হোম-স্টের হেল্পডেস্ক বাগডোগরায়। নিজস্ব চিত্র
পর্যটকদের পছন্দের তালিকায় বরাবর প্রথমে থেকেছে উত্তরবঙ্গ। এখানকার জঙ্গল, পাহাড় ঘেরা অসংখ্য হোটেল, রিসর্ট অত্যন্ত জনপ্রিয়। বেশ কিছুদিন ধরেই সেই জনপ্রিয়তায় ভাগ বসিয়েছে হোম-স্টে। সরকারের তরফেও হোম-স্টের প্রসার নিয়ে প্রচার করা হয়েছে। এ বার হোম-স্টের প্রচারে সামিল এয়ারপোর্ট অথারিটি অব ইন্ডিয়া’ও (এএআই)। আগামী ১০ দিন উত্তরবঙ্গে ভরা পর্যটন মরসুম। বিমানে বাগডোগরা নামলেই খোঁজ মিলবে উত্তরের নানা হোমস্টে’র।
সেখানে পর্যটকদের জন্য শুধু হাল হদিশই নয়, প্রয়োজনে বুকিং-এর ব্যবস্থাও রয়েছে। গত রবিবার থেকে শুরু ওই পরিষেবা চালু থাকছে ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত। একটি বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে যাত্রীদের জন্য এই ব্যবস্থা করেছে এএআই কর্তৃপক্ষ।
বিমানবন্দরের নেমে টার্মিনাল ভবনে ঢুকে লাগেজের জন্য কনভেয়ার বেল্টের কাছে যেতেই দেখা মিলবে ‘হোমস্টে ডেক্স’-এর। সেখানে রয়েছেন ৩-৪ জন তরুণী-তরুণী। তাঁদের কাছেই মিলবে হোমস্টে-র নানা তথ্য। থাকছে নানা ব্রোসিওর। সেগুলো দেখার পরে কারও কোনও এলাকা পছন্দ হলে সঙ্গে সঙ্গে ল্যাপটপ, ইন্টারনেটের মাধ্যমে অনলাইন বুকিংও করা হচ্ছে। বড়দিন থেকে নতুন বছর পর্যন্ত যাত্রী ও পর্যটকদের কথা মাথায় রেখে ডেক্স চালু হয়েছে বলে জানান কর্তৃপক্ষ।
অফিসারেরা জানান, গোটা বিষয়টিই পরীক্ষামূলকভাবে হচ্ছে। বিমানে আসা পর্যটকদের মধ্যে ৯০ শতাংশেরই আগাম বুকিং থাকে। বাকি দশ শতাংশের জন্য এই ব্যবস্থায় সুবিধে হবে বলে তাঁদের মত। আবার অনেক ক্ষেত্রে আগাম বুকিং করা পর্যটকরাও ছুটির মধ্যে গন্তব্য অদলবদল করেন। হোম-স্টে ডেক্স তাঁদেরও বাড়তি পাওনা হিসাবে থাকবে। কোনও এলাকার থাকার দিন কমিয়ে, বাছাই করা হোম-স্টে ভাড়া নিয়ে থেকে যাওয়ার কথা ভাবতেই পারবেন কেউ কেউ। এমনটাই আশা উদ্যোক্তাদের।
বিমানবন্দর অধিকর্তা রাকেশ সহায় বলেন, ‘‘দার্জিলিংয়ের চা থেকে পর্যটন, স্থানীয় স্বাদ ও উৎকর্ষতার সঙ্গে আমরাও জড়িয়ে থাকার চেষ্টা করছি। চায়ের স্টলও হয়েছে। এ বার হোম-স্টে।’’
উত্তরবঙ্গের ডুয়ার্স, তরাই, পাহাড়, সিকিম মিলিয়ে কয়েক হাজার হোম-স্টে তৈরি হয়েছে। কিন্তু ব্যাঙের ছাতার মত গজিয়ে ওঠা হোম-স্টেগুলোর মান, পরিকাঠামো নিয়ে অনেক সময়ই প্রশ্ন ওঠে। কেন্দ্রের পর্যটন মন্ত্রকের ‘ব্রেড অ্যান্ড বাটার’ প্রকল্প ছাড়াও রাজ্যের নিজস্ব হোম-স্টে নীতি তৈরি হয়েছে। সেখানে ঘরের আয়তন, স্থানীয় খাবার, সরঞ্জাম, প্রশিক্ষণের মত বিষয়গুলো মানার পরে সরকারি অনুমোদন দিয়ে তালিকাভুক্ত করা হচ্ছে হোমস্টেগুলোকে। জলদাপাড়া, মূর্তি, কালিম্পং, চুইখিম, চিমণি, জয়ন্তী, দমনপুর, লাটপাঞ্চোর, মিরিক, রায়মাটাং, সামসিং, তাকদা, বরা-ছোটা মঙ্গয়া, সিলারিগাংও, আলগাড়া, গরুবাথান বা দার্জিলিঙে অপূর্ব সুন্দর প্রাকৃতিক পরিবেশে হোমস্টে রয়েছে। পুজো বা পর্যটন মরসুমে সেগুলোতে জায়গা পাওয়াই যায় না।
পর্যটন ব্যবসায়ীরা অবশ্য জানিয়েছেন, হোম-স্টেগুলো তৈরি হলেও সারা বছর সেগুলোতে হোটেল বা রিসর্টের মত লোক আসে না। মরশুমের ক’দিন মাত্র সেখানে ভিড় হয়। নানাভাবে, নানা মাধ্যমে প্রচার ও প্রসারের মাধ্যমে এর পরিবর্তন প্রয়োজন। সেখানে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy