দু’ঘণ্টার বেশি সময় ধরে বৈঠক করেও লাটাগুড়িতে রাস্তার দু’ধারে গাছ কাটা নিয়ে তৈরি হওয়া সমস্যার কোনও সমাধান করতে পারল না প্রশাসন৷ নিজেদের দাবিতে অনড় থেকে বনবস্তির বাসিন্দাদের একাংশ ও পরিবেশপ্রেমী সংগঠনগুলি সাফ জানিয়ে দিলেন, পরিবেশ দফতরের ছাড়পত্র ছাড়া তাঁরা কোনও অবস্থাতেই লাটাগুড়িতে গাছ কাটতে দেবেন না৷ গাছ কাটা রুখতে দরকারে আন্দোলন আরও তীব্র হবে।
লাটাগুড়িতে রেল লাইন ক্রসিং-এর ওপর উড়ালপুল তৈরির জন্য রাস্তার দু’ধারে গাছ কাটার সিদ্ধান্ত ঘিরে গত কয়েকদিন ধরেই উত্তপ্ত ওই এলাকা৷ সোমবার ওই এলাকায় দশটি গাছ কেটে ফেলা হয়৷ এরপরেই গাছ বাঁচাতে জোট বাঁধেন এলাকার মানুষ। তাঁদের বাধার মুখে পড়ে পিছু হটে বন উন্নয়ন নিগম৷
যাতে ফের সেখানে গাছ কাটা না হয় সেজন্য মঙ্গলবার থেকে এলাকায় গাছ পাহারায় নামেন পরিবেশ কর্মীরা৷ তাতে সামিল হন স্থানীয় বনবস্তির প্রচুর মানুষ। একইভাবে বুধবারেও জমায়েত করেন তাঁরা৷
এই পরিস্থিতিতে এ দিন সন্ধ্যায় বনবস্তির বাসিন্দা ও বিভিন্ন পরিবেশ প্রেমী সংগঠনের কর্মীদের নিয়ে বৈঠকের ডাক দেয় প্রশাসন৷ লাটাগুড়ির একটি রিসর্টে ওই বৈঠকে মালবাজারের বিডিও ভূষণ শেরপা ছাড়াও মালবাজার ও মেটেলি থানার পুলিশ কর্তারা হাজির ছিলেন৷ সূত্রের খবর, গাছ কাটায় যাতে বাধা দেওয়া না হয় সেজন্য বৈঠকে প্রশাসনের তরফে পরিবেশ প্রেমী সংগঠনের কর্মীদের অনুরোধ করা হয়৷ কিন্তু পরিবেশ প্রেমী সংগঠনগুলি গাছ কাটার জন্য পরিবেশ দফতরের ছাড়পত্র দেখানোর জন্য পাল্টা দাবি জানায়৷ প্রশাসনের কর্তারা তা দেখাতে না পারায় নিজেদের অবস্থানে অনড় থাকেন তাঁরা৷
একটি পরিবেশ প্রেমী সংগঠনের কর্ণধার অনির্বাণ মজুমদার বলেন, ‘‘আমরা প্রশাসনের কাছে পরিবেশ দফতরের ছাড়পত্র দেখতে চেয়েছি৷ কিন্তু ওরা তা দেখাতে পারেনি৷ তাই আমরাও গাছ কাটতে দেব না৷’’ অনির্বাণবাবুর দাবি, বৃহস্পতিবার থেকে তাঁদের আন্দোলনে আরও বেশি করে মানুষ সামিল হবেন৷
মালবাজারের বিডিও ভূষণ শেরপা বলেন, ‘‘ওখানে যাতে শান্তিপূর্ণভাবে গাছ কাটতে দেওয়া হয় সে জন্য আন্দোলনকারীদের অনুরোধ করা হয়েছে৷ বৈঠকের বিষয়টি আমরা জেলা প্রশাসনকে জানিয়ে দেব৷’’