Advertisement
E-Paper

বীরেনের মূর্তি কেন, প্রশ্ন তুলে তোপ অধীরের

কোচবিহার পুরসভার প্রয়াত চেয়ারম্যান বীরেন কুণ্ডুকেই ‘চৌরপতি’ ও ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ বলে অভিযোগ করলেন প্রদেশ কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি অধীর চৌধুরী। সোমবার কোচবিহারে পুরানো পোস্ট অফিস পাড়ার মাঠে নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে ওই অভিযোগ তোলেন তিনি। তাঁর মূর্তি কেন সাগরদিঘির পাড়ে বসানো হয়েছে তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অধীরবাবু।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০১৫ ০২:৩৮

কোচবিহার পুরসভার প্রয়াত চেয়ারম্যান বীরেন কুণ্ডুকেই ‘চৌরপতি’ ও ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ বলে অভিযোগ করলেন প্রদেশ কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি অধীর চৌধুরী। সোমবার কোচবিহারে পুরানো পোস্ট অফিস পাড়ার মাঠে নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে ওই অভিযোগ তোলেন তিনি।

তাঁর মূর্তি কেন সাগরদিঘির পাড়ে বসানো হয়েছে তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অধীরবাবু। ক্ষমতায় এলে কংগ্রেস ওই মূর্তি ভেঙে সরিয়ে দেবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি। তাঁর ওই বক্তব্যের পরে দলের মধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে, যে বীরেন কুণ্ডু বারো বছরের বেশি সময় ধরে কংগ্রেস দলের হয়েই পুরসভার চেয়ারম্যান পদে ছিলেন তাঁকে নিয়ে এতদিন পর কেন সরব হলেন দলীয় নেতারা।

এ দিন অধীরবাবু বলেন, “কোচবিহারে সাগরদিঘির পাড়ে রবীন্দ্রনাথের মূর্তি রয়েছে, নেতাজির মূর্তি রয়েছে, বীর চিলা রায়ের মূর্তি রয়েছে, ক্ষুদিরামের মূর্তি রয়েছে, বিধানচন্দ্র রায়ের মূর্তি রয়েছে। সেই মূর্তির পাশে তৃণমূলের বীরেন কুণ্ডুর মূর্তি বসানো হয়েছে। কে এই বীরেন কুণ্ডু? তিনি কি কোনও স্বাধীনতা সংগ্রামী? নাকি তিনি কবিতা লেখেন? তাঁর কি ভূমিকা রয়েছে?’’ এর পরেই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির মন্তব্য, ‘‘তিনি কোচবিহার পুরসভার চৌরপতি ছিলেন। তিনি পুরসভার পুরপতি হওয়ার জন্য তৃণমূলকে ম্যানেজ করেছিলেন। কেমন করে চুরি করতে হয় তা তিনি জানতেন। কেমন করে মানুষের উন্নয়নের টাকায় দুর্নীতি করে আখের গোছাতে হয় তা তিনি জানতেন। তাঁর মূর্তি নেতাজি-ক্ষুদিরামের পাশে যারা বসিয়েছেন তাঁদের কি সম্ভ্রমে লাগেনি! কোচবিহারবাসিন্দাদের কাছে এটা অত্যন্ত লজ্জার। অত্যন্ত আঘাতের। এটাই তৃণমূল।” ওই বক্তব্যের পরে তিনি বলেন, এই তৃণমূল নেতারা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধারক ও বাহক। তিনি কটাক্ষের সুরে বলেন, “দিদি ছবি আঁকেন। কবিতা লেখেন। তাঁর এই ছবি বহু টাকায় বিক্রি হয়। ওই ছবি আর কেউ কেনেন না, কেনেন সুদীপ্ত সেন। যিনি সারদা কেলেঙ্কারির নায়ক। দিদির ওই সংস্কৃতির ধারক ও বাহক এখানকার তৃণমূল।”

তঅধীরবাবুর ওই বক্তব্যের জবাব মানুষই দেবেন বলে দাবি করেছেন বীরেনবাবুর ছেলে তৃণমূল যুব কংগ্রেসের কোচবিহার জেলা সভাপতি শুভজিৎবাবু। তিনি বলেন, “তিনি যদি দুর্নীতি করেই থাকেন তা হলে তা ভোটের আগে তাঁর মৃত্যুর পরে বলা হচ্ছে কেন? উদ্দ্যেশ্যপ্রণোদিত ভাবে হেয় করার জন্য ওই কথা বলা হচ্ছে। যারা একজন প্রয়াত একজন মানুষকে নিয়ে এমন কথা বলছেন তাঁদের মানসিকতা মানুষের কাছে পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। কোচবিহারের মানুষ বাবাকে ভালবাসেন। এর জবাব তাঁরা ভোটেই দেবেন।”

কোচবিহার পুরসভায় প্রায় পনেরো বছর চেয়ারম্যান হিসেবে ক্ষমতায় ছিলেন বীরেনবাবু। প্রায় বারো বছর তিনি কংগ্রেস দলের হয়েই চেয়ারম্যান ছিলেন। ২০১৩ সালে ১১ মে বীরেনবাবু তাঁর অনুগামী কাউন্সিলরদের নিয়ে তৃণমূলে যোগ দেন। তাঁকে তৃণমূলের জেলার কার্যকরী সভাপতি করা হয়। ২০১৪ সালের অগস্ট মাসে অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হয় বীরেনবাবুর। তাঁর মৃত্যুর কয়েক মাসের মধ্যেই সাগরদিঘির পাড়ে পুরসভার অফিসের সামনে তাঁর মূর্তি বসানো হয়। তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করে।

বেশ কিছুদিন ধরেই বীরেনবাবুর বিরুদ্ধে পুরসভার উন্নয়নের টাকা নিয়ে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন বিরোধীরা। পুর ভোট সামনে আসতেই ওই প্রচার আরও বেড়ে যায়। পাল্টা তৃণমূলও বীরেনবাবুকে কর্মবীর আখ্যা দিয়ে পাল্টা প্রচার শুরু করে। কোচবিহারের তৃণমূল জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “একজন সভ্য মানুষকে এমন ভাবে অপমান করতে পারেন না অধীরবাবু। তাঁর দল প্রাসঙ্গিকতা হারিয়েছে কোচবিহারে। এবারের ভোটে মানুষ তাঁর ওই বক্তব্যের জবাব দেবে।’’

adhir chowdhuri biren kundu coochbehar municipality chairman sagardighi north bengal news municipality poll 2015
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy