Advertisement
E-Paper

দুই স্ত্রী খুন, আত্মঘাতী

মাংস রান্না নিয়ে বাবা-মার মধ্যে ঝগড়া হতে দেখেছিল ছ’বছরের মেয়েটি৷ দেখেছিল রাগ করে রাতের বেলায় মাকে খেতে দেয়নি বাবা৷ ঘুমিয়ে পরার পর মাঝরাতে আচমকা মায়ের চিৎকারে যখন ঘুম ভাঙে, তখন দেখেছিল মেঝের মধ্যে বাবা মায়ের গলায় দড়ি পেঁচিয়ে ধরেছে৷

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০১৭ ০২:১৬

মাংস রান্না নিয়ে বাবা-মার মধ্যে ঝগড়া হতে দেখেছিল ছ’বছরের মেয়েটি৷ দেখেছিল রাগ করে রাতের বেলায় মাকে খেতে দেয়নি বাবা৷ ঘুমিয়ে পরার পর মাঝরাতে আচমকা মায়ের চিৎকারে যখন ঘুম ভাঙে, তখন দেখেছিল মেঝের মধ্যে বাবা মায়ের গলায় দড়ি পেঁচিয়ে ধরেছে৷ তারপর মা-কে ছেড়ে বাবা যায় বড় মা-র ঘরে৷

এ টুকু দেখে মেয়েটি আবার ঘুমিয়ে পড়ে৷ সকালে ঘুম ভাঙার পর দেখে মা মেঝেতেই পড়ে৷ কোনও সাড়া না পেয়ে বাইরে বেরিয়ে দেখতে পায় বারান্দায় গলায় দড়ি পেঁচিয়ে ঝুলছে বাবা৷ কিছু বুঝতে না পেরে শিশুটি ছুটে গিয়েছিলেন পাশেই কাকুর বাড়িতে৷ ভাইঝির কাছ থেকে সব শুনে দাদার বাড়িতে গিয়ে তিনি দেখেন, দুই স্ত্রীকে খুন করে আত্মঘাতী হন অনিল রায় (৬০)। তিনি পেশায় ভ্যানচালক।

জলপাইগুড়ির ক্রান্তির পশ্চিম মাঝেরগ্রাম এলাকার বাসিন্দা অনিলবাবু মানসিক অবসাদ থেকেই এই কাণ্ড করেছেন বলে মনে করা হচ্ছে।

অনিলবাবুর প্রথম স্ত্রী অজবালা রায়(৪০)৷ জন্মের কিছু দিনের মধ্যেই তাঁদের একটি ছেলের মৃত্যু হয়৷ নার্ভের অসুখে ভুগে কয়েক বছর আগে পনেরো বছরের আরেক ছেলের মৃত্যু হয়৷ তারপর একই ভাবে কুড়ি বছর বয়সী বড় ছেলেরও মৃত্যু হয়৷ ইতিমধ্যে নার্ভের অসুখে অজবালার গোটা শরীর অসাড় হয়ে যায়৷ এই অবস্থায় বছর দুয়েক আগে সমিত্রা রায়(৪০)-কে বিয়ে করেন অনিল৷ সুমিত্রার আগেও একটি বিয়ে রয়েছে৷ এবং আগের পক্ষের মেয়ের বর্তমান বয়স ছয় বছর৷ মাস ছয়েক আগে তাঁর আরেকটি মেয়ে হয়৷

স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য মানবেন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ‘‘একে তো অসুস্থ ছেলেদের মৃত্যু নিয়ে একটা মানসিক অবসাদ ছিল অনিলের মধ্যে৷ চাপা স্বভাবের অনিল তা কখনওই বুঝতে দিতে চাইতেন না।’’

গতকাল মাংস রান্না নিয়ে আচমকাই সুমিত্রার সঙ্গে বচসা হয় তাঁর৷ ছ’বছরের মেয়েটির কথায়, ‘‘দুপুরেই বাবা মুরগি এনেছিল৷ তারপর বাড়িতে আরেকটি মুরগি কেটে সেটাও মাকে রান্না করতে বলে৷ মা রাজি না হওয়ায় বাবা রাগ করে চলে যায়৷ রাতে বাড়ি ফিরে বাবা মদ্যপানও করে৷ রাতে মা-কে খেতেও দেয়নি৷’’

পুলিশের ধারণা এরপর গভীর রাতে অনিল প্রথমে সুমিত্রাকে ও তারপর পাশের ঘরে শয্যাশায়ী অজবালাকে খুন করে৷ গলায় দড়ি দিয়ে পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করার পর মৃত্যু নিশ্চিত করতে দা দিয়ে দুজনের বুকের কাছে কোপ দেয় সে৷ তারপর নিজেও গলায় দড়ি দেয়। মালবাজারের এসডিপিও দেবাশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘দুই স্ত্রীকে খুন করে ওই ব্যাক্তি আত্মঘাতী হয়েছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে৷’’

Husband Wife Suicide
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy