Advertisement
E-Paper

বোল্ডার নেই, বাঁধ সংস্কার সঙ্কটে

নদী থেকে বোল্ডার, বালি, পাথর তোলা বন্ধ করে দেওয়ায় সরকারি কাজের জন্য চাওয়া হলেও মজুত করা বোল্ডার দেবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন ট্রাক মালিকদের বিভিন্ন সংগঠন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০১৬ ০১:০৯
পরিদর্শনে পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব ও সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

পরিদর্শনে পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব ও সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

নদী থেকে বোল্ডার, বালি, পাথর তোলা বন্ধ করে দেওয়ায় সরকারি কাজের জন্য চাওয়া হলেও মজুত করা বোল্ডার দেবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন ট্রাক মালিকদের বিভিন্ন সংগঠন। তার জেরে বর্ষায় নদী ভাঙনে আপৎকালীন পরিস্থিতিতেও বাঁধ মেরামতির কাজ করতে গিয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে সেচ দফতরের আধিকারিক, কাজের বরাত পাওয়া ঠিকাদার সংস্থাগুলিকে।

এই পরিস্থিতিতে ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ির ডিমডিমা বস্তি এলাকায় মহানন্দা নদীতে খোলাচাঁদ ফাঁপড়ির ক্ষুদিরামপল্লি এলাকায় ভাঙন রোধের কাজ করতে বিকল্প উপায় খোঁজ করতে হচ্ছে সেচ দফতরকে। নিরুপায় হয়ে পুরনো বাঁধের অংশ থেকেও পাথর খুলে নতুন করে তারজালি দিয়ে বেঁধে নদীতে ফেলতে হচ্ছে।

বুধবার ডিমডিমা বস্তি, ক্ষুদিরামপল্লি এলাকায় ভাঙন রোধের কাজ পরিদর্শনে যান সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, এলাকার বিধায়ক তথা পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব। দফতরের আধিকারিকেরা সেচমন্ত্রীকে বোল্ডার না-মেলায় সমস্যার কথাও জানান। মঙ্গলবার নদীর জল ফুলে ফেঁপে ওঠায় বাঁধ বাঁচাতে এলাকার বাসিন্দারা বাধ্য হয়ে বড় বড় গাছ কেটে নদীতে ফেলেছেন। এ দিন সেচমন্ত্রী বলেন, ‘‘ভাঙন রোধের কাজে সেচ দফতর তৎপর। মঙ্গলবার রাত থেকেই ডিমডিমা বস্তি লাগোয়া নদী বাঁধে ভাঙন রোধের কাজ শুরু হয়েছে। যে ভাবে নদী ভাঙছে তা ভবিষ্যতে পক্ষে বিপজ্জনক। তাই এই অংশে স্থায়ী ভাবে ভাঙন রোধের কাজ হবে। গ্রিন ট্রাইব্যুনালে মামলার জেরে এই এলাকায় নদী থেকে বোল্ডার তোলা বন্ধ রয়েছে। তবে তিস্তার বাঁধের জন্য প্রচুর বোল্ডার ফেলা রয়েছে। ওই বোল্ডার আনতে নির্দেশ দিয়েছি।’’ সেই সঙ্গে তিনি জানান, বোল্ডার ছাড়া বিকল্প উপায়ও রয়েছে। বিশেষ ব্যাগে বেটমিশালি ভরে, কংক্রিটের ব্লক দিয়েও কাজ করা হয়। জেসিপি দিয়ে নদীখাত কেটে স্রোতের গতি ঘোরানো হচ্ছে। তাতে জল এখন বাঁধের সে অংশে ধাক্কা মারছে তা রক্ষা পাবে।

সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই এলাকায় অন্তত ৭০০ মিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত। নদী লাগোয়া এলাকার বাসিন্দা রাজু পাসোয়ান, মোহর সিংহ রাই, কিশোর ছেত্রীদের বাড়ি ভাঙনে বিপন্ন হয়ে পড়েছে। অনেকে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র রয়েছে। বাসিন্দারা জানান, ভাঙন পরিস্থিতিতে তারা আতঙ্কে রয়েছেন। রাত জেগে কাটাতে হচ্ছে অনেক পরিবারকে। ডিমডিমা বস্তির মাঠের একাংশ ভাঙনের কবলে।

সেচমন্ত্রী জানান, তিনি কয়েকদিন জলপাইগুড়ি, ডুয়ার্সের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ভাঙন পরিস্থিতি দেখবেন। ভাঙন পরিস্থিতি নিয়ে এ দিন সন্ধ্যায় শিলিগুড়ি সার্কিট হাউসে সেচ দফতর, প্রশাসনের আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠকে বসেন সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবও সেখানে ছিলেন।

উত্তরবঙ্গে বন্যা পরিস্থিতিতে ফসল নষ্ট থেকে, রাস্তাঘাট, বাড়ি, ঘর নষ্ট হওয়ায় প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব এবং সেচ মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। পর্যটনমন্ত্রী বলেন, ‘‘এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রের তরফে সাহায্য করা উচিত।’’ বাঁধ সারানোর জন্য বোল্ডার না মেলায় সমস্যা নিয়ে রাতে শিলিগুড়ি সার্কিট হাউসে বৈঠকেও আলোচনা হয়। শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়ির ট্রাক মালিক সংগঠনের কর্মকর্তাদের ডেকে আলোচনায় বসার কথাও হয়েছে। আজ, বৃহস্পতিবার সেচমন্ত্রী, পর্যটনমন্ত্রী, উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, আদিবাসী কল্যাণ মন্ত্রী জেমস কুজুর, শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান সৌরভ চক্রবর্তী জলপাইগুড়ি-সহ ডুয়ার্সের বিভিন্ন জায়গায় ক্ষতিগ্রস্ত নদী বাঁধের পরিস্থিতি দেখতে যাবেন।

bolder dam river
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy