উদ্বেগ: গুলির পরে। নিজস্ব চিত্র
বাড়িতে ঢুকে এক বধূকে গুলি করে খুনের চেষ্টার অভিযোগকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়াল। রবিবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে রায়গঞ্জের বন্দর শ্মশানকলোনি সংলগ্ন শ্যামাপল্লি এলাকায়।
পুরনো শত্রুতার জেরে এই ঘটনা বলেই পুলিশের একাংশ মনে করছে। পুলিশ জানিয়েছে, গুলিতে জখম বধূর নাম সীমা ঝাঁ। তাঁর বা হাতে গুলি লেগেছে। রক্তাক্ত অবস্থায় রাতেই সীমাদেবীকে রায়গঞ্জ সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। অস্ত্রোপচারও হয়। শরীরে গুলি ছিল না।
ওই দিন গভীর রাতে পুলিশ এক ব্যক্তিকে গ্রেফতারও করেছে। ধৃতের নাম দীপক রায়। বাড়ি বন্দর লাগোয়া পশ্চিম বীরনগর এলাকায়। তিনি শহরের একটি নামকরা ক্লাবের সভাপতিও। ধৃতকে সোমবার রায়গঞ্জের মুখ্য বিচারবিভাগীয় আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে ৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
রবিবার দুপুরেই সীমাদেবী তাঁর স্বামী বাবুয়া এবং শ্বশুরকে খুনের চেষ্টা ও মারধর করার অভিযোগ করেছিলেন রায়গঞ্জ থানায়। তাতে তিন জনের নামও ছিল। রাতে গুলিবিদ্ধ হওয়ার পরে সীমা পুলিশের কাছে দাবি করেছেন, ওই রাতে মোট পাঁচ জন তাঁর স্বামীর খোঁজে বাড়িতে আসে। বাবুয়াকে না পেয়ে কেন সীমাদেবী পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন, তা নিয়ে বচসা শুরু করে। পুলিশের কাছে করা অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেয়। তা না মানায় আক্রোশে গুলি চালায়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি কার্তুজের খোল উদ্ধার করেছে।
উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার অনুপ জয়সওয়ালের দাবি, ‘‘দীর্ঘ দিন ধরে ওই বধূ ও তাঁর স্বামীর সঙ্গে বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্ত স্থানীয় কিছু লোকের গোলমাল চলছিল। তার জেরেই ঘটনা বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে। ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্ত চলছে।’’ বাকি অভিযুক্তদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। সীমার বাডির বারান্দা এবং উঠোনে এ দিনও রক্তের চাপচাপ দাগ রয়েছে। এলাকার বাসিন্দারা আতঙ্কে রয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, বাবুয়াকে পুলিশ একটি খুনের মামলায় গ্রেফতারও করেছিল। সম্প্রতি সে জামিনে ছাড়া পায়। গত ৭ অগস্ট রাতে বন্দর শ্মশান কলোনি এলাকার বাসিন্দা পেশায় গাড়ি চালক মুকুল মোহান্তের বাড়ির সামনে দুষ্কৃতীরা শূন্যে গুলি চালায় বলে দাবি। ওই দিনই বাবুয়া এবং আর এক জনের নামে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের হয়।
শহরের মধ্যে এই ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রায়গঞ্জের পুর প্রধান সন্দীপ বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘‘শহরের মধ্যে এ ধরনের ঘটনা কাম্য নয়। পুলিশকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে তিনি বলবেন।’’
সামনে পুজোর মরসুম। তার আগে এ ধরনের ঘটনায় শহরের ব্যবসায়ী বাসিন্দাদের মধ্যেও উদ্বেগ ছড়িয়েছে। এমন চলতে থাকলে পুজোর মুখে কারবার নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন তাঁদের একাংশ। পুরসভার তরফেও পুলিশ প্রশাসনের কাছে হস্তক্ষেপের দাবি করেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy