Advertisement
E-Paper

দোকান খুলল, স্বস্তি কর্মীদের

রাজ্য সড়ক থেকে জেলা সড়কে পরিবর্তিত হওয়ায় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ থেকে বাঁচল বেশ কিছু মদের দোকান ও পানশালা। তবে উত্তরের জাতীয় সড়কের পাঁচশো মিটারের মধ্যে যে মদের দোকান রয়েছে, সেগুলো বন্ধই রয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০১৭ ০২:৩০
রাস্তা-বদল: আলিপুরদুয়ারের এই রাস্তাই হারাবে রাজ্য সড়কের তকমা। নিজস্ব চিত্র

রাস্তা-বদল: আলিপুরদুয়ারের এই রাস্তাই হারাবে রাজ্য সড়কের তকমা। নিজস্ব চিত্র

রাজ্য সড়ক থেকে জেলা সড়কে পরিবর্তিত হওয়ায় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ থেকে বাঁচল বেশ কিছু মদের দোকান ও পানশালা। তবে উত্তরের জাতীয় সড়কের পাঁচশো মিটারের মধ্যে যে মদের দোকান রয়েছে, সেগুলো বন্ধই রয়েছে।

দোকান খোলায় কর্মচারীরা খুশি। আলিপুরদুয়ার শহরের বক্সা ফিডার রোডের ওই রাস্তায় রয়েছে চারটি বিলেতি মদের দোকান ও একটি বার। একটি হোটেল মাইল সুদীপ্ত বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর তাঁর হোটেল বার ও বাইরে থাকে বিলেতি মদের দোকান বন্ধ করে দিয়েছিলেন এতে বার ও ওই দোকানের মোট চব্বিশ জন কর্মীকে নিয়ে চিন্তায় পড়েছিলেন। এক কর্মী মিথিলেশ শাহ বলেন, ‘‘ফের বার খোলায় আমরা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছি।’’ মদের দোকান সংগঠনের তরফে জানা গিয়েছে শহরের ওই রাস্তায় চারটি দোকান মিলিয়ে প্রায় চল্লিশ জন কর্মী রয়েছে। শহরের এক ছোলা বিক্রেতা গোপাল শাহ জানান মদের দোকানগুলির পাশে ছোলা বাদাম ভাজা বিক্রি করতেন। তিন দিন ব্যবসা মার খেয়েছে।

আবার এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদও হয়েছে। ঘটনার প্রতিবাদ করেছেন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্য ল্যারি বসু তিনি জানান, সুপ্রিম কোর্টের রায় না মানার জন্য এই রাস্তাগুলোর চরিত্র বদল করা হয়েছে। যেখানে সুপ্রিম কোর্টের রায় ছিল জনস্বার্থে। তাঁর দাবি, ‘‘সেখানে মদের দোকানদারদের সুবিধে পাইয়ে দেওয়ার জন্য এই ব্যবস্থা করেছে রাজ্য সরকার।’’

রায়গঞ্জের কুমারডাঙ্গি এলাকার বাসিন্দা পেশায় প্রাথমিক স্কুল শিক্ষক গুলজার হোসেনও বলেন, ‘‘যতটুকু জানি জাতীয় ও রাজ্য সড়কে মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানোর জেরে পথ দুর্ঘটনা রুখতে সুপ্রিম কোর্ট ওই দুই সড়ক থেকে ৫০০ মিটারের মধ্যে সমস্ত মদের দোকান বা পানশালা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল।’’ তাঁর দাবি, ‘‘রাজ্য সরকার ঘুরপথে আইন প্রয়োগ করে পুর এলাকার রাজ্য সড়ককে পুর সড়ক হিসেবে বদল করে মদের দোকান ও পানশালাগুলি খোলার ব্যবস্থা করল। ফলে রাজ্য সড়কে পথ দুর্ঘটনা কমবে বলে আমার মনে হয় না।’’

সড়ক বদল

মালদহ

•পুরাতন মালদহ পুরসভা: সদরঘাট ০.৩৫ কিমি

দক্ষিণ দিনাজপুর

•বুনিয়াদপুর পুরসভা: বুনিয়াদপুর মোড় থেকে নারায়ণপুর হাইস্কুল ২.৮৭ কিমি

উত্তর দিনাজপুর

•কালিয়াগঞ্জ পুরসভা: এভারেস্ট ফুড পার্ক থেকে মেসার্স অর্চনা পাম্প ৫ কিমি

•রায়গঞ্জ পুরসভা: এনফিল্ড শো রুম থেকে ঘড়ি মোড় ২ কিমি

দার্জিলিং

•মিরিক পুরসভা: অ্যালে গ্রাউন্ড থেকে মিরিক বাজার ৩.৩০ কিমি

•কালিম্পং পুরসভা: সেন্ট ফিলোমিনা স্কুল থেকে ভুটান হাউস ৫.৫০ কিমি

কোচবিহার

•মাথাভাঙা পুরসভা: মাথাভাঙা কলেজ থেকে পঞ্চানন মোড়
২.২৫ কিমি

আলিপুরদুয়ার

•আলিপুরদুয়ার পুরসভা: আলিপুর চৌপথী থেকে অসম রেল গেট ৩.৩০ কিমি

রায়গঞ্জের মোহনবাটী এলাকার মদ ব্যবসায়ী বুবাই মল্লিকের দাবি, মদ ও পানশালার ব্যবসায়ীরা ব্যাঙ্কের থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা ঋণ নিয়ে ব্যবসা করেন। ফলে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর তাঁরা দোকান বন্ধ করতে বাধ্য হওয়ায় বড়সড় লোকসানের আশঙ্কা করেছিলেন। তা ছাড়া মদের মদের দোকান ও পানশালাগুলি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বহু বেকার যুবক কর্মহীন হয়ে পড়েন। ফলে বহু পরিবার আর্থিক সঙ্কটের মুখে এসে দাঁড়িয়েছিল। মঙ্গলবার আবগারি দফতরের তরফে রায়গঞ্জ ও কালিয়াগঞ্জ পুরসভা এলাকার সমস্ত মদের দোকান ও পানশালা কর্তৃপক্ষকে ফের ব্যবসা চালুর নির্দেশ দেওয়া হয়। রাজ্য সরকার রাজ্য সড়ককে পুরসভা সড়ক ঘোষণা করে মদ ব্যবসায়ীদের পাশে দাঁড়ানোয় তাঁরা খুশি।

কোচবিহারে বিভিন্ন এলাকায় গোপনে মদ বিক্রির কারবার চলছে। আবগারি দফতরের কোচবিহারের সহকারি সুপারিন্টেন্ডেন্ট সন্দীপ ভুঁইয়া অবশ্য বলেন, “ বেআইনি মদ কারবার বন্ধে অভিযান চলছে। মঙ্গলবার রাতেও মাথাভাঙা, তুফানগঞ্জ, পুন্ডিবাড়ি এলাকায় অভিযান চালান হয়। ৫০ লিটার মদ নষ্ট করা হয়। ৩ জনকে ধরা হয়েছে।”

গঙ্গারামপুর মহকুমার সদর বুনিয়াদপুরে ৫১২ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে দুটি বিলেতি এবং দেশি মদের দোকান রয়েছে। দোকানগুলো বন্ধ থাকলেও তা সরানোর বিষয়ে ধন্ধে দোকানিরা। জেলাশাসক সঞ্জয় বসু বলেন, রাজ্যর তরফে জাতীয় সড়কের পাশ থেকে মদের দোকান সরানোর বিষয়ে নির্দেশ আসেনি। নির্দেশ এলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Liquor shop National Highway
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy