Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ঈশ্বরচন্দ্রের সুপারিশের চিঠি অমিল

বিদ্যাসাগর লিখেছিলেন, “একটি অগ্নিস্ফুলিংঙ্গ পাঠাইলাম, দেখিও যেন বাতাসে  উড়িয়া না যায়।” বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দেবকুমার মুখোপাধ্যায় বলেন, “ওই চিঠিটি আমরা পেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগ্রহালয়ে রাখতে চাই। গবেষকদের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হবে।”

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৩:৪১
Share: Save:

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ‘সুপারিশ’ সম্বলিত কোচবিহারের রাজ প্রশাসনে মাইকেল মধুসূদন দত্তের চাকরির আবেদনের চিঠি পেতে আগ্রহী পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। যদিও সেই চিঠির এখনও কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। বিদ্যাসাগরের জন্ম দ্বিশতবর্ষ স্মরণীয় করতে ওই চিঠিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগ্রহালয়ে রাখতে চাইছেন তাঁরা। গবেষকদের একাংশ জানিয়েছেন, ১৮৬০ সালে কোচবিহারের রাজ প্রশাসনে ম্যাজিস্ট্রেট পদে চাকরির আবেদন করেছিলেন মাইকেল মধুসূদন দত্ত। ওই আবেদনের সঙ্গে রাজ প্রশাসনের উদ্দেশে নিজের লিখিত মতামত জানিয়েছিলেন বিদ্যাসাগর। সেখানে মাইকেল মধুসূদন দত্তের প্রশংসা করেছিলেন তিনি। বিদ্যাসাগর লিখেছিলেন, “একটি অগ্নিস্ফুলিংঙ্গ পাঠাইলাম, দেখিও যেন বাতাসে উড়িয়া না যায়।” বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দেবকুমার মুখোপাধ্যায় বলেন, “ওই চিঠিটি আমরা পেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগ্রহালয়ে রাখতে চাই। গবেষকদের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হবে।”

অভিযোগ, চিঠিটির কোনও হদিশ নেই। ওই চিঠিটি উদ্ধারের দাবিও জোরালো হয়েছে। গবেষকদের একাংশ জানাচ্ছেন, মহারাজা নরেন্দ্রনারায়ণের আমলে রাজ প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট পদে নিয়োগের বিজ্ঞাপন প্রকাশ হয় ‘ইংলিশম্যান’ পত্রিকায়। ওই বিজ্ঞাপনের পরিপ্রেক্ষিতে মাইকেল মধুসূদন দত্ত চাকরির আবেদন করেছিলেন। ১৮৬০ সালের ২৭ জানুয়ারি পাঠানো, ওই আবেদন পত্রে মহারাজাকে ‘মাই ডিয়ার রাজা সাহেব’ বলে সম্বোধন করেন মাইকেল। ‘মধুসূদন রচনাবলী’তে মহারাজাকে ওই সম্বোধন করে চিঠির উল্লেখ রয়েছে।

প্রবীণ ইতিহাস গবেষক নৃপেন্দ্রনাথ পাল বলেন, “মাইকেল মধুসূদন দত্তের সেই আবেদনপত্রে বিদ্যাসাগর মতামত দিয়েছিলেন। ওই চিঠি বর্তমানে কোথায় আছে তা কেউই জানেন না। কর্তৃপক্ষের, ওই ব্যাপারে অনুসন্ধান করা দরকার।” কোচবিহার হেরিটেজ সোসাইটির সম্পাদক অরূপজ্যোতি মজুমদার বলেন, “বিদ্যাসাগরের জন্ম দ্বিশতবর্ষে চিঠিটি পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগ্রহালয়ে রাখার ব্যবস্থা হলে, সেটাই হবে তাঁর প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধাঞ্জলি।”

গবেষকদের একাংশের অনুমান, বিদ্যাসাগরের সঙ্গে কোচবিহারের মহারাজার পরিচয় ছিল। গবেষক দেবব্রত চাকি বলেন, “মহারাজা নরেন্দ্রনারায়ণ কলকাতা ও কৃষ্ণনগরে পড়াশোনা করেছেন। সেই সূত্রে বিদ্যাসাগরের সঙ্গে মহারাজার পরিচয় থাকা কোনও অসম্ভব ব্যাপার নয়। মহারাজা পরিচিত ছিলেন বলেই, বিদ্যাসাগর মধুসূদনের আবেদনে সুপারিশ করেছিলেন বলে অনুমান করা হয়।” নিয়োগের আবেদনপত্রের উপরেই বিদ্যাসাগর, মধুসূদনের জন্য বাংলায় সুপারিশ করেন বলে জানা যায়। যদিও গুরুত্বপূর্ণ ওই চিঠিটির দীর্ঘদিন হদিশ পাওয়া যাচ্ছে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ishwar Chandra Vidyasagar Letter
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE