Advertisement
E-Paper

নামেই বিভ্রাট

দু’জনের সদ্যোজাত সন্তানই ভর্তি ছিল রায়গঞ্জ হাসপাতালের এসএনসিইউ-তে। একটি শিশুর মৃত্যু হয় রবিবার রাতে। অভিযোগ, সেই মৃতদেহ তুলে দেওয়া হয় অন্য জনের হাতে।

সৌমিত্র কুণ্ডু

শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০১৮ ০২:২২
সাবানার সন্তানের মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন তাঁর পরিজনেরা। নিজস্ব চিত্র

সাবানার সন্তানের মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন তাঁর পরিজনেরা। নিজস্ব চিত্র

এক জনের নাম সাবিনা খাতুন, অন্য জনের নাম সাবানা খাতুন। দু’জনের সদ্যোজাত সন্তানই ভর্তি ছিল রায়গঞ্জ হাসপাতালের এসএনসিইউ-তে। একটি শিশুর মৃত্যু হয় রবিবার রাতে। অভিযোগ, সেই মৃতদেহ তুলে দেওয়া হয় অন্য জনের হাতে। পরে অবশ্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ভুল বুঝতে পারে। কিন্তু এর মধ্যে এই বিভ্রাট নিয়ে তোলপাড় হয়ে যায় গোটা হাসপাতাল। ঘটনার জেরে তিন জন নার্সকে শো কজ করা হয়েছে। কী ভাবে, কোথায় গাফিলতি, তা খতিয়ে দেখছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

মায়ের নাম প্রায় একই হওয়ায় বিপত্তি বলে দাবি কর্তৃপক্ষের। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, অসুস্থ অবস্থায় বিহারের ঘরাটিয়ার বাসিন্দা সাবানা খাতুন এবং করণদিঘির বুড়িহানের সাবিনা খাতুনের দুই সদ্যোজাত সন্তানকে রায়গঞ্জ হাসপাতালে এসএনসিইউ-তে ভর্তি করানো হয়। সাবানা এবং সাবিনাও হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। অভিযোগ, গত ৮ জুন, শুক্রবার বেলা ৪টা নাগাদ সাবানার শিশু মারা গেলেও পরিবারের লোকেরা কিছু জানতেন না। তাঁর মৃত সন্তানকে ততক্ষণে তুলে দেওয়া হয়েছে সাবিনার পরিবারের হাতে। তাঁরা মৃত শিশুটিকে নিয়ে চলে যান। শিশুটিকে কবরও দেন।

রবিবার এসএনসিইউতে সাবানার পরিবার সদ্যোজাতের খোঁজ করতে গেলে টনক নড়ে কর্তৃপক্ষের। সাবানার পরিবারকে জানানো হয়, তাঁর শিশু মারা গিয়েছে। পরিবারের লোককে দিয়েও দেওয়া হয়েছে। এর পরেই রাতে সাবানার স্বামী মহম্মদ আনোয়ারের দাদা আনসার আলম রায়গঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশও ঘটনার তদন্তে নেমে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতির খোঁজ পায়। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রকাশ মৃধা বলেন, ‘‘দায়িত্বে থাকা নার্সদের শো কজ করতে বলা হয়েছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাঁরা উত্তর দিলে পরবর্তী পদক্ষেপ জানানো হবে।’’

দু’-এক দিনের শিশুকে মুখ দেখে চেনা যায় না। তাই এসএনসিইউ থেকে মৃত সদ্যোজাতের দেহ দেওয়ার ক্ষেত্রে মা এবং বাবার নাম, ঠিকানা মেলানোর কথা। রোগী পরিবারের ফোন নম্বরও সেখানে দেওয়া থাকে। কত নম্বর শয্যায় শিশু রয়েছে, তা-ও মেলানো হয়। কিন্তু কোনও কিছুই দেখা হয়নি বলে অভিযোগ। নার্সদের একাংশের দাবি, ‘সাবানার পরিবারের কে আছে’ ডাকলে ভুল শুনে সাবিনার লোকেরা গিয়েছিলেন। সাবিনা বলেন, ‘‘শিশু মারা গিয়েছে জানালে আর মুখ দেখিনি।’’ হাসপাতালের সুপার গৌতম মণ্ডল বলেন, ‘‘গন্ডগোল তো একটা হয়েছেই।’’

অন্য দিকে, সাবানার ভাশুর আনসার আলম বলেন, ‘‘অভিযুক্তদের শাস্তি চাই।’’ তাঁরা একই সঙ্গে সাবানার মৃত সন্তানকে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ারও দাবি তুলেছেন। পরিবারের আরও দাবি, বারবার বলা সত্ত্বেও শিশুকে দেখতে দেওয়া হয়নি। তার পরে এই খবর!

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য তাঁদের ভুল স্বীকার করে সাবানার পরিবারকে বোঝানোর চেষ্টা করছেন। সাবানা বর্তমানে হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে ভর্তি। সন্তান মারা যাওয়ার খবর তিনি এ দিনও জানেন না।

Medical Negligenc Raiganj Hospital রায়গঞ্জ হাসপাতাল
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy