Advertisement
E-Paper

পরপর তিনটে মেয়ে, স্বামীর তাড়া খেয়ে রীতার ঠাঁই এখন রাস্তা

বাড়ির অমতে বিয়ে করায় কোনও যোগাযোগ রাখেননি বাবা-মা ও পরিবারের অন্য সদস্যরা। আর পর পর তিন মেয়ে হওয়ার ‘অপরাধে’ মাস খানেক আগে স্বামীও ছেড়ে চলে গিয়েছে তাকে।বছর চারেকের আভা, আড়াই বছরের পূর্ণিমা ও সাত মাসের পূজাকে নিয়ে এখন খোলা আকাশের নিচে রীতা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০১৭ ০১:৪৫
দুর্গাবাড়ি হাটেই থাকতে হচ্ছে রীতাদেবীকে। ছবি: নারায়ণ দে

দুর্গাবাড়ি হাটেই থাকতে হচ্ছে রীতাদেবীকে। ছবি: নারায়ণ দে

বাড়ির অমতে বিয়ে করায় কোনও যোগাযোগ রাখেননি বাবা-মা ও পরিবারের অন্য সদস্যরা। আর পর পর তিন মেয়ে হওয়ার ‘অপরাধে’ মাস খানেক আগে স্বামীও ছেড়ে চলে গিয়েছে তাকে।

বছর চারেকের আভা, আড়াই বছরের পূর্ণিমা ও সাত মাসের পূজাকে নিয়ে এখন খোলা আকাশের নিচে রীতা। আলিপুরদুয়াররে দুর্গাবাড়ি হাট চত্বরে কনকনে ঠান্ডায় রাত কাটে ওদের। আভা, পূর্ণিমা আর পূজার জন্মের শংসাপত্র ছিড়ে ফেলেছে তাদের বাবা। তাই শিশুগুলির ভবিষৎ কী কেউ জানে না।

রীতা বিশ্বাস (পাসোয়ান) জানান, তাঁর বাপের বাড়ি আলিপুরদুয়ার জংশন এলাকায়। বাবা রেলে চাকরি করতেন। তাঁরা চার বোন ও দুই ভাই। বছর পাঁচেক আগে পরিবারের অমতে বিয়ে করেছিলেন মনতোষ বিশ্বাস নামে এক যুবককে। বিয়েতে প্রবল আপত্তি ছিল পরিবারের। বিয়ের সময় মনতোষ জানিয়েছিল তার বাড়ি ফালাকাটায়। পরিবারের লোক তাকে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করেছে বলে জানিয়েছিল সে, যা সরল মনে বিশ্বাস করেছিল রীতা।

সেই সময় মনতোষ এক ঠিকাদারের অধীনে ট্রেনের এসি কম্পার্টমেন্টে কাজ করত। বিয়ের পর সেই কাজ ছেড়ে দেয়। লটারির ব্যবসা শুরু করে ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করে। বিপত্তি বাধে এর পরেই। রীতার অভিযোগ, পর পর তিন মেয়ে হওয়ায় শুরু হয় নির্যাতন। মেয়েদের জন্মের শংসাপত্রও ছিড়ে ফেলে সে। এক সময় বাড়ি আসা বন্ধ করে দেয় মনতোষ। ভাড়া দিতে না পারায় এরপর বাড়িওয়ালাও ঘর থেকে বের করে দেয় তাদের। শ্বশুরবাড়ির ঠিকানা জানা নেই তাঁর। তিন শিশুকে নিয়ে কিছুদিন আলিপুরদুয়ার স্টেশনের প্লাটফর্মে রাত কাটায় রীতা। এখন আশ্রয় নিয়েছেন আলিপুরদুয়ার দুর্গাবাড়ির হাটখোলায়। দিন কয়েক আগে একটি বাড়িতে পরিচারিকার কাজ পেয়েছে সে। সেখান থেকে পাওয়া খাবারই এখন ভরসা রীতা ও তাঁর তিন মেয়ের। আলিপুরদুয়ার জংশন এলাকার জিৎপুরে রীতার বাপের বাড়ি। সেখানে গেলে জানানো হয় তাঁর বাবা বাইরে গিয়েছেন। রীতার বর্তমান পরিস্থিতির কথা জেনেও তাঁর দাদা স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন তাঁদের বাড়িতে আর ঠাঁই হবে না বোনের।

পরিবার মুখ ফেরালেও ঠান্ডায় ছোট ছোট তিনটি শিশুকে নিয়ে রীতাকে কষ্ট পেতে দেখে দেবর্ষি দে নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা তাদের জন্য কম্বল, মশারি ও চাদরের ব্যবস্থা করেছেন।

তৃণমূল যুব কংগ্রেসের জেলা সভাপতি সমর ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘বিষয়টি জানতে পেরেছি। ওদের একটি ঘর দেওয়ার ব্যবস্থা করব। সঙ্গে ওদের হাড়ি কড়াই সব কিনে দেব। যাতে ওরা নিজেরা রান্না করে খেতে পারে।’’

Mother bride and groom
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy