Advertisement
E-Paper

ঝোপ বুঝে ভোটের কোপ

তিন জেলায় গ্রাম পঞ্চায়েতের আসন সংখ্যা তিন হাজারেরও বেশি। সময় কম। তাই সব জায়গায় প্রচারে যাওয়া সম্ভব নয়। নেতাদের নজর তাই বিশেষ বিশেষ জায়গায়। কোন ‘ঝোপে’ কোন দল ‘কোপ’ মারতে চাইছে, কেনই বা সেদিকে নজর, তারই খোঁজ নিল আনন্দবাজার। তিন জেলায় গ্রাম পঞ্চায়েতের আসন সংখ্যা তিন হাজারেরও বেশি। সময় কম। তাই সব জায়গায় প্রচারে যাওয়া সম্ভব নয়। নেতাদের নজর তাই বিশেষ বিশেষ জায়গায়। কোন ‘ঝোপে’ কোন দল ‘কোপ’ মারতে চাইছে, কেনই বা সেদিকে নজর, তারই খোঁজ নিল আনন্দবাজার।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১২ মে ২০১৮ ০৩:৩৫
প্রচারে: (বাঁ দিকে) আলিপুরদুয়ারে অরূপ বিশ্বাস ও (ডান দিকে) কোচবিহারে দিলীপ ঘোষ। নিজস্ব চিত্র

প্রচারে: (বাঁ দিকে) আলিপুরদুয়ারে অরূপ বিশ্বাস ও (ডান দিকে) কোচবিহারে দিলীপ ঘোষ। নিজস্ব চিত্র

উত্তরে পদ্মের আবাদ

বিজেপির যে নেতারাই কোচবিহারে প্রচারে এসেছেন, তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে কোচবিহার উত্তর বিধানসভা এলাকায়। এঁদের মধ্যে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, প্রাক্তন সভাপতি রাহুল সিংহ সবাই রয়েছেন। গত বিধানসভা ভোটে কোচবিহার উত্তর আসনে জয়ী হয়েছে বামফ্রন্ট। তাই তাদের হিসেবে শাসক তৃণমূল তুলনামূলক দুর্বল। গত লোকসভা থেকে সমীকরণ বদলাতে থাকে। এগিয়ে যান বিজেপি প্রার্থী, পিছিয়ে পড়ে বামেরা। বহু বাম সমর্থক বিজেপিতে যোগদান করে বলে দাবি। বিজেপির এক জেলা নেতার কথায়, “উত্তরের জমি প্রস্তুত। এখন শুধু আবাদ করার পালা। তাই দিলীপ দা, রাহুলদা, সব দাদাকেই আনছি।“

শেষবেলায় দিলীপ ঘোষ এসেছেন। তাঁকে নিয়ে এ দিন জেলা পার্টি অফিসে কোচবিহার দক্ষিণ-সহ একাধিক এলাকার প্রার্থীদের সঙ্গে মিটিং করেন তিনি। পরে কোচবিহার উত্তর বিধানসভার ঢাংঢিংগুড়ি, কালজানি সহ তিন জায়গায় সভা করেন। রাহুল সিংকে দিয়েও সেখানে প্রচার করিয়েছে বিজেপি।

চা বলয়ে ভরসা কৈলাস

চা বলয়ে দলের বিধায়ক রয়েছে। মাদারিহাটের বিজেপি বিধায়ক মনোজ টিগ্গা চা শ্রমিক সংগঠনের নেতা। কালচিনি সহ চা বলয়ের সব আসনেই প্রার্থী দাঁড় করিয়েছে বিজেপি। এই অঞ্চলে প্রচার করার জন্য হিন্দিভাযী নেতা চেয়েছিলেন বিজেপি কর্মীরা। রাজ্যে প্রচারে কৈলাস বিজয়বর্গীয় আসছে শুনেই জেলা বিজেপির তরফে কালচিনিতে বেশি করে সভা করানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক নেতার কথায়, “টিভিতে প্রায়ই কৈলাসজির ছবি দেখা যায় বলে অনেকেই চেনেন। তাই ওঁকে দিয়ে সভা করানোর কথাই স্থির হয়। হিন্দিতে উনি চা শ্রমিকদের যা বলবেন সকলে তা বুঝতেও পারলেন, ভরসাও করলেন।”

লাটাগুড়িতে রোড-শো

সভার বক্তৃতা শুনবেন আর কতজন। মালবাজারের তৃণমূল নেতারা ঠিক করেছেন মৌলানি, লাটাগুড়িতে রোড শো করলেন রাজ্যেয়র পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব এবং পূর্ত মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। দু দিন দুই মন্ত্রী রোড শো করেছেন। হুডখোলা জিপ সহজেই গ্রামের সরু রাস্তাতেও ঢুকে পড়তে পারবে। সে কাণেই সভার বদলে রোড শোয়ের প্রস্তাব। ভোট যত এগোচ্ছে ক্রান্তি, লাটাগুড়ি-মৌলানিতে বিজেপির পতাকার সংখ্যা তত বাড়ছে বলে দাবি তৃণমূল নেতাদের। এ কথা জানানো হয় জেলা অফিসে। সেখান থেকেই ঠিক হয় রোড শো করবেন গৌতমবাবু-অরূপবাবু। হুডখোলা জিপে মাইক থাকবে। তা দিয়ে বক্তৃতাও হবে। গত বৃহস্পতিবার মৌলানি, ক্রান্তি, রাজাডাঙায় রোড শো করেছেন গৌতমবাবু। এ দিন করলেন অরূপবাবু। কাঁচা রাস্তা দিয়ে গ্রামের ভিতরে বাড়ির উঠোনের পাশ দিয়ে এগিয়েছে রোড শোয়ের জিপ। এলাকার এক তৃণমূল নেতার কথায়, “এটাই তো চাইছিলাম। বিজেপি শুধু পতাকা লাগিয়েছে। কোনও নেতা আনতে পারেনি। ফাঁকা মাঠে রোড শো করে গোল দেওয়া হলো।“

‘ক্ষোভে’র ওষুধ রবি-দা

অস্বস্তি নাটাবাড়িতে। জিরানপুর, গুড়িয়াহাটি এই দুই গ্রানে তৃণমূলে গোঁজ রয়েছে বেশ কয়েকজন। গত পঞ্চায়েত ভোটে সহজেই দুই আসনে জয় পেয়েছিল তৃণমূল। দলের নেতাদের দাবি, বিরোধীরা এবারেও জয়ের পথে কোনও বাধা নয়। সমস্যা শুধু তৈরি করেছে গোঁজ প্রার্থীরা। ভোট কাটাকাটি হলে দল আসন খোয়ালে বেশ কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েত হাতছাড়া হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তৃণমূল সূত্রের দাবি, রাজ্য নেতাদের বলে, জেলা নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসিয়েও গোঁজদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করা যায়নি। তাই শেষ বেলায় আসরে নেমেছেন খোদ জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। জেলা রাজনীতিতে সকলেই জানেন, রবিবাবু ওষুধি গাছগাছালি চিনতে বেশ দড়। তাই গোঁজের টোটকাও তাঁর কাছেই রয়েছে বলে কর্মীদের আশা। বিশেষ অনুরোধ করে রবিবাবুকে নিয়ে আসা হয়েছে নাটাবাড়িতে। নাটাবাড়ি বিধানসভার জিরানপুর অঞ্চলের বালাসি, ধুমপুর এলাকায়।সকাল থেকে রাত পরপর পথসভা করে চলেছেন রবিবাবু।

আলিপুরদুয়ারে অরূপ

আলিপুরদুয়ারে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার দু’দিন দিনভর প্রচার করেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূলের জেলার পর্যবেক্ষক অরূপ বিশ্বাস৷ শুক্রবার আলিপুরদুয়ার- ২নম্বর ব্লকের চিকলিগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার- ১নম্বর ব্লকের বাবুরহাটে সভা করেন অরূপবাবু৷ তৃণমূল সূত্রের খবর, জেলায় তৃণমূল নেতাদের কাছে গোঁজ সমস্যা সবচেয়ে বড় আকাড়ে দেখা দিয়েছে আলিপুরদুয়ার- ২নম্বর ব্লক ও কুমারগ্রামে৷ পাশাপাশি আলিপুরদুয়ার- ১নম্বর ব্লকের একটি গোটা গ্রাম পঞ্চায়েত সহ অনেক আসন সহ বেশ কিছু আসন বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতলেও, ওই ব্লকের বেশ কিছু জায়গায় বিরোধীরা, বিশেষ করে বিজেপি টক্কর দিতে পারে বলে আশঙ্কায় তৃণমূলের অনেক নেতা৷ সে কারণে জেলায় আসার পর থেকে বারবার অরূপবাবুকে আনা হয়েছে এই এলাকায়, এমনই জানাচ্ছেন তৃণমূল কর্মীরা।

West Bengal Panchayat Elections 2018 Election Campaign TMC BJP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy