জখম দেব বর্মণ। নিজস্ব চিত্র
বল ভেবে খেলতে গিয়ে বোমা ফেটে জখম হয়েছে সাত বছরের এক শিশু। রবিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে রায়গঞ্জ থানার বীরঘই গ্রাম পঞ্চায়েতের উত্তর রুপাহার এলাকায়। জখম শিশুর নাম দেব বর্মণ। সে স্থানীয় উত্তর রূপাহার প্রাথমিক স্কুলে প্রথম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। শিশুটির ডান হাতে বোমার আঘাত লেগেছে। তাকে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
গত এক মাসে ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের দুইটি এলাকায় দুই যুবকের খুনের ঘটনা ঘটেছে। ফের ওই পঞ্চায়েত এলাকায় বোমা ফেটে আর একটি শিশু জখম হওয়ায় পুলিশের ভূমিকায় বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, পুলিশের গাফিলতি ও নজরদারির অভাবে দীর্ঘ দিন ধরে ওই পঞ্চায়েতের বিভিন্ন এলাকায় দুষ্কৃতীরা সন্ধ্যার পর প্রকাশ্যেই মদ ও জুয়ার আসর বসাচ্ছে। উত্তর রূপাহার এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্কও ছড়িয়েছে। ঘটনাচক্রে, শনিবার গভীর রাতে ওই পঞ্চায়েতের রূপাহার এলাকা থেকে চারটি আগ্নেয়াস্ত্র সহ চার ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশের অবশ্য দাবি, এ দিনের বোমা বিস্ফোরণের সঙ্গে ধৃতদের কোনও সম্পর্ক নেই।
উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার সুমিত কুমারের দাবি, ঘটনাস্থল ও আশেপাশের এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে আর কোনও বোমা পাওয়া যায়নি। কারা, কী উদ্দেশ্যে সেখানে বোমাটি ফেলে গিয়েছিল, তা জানতে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। সমাজবিরোধী কার্যকলাপ বন্ধ করতে ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের বিভিন্ন এলাকায় পুলিশের অভিযান ও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
জখম শিশু দেবের বাবা বৈদ্যনাথ লোহার আলমারি তৈরির একটি কারখানায় কাজ করেন। মা তাপসী গৃহবধূ। তাঁদের দুই ছেলের মধ্যে দেব ছোট। দেবের দাবি, এদিন দুপুরে সে তার খুড়তুতো বোন চাঁদনির সঙ্গে বাড়ির পাশের একটি আমবাগানে খেলছিল। সেই সময় সে সেখানে সুতলি দিয়ে মোড়া নারকেল আকৃতির গোলাকার একটি বস্তু পড়ে থাকতে দেখে। সেটি বল ভেবে দেব তুলে নিয়ে বাড়ির সামনের রাস্তার ধারে নিয়ে যায়। সেখানেই সে ও চাঁদনি সেটি একে অপরের দিকে ছুড়ে ধরছিল। সেই খেলা চলাকালীন দেব একবার ক্যাচ ধরতে ব্যর্থ হলে সেটি তার শরীর থেকে কিছুটা দূরে রাস্তার ধারে পড়ে বিকট শব্দে ফেটে যায়। এরপর চারদিকে ধোঁওয়া ছড়িয়ে পড়ে। দেবকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
এর আগে গত ১ ডিসেম্বর ওই গ্রাম পঞ্চায়েতেরই মহিষবাথান এলাকায় রায়গঞ্জের মাড়াইকুড়া এলাকার বাসিন্দা জয়দেব দে দাস (২৩) নামে এক টোটোচালককে কুপিয়ে খুন করে দুষ্কৃতীরা। এরপর গত ৯ ডিসেম্বর ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের পিপলান হ্যালেঞ্চাপাড়া এলাকায় সুজন মণ্ডল (২৬) নামে স্থানীয় একটি সমবায় সমিতির কোষাধ্যক্ষকে কুপিয়ে খুন করে দুষ্কৃতীরা।
জখম শিশুর মা তাপসীর অভিযোগ, ‘‘সন্ধ্যার পরেই উত্তর রুপাহারের বিভিন্ন এলাকায় দুষ্কৃতীরা মদ ও জুয়ার আসর বসায়। পুলিশের কোনও নজরদারি চোখে পড়ে না কিছু দিন আগে আমাদের পাশের গ্রামে দুই যুবককে খুন করা হয়। কিছু দিন আগে আমাদের পাশের গ্রামে দুই যুবককে খুন করা হয়। আমরা খুব আতঙ্কে রয়েছি কিছুদিন আগে আমাদের পাশের গ্রামে দুই যুবককে খুন করা হয়।’’
পুলিশের দাবি, বাইরের কোনও দুষ্কৃতীরা কোনও উদ্দেশ্যে ওই এলাকায় বোমা মজুত করেছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy