ঘটনা-১। রাত ১০টায় যান্ত্রিক গোলযোগে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেল চাঁচল শহরের একাংশে। রাত থেকে সকাল পর্যন্ত বহরমপুরে টোল ফ্রি নম্বরে ও চাঁচলে দফতরের ফোন বেজে গেলেও ধরলেন না কেউ। সকালে দফতরে গিয়ে চাপাচাপি করায় এক কর্মী অভিযোগ নিয়ে জানালেন, সকাল ১০টায় কর্মীরা আসলে বের হবেন। ১২ ঘণ্টা বাদে স্বাভাবিক হল সরবরাহ।
ঘটনা-২। সন্ধেয় ৮১ নম্বর জাতীয় সড়কের উপরে শহরের মধ্যে ছিঁড়ে পড়েছে হাই টেনশন তার। বাসিন্দারা বিদ্যুৎ সরবরাহ দফতরে বারবার টেলিফোন করলেও কেউ তা ধরলেন না। বাসিন্দারাই এর পর ছিঁড়ে পড়া তারের দু’দিকে বেঞ্চ পেতে যানবাহন আটকানোর ব্যবস্থা করলেন। পরে এক জন দফতরে গিয়ে খবর দিলেন। দেড়শো মিটার দূরের দফতর থেকে কর্মীরা যখন পৌঁছলেন তখন জাতীয় সড়কের দু’দিকে কয়েকশো ছোটবড় যানবাহন দাঁড়িয়ে পড়েছে।
মালদহের চাঁচলে ওই ঘটনা দু’টি বিচ্ছিন্ন কোনও ঘটনা নয়। কেন না রাতের শিফট না থাকায় ১০টার পর বিদ্যুৎ বিভ্রাট হলে পর দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় থাকে না। ফলে গ্রাহকদের নিত্য ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বলে অভিযোগ। পাশাপাশি বিদ্যুৎ বিভ্রাট হলে অভিযোগ জানাতে হয় বহরমপুরে। কিন্তু সেখানে ফোন করে অধিকাংশ সময়েই সাড়া যেমন মেলে না, তেমনই জরুরই ক্ষেত্রে চাঁচলে ফোন করেও কোনও সাড়া মেলে না বলে অভিযোগ গ্রাহকদের। এই পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির ভূমিকায় সর্বস্তরে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি মহকুমা সদরে কেন রাতের শিফট চালু করা হচ্ছে না সে প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে।
চাঁচলের মহকুমাশাসক পোন্নমবলম এস বলেন, ‘‘রাতের শিফট না থাকার বিষয়টি আমার জানা নেই। তা ছাড়া কেউ জরুরি প্রয়োজনে দফতরে ফোন করতেই পারেন। কেউ তা ধরবেন না কেন? আমি দফতরের ডিভিশনাল ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলে কী ভাবে সমস্যা মেটে তা দেখছি।’’ বিদ্যুত বণ্টন কোম্পানির উত্তর মালদহের ডিভিশনাল ম্যানেজার অমিয় আদক বলেন, ‘‘মহকুমা শহর হলেও চাঁচল গ্রামীণ এলাকা হওয়ায় রাতের শিফট নেই। তবুও যাতে সমস্যা মেটে তা দেখছি।’’ পাশাপাশি বহরমপুরে টোল ফ্রি নম্বরে ফোন করে অভিযোগ জানাতে গ্রাহকদের সমস্যার পাশাপাশি চাঁচলে টেলিফোন না ধরার অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘গ্রাহকদের যাতে সমস্যায় না পড়তে হয় তাও দেখছি।’’
গ্রাহকদের অভিযোগ, লোডশেডিং নিয়মিত হয়ে দাঁড়ানোয় গরমে বাসিন্দাদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। এ ছাড়া ঝড়-বৃষ্টি হলে তো কথাই নেই। সামান্য হাওয়া উঠলেই চাঁচলে লোডশেডিং হয়ে যায়। পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট প্রায় নিয়মিত হয়ে দাঁড়িয়েছে! আর তা বেশিরভাগ হচ্ছে রাতের দিকে! আর রাতের শিফট না থাকায় রাত ১০টার পর বিভ্রাট হলে তা পরদিন সকাল ১০টার আগে ঠিক হয় না! আর অন্য সময়েও বিদ্যুত বিভ্রাট হলে অভিযোগ জানাতেই নাভিশ্বাস উঠে যায়! বহরমপুরে টোল ফ্রি নম্বরে ফোন না ধরার বিষয়টি নিয়ে যে বহু গ্রাহকের অভিযোগ রয়েছে তা অবশ্য অস্বীকার করেননি দফতরের কর্মীরা! কিন্তু জরুরি ক্ষেত্রে কেন চাঁচলেও ফোন ধরেননা তারা!
দফতরের কয়েকজন কর্মীর যুক্তি, বহরমপুরে অভিযোগ জানানোর পর সেখান থেকে তা চাঁচলে জানানো হয়। সেই তালিকা ধরেই কাজ করা হয়। ফলে তাঁদের ফোন ধরা না ধরায় কিছু যায় আসে না।
কিন্তু টাকা দিয়ে পরিষেবা কিনে তো যায় আসে গ্রাহকদের। শহরের বাসিন্দা পীযূষ দাস, আব্দুর রশিদরা তাই বলেন, ‘‘সময়ে বিল জমা না দিলে ফাইন দিতে হয়, সংযোগ কেটে দেওয়ার দেওয়া হয়। ফলে পরিষেবার বিষয়টিও তো ওদের গুরুত্ব দিয়ে ভাবতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy