E-Paper

জঙ্গল বাঁচাতে থাকুক ন্যূনতম প্রবেশমূল্যও

যার জেরে বন দফতর রাজ্যের সমস্ত বনাঞ্চলেই ঢোকার ক্ষেত্রে প্রবেশমূল্য তুলে নিয়েছে। যা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক।

ত্রিদিবেশ তালুকদার

শেষ আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৯:২৫
ডুয়ার্সের জঙ্গল সাফারি।

ডুয়ার্সের জঙ্গল সাফারি। —ফাইল চিত্র।

কোনও বনাঞ্চলে নিয়ন্ত্রণহীন ভাবে মানুষের অবাধ চলাফেরা কাম্য নয়। তা সে কোনও অভয়ারণ্য হোক, জাতীয় উদ্যান বা ব্যাঘ্র প্রকল্প। জলবায়ু সংক্রান্ত বিপর্যয় রোধ তখনই ফলপ্রসূ হবে, যখন আমরা বনাঞ্চলকে তার নিজের মতো করে বাঁচতে দেব। যে অরণ্যে থাকবে জীব-বৈচিত্র্য, বন্যপ্রাণীদের অবাধ বিচরণও। এ ক্ষেত্রে সরকারি স্তরে সুনির্দিষ্ট একটা ব্যবস্থা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। যা বনাঞ্চল সংরক্ষণে বড় পদক্ষেপও বটে। যেটা কাম্য।

কিন্তু অতি সম্প্রতি এই আলিপুরদুয়ার শহরেই একটি প্রশাসনিক সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিছু নির্দেশ দিয়েছেন। যার জেরে বন দফতর রাজ্যের সমস্ত বনাঞ্চলেই ঢোকার ক্ষেত্রে প্রবেশমূল্য তুলে নিয়েছে। যা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। যদিও শুরুতে এই বিতর্ক রাজ্য জুড়ে, বিশেষ করে উত্তরবঙ্গের বনাঞ্চল ঘেরা এলাকায় যথেষ্ট হইচই ফেলে দিয়েছিল। এখনও যে বিতর্ক চলছে না, তা নয়। কিন্তু সময় যত এগোচ্ছে, ততই চলমান জীবনের আরও অনেক বিষয় নিয়ে বিতর্ক সামনে চলে আসায়, এই বিষয়টা যেন একটু হালকা হয়ে যাচ্ছে।

কিন্তু এমন একটা গুরুতর বিষয়কে কখনওই আলগা করে দেখলে চলবে না। বরং সরকারি ভাবে এর একটি সুনির্দিষ্ট নিয়ম চালু হওয়া প্রয়োজন। বনাঞ্চলে মানুষের যাতায়াতের ক্ষেত্রে নিয়মটা একই থাকুক। তার মানে এটা নয় যে, আগের মতোই যেমন ইচ্ছা তেমন প্রবেশমূল্য থাকবে। কারণ, জঙ্গলে সবাই শুধু বেড়াতে যান না, অনেকে জঙ্গলকে ভালবেসে, তার কোলে ছুটে যান। কিন্তু সবার জন্যই ন্যূনতম একটা প্রবেশমূল্য থাকুক। আবারও বলছি, যা খুশি তা নয়। যেটুকু প্রয়োজন। সেটা না হলে জঙ্গলকে বাঁচানোও আমাদের সবার কাছে একটা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। কারণ, এই প্রবেশমূল্য থেকে বন দফতরের যে আয় হয়, তার একটা অংশ যেমন বনাঞ্চলের রক্ষণাবেক্ষণে কাজে লাগে, তেমনই বন সুরক্ষা কমিটিতে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের এলাকা উন্নয়নেও এই অর্থ ব্যয় হয়। সেটাও অবশ্যই জরুরি। বন সুরক্ষা কমিটিতে যাঁরা রয়েছেন, তাঁরাও বনকর্মীদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বছরভর বনাঞ্চলকে রক্ষা করে চলেন। ফলে তাঁদের দিকটাও দেখতে হবে। তেমনই এই সব দিক ঠিকমতো দেখা হচ্ছে কি না, সেটাও সরকার বা প্রশাসনকে নজরে রাখতে হবে।

আসলে কারণ একটাই, বনাঞ্চল যেন রক্ষা পায়। বন্যপ্রাণীরা যাতে রক্ষা পায়। পরিবেশটা যাতে রক্ষা পায়।

সম্পাদক, আলিপুরদুয়ার নেচার ক্লাব

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Alipurduar

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy