Advertisement
E-Paper

ব্লাডব্যাঙ্কে দালাল চক্রের দাপটে উদ্বেগ

কোচবিহার জেলা সদর হাসপাতাল চত্বরে রক্ত বিক্রির দালাল চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। দিনের বেলায় তো বটেই, রাতেও ওই চক্রের রমরমা কারবার চলছে। পরিস্থিতি অনুযায়ী রোগীর পরিজনদের কাছে দুই থেকে পাঁচ হাজার টাকায় এক ইউনিট রক্ত বিক্রি করা হচ্ছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০১৬ ০১:৩৮

কোচবিহার জেলা সদর হাসপাতাল চত্বরে রক্ত বিক্রির দালাল চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। দিনের বেলায় তো বটেই, রাতেও ওই চক্রের রমরমা কারবার চলছে। পরিস্থিতি অনুযায়ী রোগীর পরিজনদের কাছে দুই থেকে পাঁচ হাজার টাকায় এক ইউনিট রক্ত বিক্রি করা হচ্ছে।

বুধবার এরই প্রতিবাদে সরব হন স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের একটি সংগঠনের সদস্যরা। কোচবিহার ব্লাড ডোনার অর্গানাইজেশন নামে ওই সংগঠনের তরফে এ দিন জেলা হাসপাতাল চত্বরে দালাল চক্রের বিরোধিতায় স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ দেখানো হয়।

দালালদের দৌরাত্ম্য বন্ধের দাবিতে হাসপাতালের সুপারকে একটি স্মারকলিপিও দিয়েছেন তাঁরা। জানানো হয়েছে জেলা প্রশাসনকেও। কোচবিহার জেলা সদর হাসপাতালের সুপার জয়দেব বর্মন বলেন, “সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেইসঙ্গে হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্ক ও বর্হিবিভাগের সামনে সিসিটিভি লাগানোর পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে।”

ওই সংগঠনের নেতৃত্বের অভিযোগ, কোচবিহার জেলা হাসপাতালে রক্ত বিক্রির দালাল চক্র রীতিমতো সংগঠিতভাবে কাজ করছে। সন্ধ্যের পর তাদের একাংশ হাসপাতালের একটি ঘরে বসে সময় কাটাচ্ছেন, সেখানে বসে দরদাম করছেন। চাহিদা মত রক্তের ব্যবস্থা করে দেওয়ার বদলে রোগীর পরিজনদের থেকে মোটা টাকা নেওয়া হচ্ছে। অথচ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ওই ব্যাপারে হেলদোলই নেই। যার জেরেই এই কারবারীদের সাহস বেড়েছে। কোচবিহার ব্লাড ডোনার অর্গানাইজেশনের সম্পাদক রাজা বৈদ বলেন, “একে হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্ক দিনরাত ২৪ ঘন্টা খোলা থাকে না, তার ওপর মাঝেমধ্যে রক্তদানের ডোনার কার্ড দেখিয়েও রক্ত মেলে না। সবাই রক্তদাতাও আনতে পারেন না। সেই সুযোগ নিচ্ছে দালালরা। রক্ত বিক্রির ওই কারবার বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়া না হলে আন্দোলন হবে।”

কিভাবে দালালদের ওই কারবার চলে ?

ভুক্তভোগীদের একাংশ জানাচ্ছেন, ব্ল্যাডব্যাঙ্কে যাতায়াতের মুখে বর্হিবিভাগের গেটে দিনের বেলায় চক্রের লোকজন পালা করে থাকেন। সন্ধ্যের পর অন্তর্বিভাগ লাগোয়া চত্বর থেকে হাসপাতালের ঘরে চক্রের পান্ডাদের অবাধ ঘোরাঘুরি চলে। রক্তের খোঁজ করতে যাওয়া রোগীর পরিজনদের সঙ্গে নিজেরাই নানা ছুতোয় আলাপ জমিয়ে নেন। হাসপাতালে ওই গ্রুপের রক্ত পাওয়া মুশকিল জানিয়ে শুরু থেকে কেনার বার্তা দিয়ে রাখেন।

ব্লাডব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ নির্দিষ্ট গ্রুপের রক্ত নেই জানিয়ে দিলেও শুরু হয়ে যায় দরদাম। কোচবিহারের বাসিন্দা দেবব্রত সেন বলেন, “রাত দশটা নাগাদ নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন আত্মীয়ার জন্য রক্ত সংগ্রহ করতে গিয়ে বিস্তর হ্যাপা পোহাতে হয়। আমাকে অপরিচিত একজন টাকার বিনিময়ে রক্তের ব্যবস্থা করবেন বলে জানান। তাতে রাজি না হওয়ায় অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে ডোনার কার্ড দিয়ে রক্ত জোগাড় করতে হয়।” কোচবিহার নাগরিক অধিকার সুরক্ষা মঞ্চের সভাপতি রাজু রায় বলেন, “ওই ব্যাপারে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ ও সচেতনতা বাড়ানো দরকার।”

হাসপাতাল সূত্রের খবর, দৈনিক গড়ে ৫০ ইউনিটের বেশি রক্তের চাহিদা রয়েছে। দিনের বেলা ব্ল্যাডব্যাঙ্ক খোলা থাকে। কর্মীরা থাকেন। সন্ধ্যে ৬টার পর ‘অনকল’ চালু রাখা হয়। হাসপাতালের এক কর্তা জানান, পর্যাপ্ত কর্মী না থাকায় দুই শিফটে কর্মীদের রেখে ব্লাডব্যাঙ্ক খোলা রাখা যাচ্ছে না। কর্মী সমস্যা মিটলে সেটা চালু করা হবে।

Brokery Blood bank
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy