মহাষষ্ঠীর রাতে শিলিগুড়ির মেয়ের অশোক ভট্টাচার্যের বাড়ির দরজায় চেন লাগিয়ে তালা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। শনিবার ভোরে বাড়ি থেকে বেরোনোর মুখে তা দেখে স্তম্ভিত মেয়র। শিলিগুড়ি থানার পুলিশ যায়। সিপিএমের কর্মীরা যান। পুলিশের সামনেই তালা ভেঙে দেওয়া হয়। অশোকবাবুর স্ত্রী পুলিশে একটি অভিযোগ জানিয়েছেন।
সিপিএমের অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে। সম্প্রতি, একটি দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত এক শিশুকে চিকিৎসার খরচ কেন দেওয়া হয়নি, তা নিয়ে তৃণমূলের কর্মীরা মেয়রে দফতরে ঢুকে তাঁকে হেনস্থা করেন বলে অভিযোগ উঠেছিল। পর্যটনমন্ত্রী তথা তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি গৌতম দেব অবশ্য পরিষ্কার বলেন, ‘‘এ সব নিকৃষ্ট, সংকীর্ণ রাজনীতি আমাদের সংস্কৃতি নয়। তা নিয়ে কিছু বলারও নেই।’’ শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার চেলিং সিমিক লেপচা জানিয়েছেন, তদন্ত শুরু হয়েছে।
মেয়রের প্রতিক্রিয়া, এত বছর শিলিগুড়িতে রয়েছেন, কখনও এমন কিছু ঘটেনি। তাঁর দাবি, ‘‘এমন অসভ্যতা অকল্পনীয়। গভীর রাতে আমার বাড়ির বিদ্যুৎ লাইন যে ফেজের সঙ্গে যুক্ত, সেটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। তার পর গেটে চেন লাগিয়ে তালা দেওয়া হয়েছে। পরিকল্পিত ভাবেই এটা করা হয়েছে।’’
পরিবারের লোকেরাও এ ধরনের ঘটনায় হতবাক। এই বাড়িতেই অশোকবাবু ও তাঁর ভাইদের পরিবারও থাকেন। বাড়ির সামনে একটি লোহার দরজা রয়েছে। সেটি পেরোলে ছোট উঠোন। তারপরে ঘর। এই লোহার দরজাটি দিয়েই সকলে যাতায়াত করেন। তাতে চেন দিয়ে একটি তালা বাড়ির লোক এমনিতেই রোজ লাগিয়ে রাখেন। তার দু’টি চাবি রয়েছে। একটি অশোকবাবুর কাছে। আর একটি তাঁর ভাইয়ের পরিবারের কাছে থাকে। শুক্রবার রাতে সেই তালা লাগিয়েছিলেন অশোকবাবুর ভাইপো অর্কবাবু। মেয়র সে রাতে ন’টা নাগাদই ফিরে আসেন। দেড়টা নাগাদ ফেরেন অর্কবাবু। তিনি তালা দিয়ে তাঁদের ঘরে চলে যান। সকাল পৌনে সাতটা নাগাদ বাড়ি থেকে বেরোনোর অশোকবাবু দেখেন আরেকটি নতুন তালা কেউ চেন দিয়ে লাগিয়ে দিয়েছে। অশোকবাবু প্রথমে ভেবেছিলেন, পরিবারেরই অন্য কেউ নতুন তালা লাগিয়েছেন। কিন্তু সবাই ওঠার পরে বুঝতে পারেন, বাড়ির কেউ তালা দেয়নি।
তারপরেই মেয়রের ধারণা হয়, তাঁকে বিপদে ফেলতে কেউ এমন কাজ করেছে।
অশোকবাবুর বাড়ি যে এলাকায় সেটি ২০ নম্বর ওয়ার্ড। এলাকার কাউন্সিলর রঞ্জন সরকার পুরসভার বিরোধী দলনেতা। তাঁর পাল্টা দাবি, এ ধরনের ঘটনার সঙ্গে তাদের কেউ কোনও ভাবেই যুক্ত নয়। তিনি বলেন, ‘‘এ সব করে মেয়র নাটক করছেন। তিনি খবরের শিরনামে থাকতে চাইছেন। অন্য কোনও বিষয় নেই।’’ সিপিএমের দার্জিলিং জেলা সম্পাদক জীবেশ সরকারের অবশ্য দাবি, যাঁরা বারবার মেয়রকে হেনস্থা করছেন, এটা তাঁদেরই কাজ।