গাড়ি চড়ে বা নতুন বাইকে লং ড্রাইভে? তাও আবার করোনার কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে! অনেকেই সেটা ভাবতেই পারছেন না। কিন্তু অবাক করে দিয়েছে গাড়ির বাজারের সাম্প্রতিক ছবি। সবরকম ব্যবসার হালফিল পরিস্থিতি যেখানে খারাপ, সেখানে লকডাউনের পর বাইক ও স্কুটির বাজার গত জুলাই-অগস্ট থেকে চড়চড় করে বেড়েছে। সেইসঙ্গে গত তিনমাসে বেড়েছে ছোট গাড়ির বিক্রিও। যদিও লকডাউন এবং পরবর্তী কয়েকমাসে যে লোকসান হয়েছে তার অর্ধেকও কাটিয়ে ওঠা যায়নি।
বাইক-স্কুটির বাজার বেড়েছিল লকডাউনের কিছুদিন পর থেকেই। তবে ছোট গাড়ির চাহিদা এবং বিক্রি বেড়েছে অগস্ট থেকে। পুজোর মরসুমে তো ছিলই। শিলিগুড়ির অনেক গাড়ির শোরুম এখনও দেওয়ালির আমেজ ধরে রেখেছে। সেবক রোডে গাড়ির শোরুমগুলোর বাইরে আলোর সাজ। কর্মীর সংখ্যা বেড়েছে। একটি গাড়ির শোরুমের ম্যানেজার স্বপন ভুঁইয়া বললেন, ‘‘স্বাভাবিক সেপ্টেম্বর, অক্টোবর, নভেম্বর মাসগুলোতে যে বিক্রি হওয়ার কথা তার চেয়ে ২০ শতাংশের উপর বিক্রি বেড়েছে। চেন্নাইয়ে কারখানায় চাপ বেড়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে একদিকে শ্রমিকের অভাব। তাই চাহিদামতো গাড়ি সরবরাহ আসছে না।’’ পাশের আর একটি বহুজাতিক গাড়ির বিপণির ম্যানেজার সজল সরকার বললেন, ‘‘বাজার এখন চাঙ্গা। চাহিদা দারুণ। উল্টে সংস্থা সরবরাহ করতে পারছে না সব মডেল। অন্তত ৫০ টি গাড়ি ডেলিভারির চেয়ে খদ্দের অপেক্ষা করছে। অথচ তাঁদের মডেলের ১০টি নতুন গাড়ি সংস্থা থেকে পেয়েছি এই মাসে।’’ শোরুমগুলো সূত্রের খবর, তিন থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত গাড়ির বিক্রি বেশি। এই দামে গাড়ি মারুতি এবং হুন্ডাইয়ের মতো সংস্থাগুলো তৈরি করে থাকে। ১০ লক্ষ বা তার উপরে গাড়ির বাজারও ফিরেছে বলে মাহিন্দ্রার মতো সংস্থার শোরুমগুলোর একাংশের দাবি।
জলপাইগুড়ির একটি গাড়ির শোরুম থেকে চলতি মাসে গত শুক্রবার পর্যন্ত ৮৪টি গাড়ি বিক্রি হয়েছে। শোরুমের সেলস ম্যানেজার অনিরুদ্ধ সরকারের কথায়, ‘‘করোনা পরিস্থিতিতে নিত্যযাত্রীদের (সরকারি, কর্পোরেট সংস্থায় কর্মরত) একটা বড় অংশে গাড়ি কেনার প্রবণতা বেড়েছে। দূরত্ব বিধি বজায় রাখতে অনেকে গাড়ি কিনছেন। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় গাড়ি সরবরাহ করতেও কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে।’’ আলিপুরদুয়ারের একটি চার চাকার শোরুমের মালিক মানু সাহা জানান, লকডাউন শুরু হতেই ব্যবসায় লোকসান শুরু হয়। শোরুম বন্ধ করেন। তবে ওয়ার্কশপ চালু রাখেন। তিনি বলেন, ‘‘এখন বাজার ফিরেছে দেখে নতুন করে ফের শোরুম খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’ মালদহ, দক্ষিণ দিনাজপুর, কোচবিহার, এই চিত্র।