শিলিগুড়ি: সেনা ছাউনিতে হবে নির্মাণ। শ্রমিকদের সঙ্গে সেখানে ঢুকছিলেন সুপারভাইজ়র। পরিচয়পত্র দেখতে চান জওয়ানেরা। মোবাইলে আধার কার্ড দেখাতে যান তিনি। তখনই এক জওয়ানের চোখে পড়ে, মোবাইলের পর্দায় রয়েছে বাংলাদেশের পরিচয়পত্র। সঙ্গে সঙ্গে চেপে ধরা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের মুখে ওই ব্যক্তি সেনার কাছে স্বীকার করেন, তিনি বাংলাদেশের নাগরিক। তবে কয়েক দশক ধরে রয়েছেন ভারতে। তাঁর কাছে এ দেশের ভোটার কার্ডও রয়েছে। এমনকি, কয়েক বার ভোটও দিয়েছেন। বিশেষ নিবিড় সংশোধনের (এসআইআর) আবহে বুধবার রাতে শিলিগুড়ির বাগডোগরার বেঙডুবি সেনা ছাউনির ওই ঘটনা আলাদা মাত্রা পেয়েছে। বিশেষত, সেনা ছাউনিতে পরিচয় লুকিয়ে ভিন্্দেশির প্রবেশের চেষ্টায় চিন্তা বেড়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, জওয়ানের নজর মোবাইলের পর্দায় না পড়লে কী হত!
জিজ্ঞাসাবাদের পরে বাংলাদেশের নাগরিক ওই ব্যক্তিকে বাগডোগরা থানার হাতে তুলে দেয় সেনা। ছাউনিতে বাংলাদেশির প্রবেশের চেষ্টা নিয়ে সেনার গোয়েন্দা বিভাগ তদন্তে নেমেছে। পুলিশ সূত্রের খবর, ধৃতের নাম নন্দ মণ্ডল। এ দেশের ভোটার পরিচয়পত্র অনুযায়ী, তিনি জলপাইগুড়ির গড়ালবাড়ি ধাপগঞ্জ কলোনির বাসিন্দা। বাংলাদেশি পরিচয়পত্র অনুযায়ী, সে দেশের মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরের বাসিন্দা তিনি।
জিজ্ঞাসাবাদে নন্দ পুলিশকে জানান, দীর্ঘদিন তিনি জলপাইগুড়িতে ভোট দিয়েছেন। ২০০২ সালের ভোটার তালিকাতেও নাম রয়েছে। ১৯৯০ সালে ওই ব্যক্তি ভারতে আসেন। জলপাইগুড়িতে বাড়ি। শ্রমিকদের সুপারভাইজ়রের কাজ করেন। কাজের সূত্রে বুধবারই প্রথম ওই সেনা ছাউনিতে যান।
সেনার ত্রিশক্তি কোরের এক আধিকারিক জানান, ধৃতের কাছ থেকে বাংলাদেশি পরিচয়পত্রের ছবি, ভারতীয় ভোটার কার্ড মিলেছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (পূর্ব) রাকেশ সিংহ। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত ব্যক্তির ভারতে আসার পরেও বাংলাদেশে আসা-যাওয়া ছিল। যদিও কোনও পাসপোর্ট তাঁর কাছে পাওয়া যায়নি। পুলিশ সূত্রের খবর, ২০১৭ সালের পরে নন্দ আর বাংলাদেশে যাননি।
বৃহস্পতিবার ধৃতকে শিলিগুড়ি আদালতের অতিরিক্ত দায়রা বিচারক তিন দিনের পুলিশি হেফাজতে পাঠান। পুলিশ জানায়, জলপাইগুড়িতে নন্দের স্ত্রী রয়েছেন। তবে তিনি ভারতীয়। আজ, শুক্রবার জলপাইগুড়িতে নন্দের বাড়িতে যাবেন তদন্তকারীরা।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)