E-Paper

বাবা-মায়ের নাম খসড়ায়, স্বস্তিতে আমির ও সুনালী

ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) শুরু হওয়ার পর থেকেই বীরভূমের পাইকর দর্জিপাড়ার বাসিন্দা, সুনালীর বাবা ভদু শেখ নিশ্চিন্ত ছিলেন। কারণ, ২০০২-এর ভোটার তালিকায় তাঁর নাম ছিল।

দয়াল সেনগুপ্ত  , অভিজিৎ সাহা

শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৬:৩৭

— প্রতীকী চিত্র।

বাংলাদেশে ‘পুশ ব্যাক’-এর পরে সেখানে জেল খেটে ফেরা মালদহের আমির শেখ কিছুটা চিন্তামুক্ত। তাঁর বাবা, সৎ মা-সহ নিকটাত্মীয়দের নাম উঠেছে খসড়া ভোটার তালিকায়। আমিরের নাম এখনও ওঠেনি। তবে পরে তাঁর ভোটার কার্ড করে দেওয়া হবে বলে প্রশাসনের আশ্বাস। একই ভাবে স্বস্তিতে বীরভূমের অন্তঃসত্ত্বা পরিযায়ী শ্রমিক ও ‘পুশ ব্যাক’ ফেরত সুনালী খাতুনও। সুনালীর বাবা-মা-ভাইয়ের নাম আছে খসড়া তালিকায়।

ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) শুরু হওয়ার পর থেকেই বীরভূমের পাইকর দর্জিপাড়ার বাসিন্দা, সুনালীর বাবা ভদু শেখ নিশ্চিন্ত ছিলেন। কারণ, ২০০২-এর ভোটার তালিকায় তাঁর নাম ছিল। নাম ছিল তাঁর স্ত্রী জ্যোৎস্না বিবির। গণনাপত্র (এনুমারেশন ফর্ম) পূরণ করার সময় ‘সেল্ফ ম্যাপিং’-এর কারণে খসড়া তালিকায় নিয়ম মেনে ভদু ও তাঁর স্ত্রীর নাম উঠেছে। বুধবার ভদুর দাবি, জমি থেকে শুরু করে সব প্রয়োজনীয় নথি তাঁর রয়েছে। বলেন, “অত লেখাপড়া জানি না। তবে আমার কাছে প্রয়োজনীয় কাগজ আছে।”

ভদুর চিন্তা ছিল, বাংলাদেশের জেলে বন্দি অন্তঃসত্ত্বা মেয়ে সুনালী, বছর আটেকের নাতি এবং জামাই দানিশ শেখকে নিয়ে। দেশের সর্বোচ্চ আদালতের কথা মেনে ‘মানবিকতার’ খাতিরে সুনালী এবং তাঁর পুত্রকে দেশে ফিরিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। তবে সুনালী ‘বাংলাদেশি’, এখনও এই অবস্থান থেকে সরেনি তারা। দানিশ ও বীরভূমের আর এক পরিযায়ী শ্রমিক সুইটি বিবি ও তাঁর দুই নাবালক সন্তান এখনও বাংলাদেশে।

‘প্রোজেনি ম্যাপিং’-এর সুবাদে (বংশতালিকা দেখিয়ে) খসড়া তালিকায় নাম উঠেছে ভদুর ছেলে সুরজ ও পুত্রবধূ সীমা বিবির। তবে মালদহের আমিরের মতোই সুনালীর ভোটার কার্ড নেই। পরিবার কিছুটা চিন্তিত তা নিয়ে। কারণ, সুনালীকে প্রমাণ করতে হবে, তিনি ভারতীয় নাগরিক। সুনালীর কথায়, “বাবা-মা-দাদা-বৌদির নাম ভোটার তালিকায় আছে দেখে স্বস্তি হচ্ছে। হয়তো আমার নামও উঠবে।”

সুনালীর ক্ষেত্রে নতুন ভোটারের আবেদনপত্র পূরণ করিয়ে ভোটার কার্ড করে দেওয়া হবে কি না, সে বিষয়ে বীরভূম জেলা প্রশাসনের কেউ মন্তব্য করতে চাননি। কারণ, সুপ্রিম কোর্টে সুনালীদের বিষয়টি বিচারাধীন। সূত্রের খবর, এখন মূল লক্ষ্য, সুনালী যেন নির্বিঘ্নে সন্তানের জন্ম দিতে পারেন। পেটে যন্ত্রণা নিয়ে সোমবার রামপুুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন সুনালী। এ দিন তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

মালদহের কালিয়াচকের জালালপুরের পরিযায়ী শ্রমিক আমির শেখকেও সুনালীর মতো অনুপ্রবেশকারী ঠাওরে ‘পুশ ব্যাক’ করা হয়েছিল বাংলাদেশে। মাস তিনেক আগে ফিরে আসার পরে, এখন টোটো চালান আমির। খসড়া তালিকায় তাঁর নাম না থাকলেও রয়েছে বাবা জিয়েম শেখ, সৎ মা সরিফা বিবি-সহ আত্মীয়দের নাম। আমিরের এলাকার বিএলও আব্দুর রইফ বলেছেন, “আমিরের পরিবারের সকলের নাম রয়েছে। আমিরের নাম ভোটার তালিকায় তোলার প্রক্রিয়া চলছে।”

আমির এ দিন বলেন, “পরিবারের সবার নাম থাকায় স্বস্তি হচ্ছে। কাজে ভিন্ রাজ্যে থাকায় ভোটার কার্ড করা হয়নি। এক মাস আগে কার্ডের জন্য আবেদন করেছি। নাম তালিকায় উঠলে নিশ্চিন্ত হওয়া যাবে।” জেলা প্রশাসনের দাবি, নতুন নাম তোলার প্রক্রিয়া শুরু হলেই আমিরের ভোটার কার্ড তৈরি হয়ে যাবে।

সহ প্রতিবেদন: রিন্টু পাঁজা

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Special Intensive Revision SIR Sunali Bibi

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy