অবস্থান বিক্ষোভ চাকরি প্রার্থীদের।—নিজস্ব চিত্র।
সাত বছর আগে ফর্ম তুলেছিলেন। পরীক্ষা দিয়েছিলেন চার বছর আগে। অথচ আজ পর্যন্ত একজনও প্রাথমিক চাকরি পাননি। দ্রুত চাকরির দাবিতে দু’দিন ধরে প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের কার্যালয়ে ঢোকার মুখে অবস্থান বিক্ষোভে বসেছেন ২০০৯ সালে পরীক্ষার জন্য ফর্ম পূরণ করা চাকরীপ্রার্থীদের একাংশ।
সোমবার সকাল ১১টা থেকে শুরু হয়েছে কর্মসূচি। মঙ্গলবারও সকাল থেকেই অবস্থান হয়। ফলে সংসদের কার্যালয়ে ঢুকতে পারেননি কর্মীরা। দুপুর পর্যন্ত তাঁরা কার্যালয়ের বাইরেই দাঁড়িয়ে থেকে দু’টো নাগাদ বাড়ি ফিরে যান। চাকরিপ্রার্থীদের দাবি, যতক্ষণ না তাঁদের নিয়োগের নির্দিষ্ট তারিখ দেওয়া হচ্ছে তাঁরা অবস্থান চালিয়ে যাবেন। সব জেলায় নিয়োগ অনেক দিন আগে হয়ে গেলেও শিলিগুড়িতে হয়নি। বিষয়টি নিয়ে কিছু দিন আগে তাঁরা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবেরও দ্বারস্থ হয়েছিলেন। তিনি দ্রুত পদক্ষেপের আশ্বাস দিলেও সমস্যা সমাধান হয়নি বলে জানান প্রার্থীরা।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী জানান, বিষয়টি শিক্ষা দফতরের অধীন। তবুও তাঁর কাছে প্রাথমিক স্কুলের চাকরিপ্রার্থীরা এসেছিলেন। তিনি তাঁদের হয়ে শিক্ষা দফতরের সঙ্গে কথা বলেছেন। গৌতমবাবু বলেন, ‘‘যতদূর জানি বিষয়টি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। দ্রুত নিয়োগ হবে। এর পরেও যদি ওঁরা অবস্থান করেন, তবে আমাদের কিছু করার নেই।’’ পদ্ধতিগত কোনও জটিলতায় নিয়োগ আটকে রয়েছে বলে মন্ত্রী জানিয়েছেন। এ দিন শিলিগুড়ি প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান মুকুলকান্তি ঘোষ অসুস্থ বলে কর্মীদের জানান। মুকুলবাবুর মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা যায়নি।
প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৯ সালে প্রাথমিক শিক্ষক পদে চাকরির আবেদন করেন প্রায় ১১০০ পরীক্ষার্থী। জানা গিয়েছে, ১৭০টি শূন্যপদ রয়েছে। তার মধ্যে জমিহারাদের জন্য সংরক্ষিত রয়েছে ২৭টি আসন। ২০০৯-এ বিজ্ঞপ্তি ও আবেদন করা হলেও পরীক্ষা হয় ২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর। কিন্তু ২০১৬-তেও নিয়োগ সম্পর্কে চেয়ারম্যান তথ্য জানাতে পারছেন না বলে অভিযোগ চাকরিপ্রার্থীদের।
অবস্থানরত প্রার্থী চম্পাসারির বাসিন্দা খোকন বিশ্বাসের অভিযোগ, ‘‘চেয়ারম্যানকে বারবার জিজ্ঞাসা করা হলেও তিনি দ্রুত নিয়োগ হবে বলে জানান। কিন্তু এত দিন পরেও কেন নিয়োগ হচ্ছে না, তার সদুত্তর দিতে পারেননি।’’ আর এক চাকরিপ্রার্থী অভিজিৎ বিশ্বাসের দাবি, ‘‘আমরা দু’দিন ধরে অবস্থান করলেও কোনও সরকারি পদাধিকারি বা তাঁদের প্রতিনিধি আমাদের সঙ্গে দেখা করতে আসেননি। আমাদের দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে। আন্দোলন চালিয়ে যাব।’’ ফাঁসিদেওয়ার নজরুল ইসলামের বক্তব্য, ‘‘আমাদের জমি সরকারি কাজে অধিগ্রহণ করা হয়েছে। আমার মতো ১০০ জন চাকরিপ্রার্থী রয়েছেন। অন্তত ২৭ জনের চাকরি হবে বলে জানি। কিন্তু এক জনেরও হয়নি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy