীগঞ্জে শান্তিপূর্ণ মিছিল করে আমাদের কয়েকজন কর্মী সুটকাবাড়ি বাজারে ফিরতেই প্রধানের দলের লোকজন হামলা করে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy