গুজরাত ও হিমাচল প্রদেশের ভোটের ফল বেরোনোর পরে কোচবিহারে বিজেপি কর্মীদের উল্লাস। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব
আবির উড়িয়ে মিছিল করে দলের গুজরাত জয় উদ্যাপন করলেন বিজেপির নেতা-কর্মীরা। তাঁদের আশা, এ রাজ্যেও তাঁদের সংগঠন এ বার চাঙা হবে, জন সমর্থন বাড়বে। পঞ্চায়েত ভোটেই তার ফল মিলবে। যদিও অন্য দলগুলির বক্তব্য, গুজরাতে বিজেপি কিন্তু আসলে ব্যাকফুটেই চলে গিয়েছে।
বিজেপি অবশ্য এখনই চালিয়ে খেলতে শুরু করার পক্ষপাতী। বিজেপির খোদ রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ দাবি করেছেন, শীঘ্রই দলে দলে বিজেপিতে যোগদানের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন উত্তরবঙ্গের অনেকেই। সোমবার দুপুর থেকেই কোচবিহার থেকে শিলিগুড়ি, মালদহ, আলিপুরদুয়ার পর্যন্ত বিস্তীর্ণ জায়গায় বিজেপি কর্মীরা উচ্ছ্বাসে মেতেছেন। আবির উড়েছে। পটকা ফেটেছে। পুলিশ বাধা দেয়নি। তৃণমূলের সঙ্গে বিজেপির সংঘর্ষেরও খবরও নেই।
বিজেপি’র উত্তরবঙ্গের আহ্বায়ক রথীন বসু বলেন, ‘‘দু’টি রাজ্যে ভোট হয়েছে। তার মধ্যে গুজরাতে আমাদের বিরুদ্ধে দলিত ইস্যু করে নানা ভাবে চেষ্টা করেও কিছু করতে পারেনি। ২২ বছর পরেও আস্থা রয়েছে মানুষের। আর হিমাচলপ্রদেশে আমরা ক্ষমতায় এসেছি। এই জয় এ রাজ্যেও বিজেপি কর্মী, নেতাদের উদ্বুদ্ধ করেছে। উত্তরবঙ্গেও সংগঠন সাজাতে অনেক সাহায্য করবে।’’
ক’দিন আগেই শিলিগুড়িতে বিজেপির নেতা মুকুল রায়, দিলীপবাবুরা দাবি করেছিলেন, শীঘ্রই উত্তরবঙ্গের নানা দলের নেতা-কর্মীরা দল বদলে বিজেপিতে যোগ দেবেন। বিজেপির দার্জিলিং জেলার সাধারণ সম্পাদক অভিজিৎ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘ভোটের ফলের চুলচেরা হিসেব পরে হবে। ফের মানুষ গুজরাতে বিজেপিকে ক্ষমতা দিয়েছেন। হিমাচলে কংগ্রেসকে অপসারিত করে আমাদের উপরে ভরসা রেখেছেন। তা দেখে অনেকেই অনুপ্রাণিত হচ্ছেন। শীঘ্রই সেটা সকলে দেখবেন।’’
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপবাবু এক ধাপ এগিয়ে দাবি করেছেন, ‘‘উত্তরবঙ্গে বরাবরই আমাদের সংগঠন ভাল। মনোবল আরও বাড়ল। আগামী সপ্তাহ থেকেই উত্তরবঙ্গের জেলায় জেলায় আমাদের প্রচার শুরু হবে। নানা দলের নেতা-কর্মীরা আমাদের দলে যোগদান করবেন।’’
তবে তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি তথা পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব জানান, বিজেপি যে সব দাবি করে থাকে তা যে কতটা মিথ্যে সেটা যে ক্রমশ সকলে ধরে ফেলছেন, তা গুজরাতের ফলেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘‘সব ধরনের শক্তি কাজে লাগিয়ে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতার দাবি করলেও ১০০ আসনও পেরোতে পারেনি বিজেপি।’’ গৌতমবাবুর বক্তব্য, ‘‘কাজেই এখন বিজেপির নেতারা যে সব দাবি করছেন তা নিয়ে কিছু বলব না।’’
সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা দার্জিলিং জেলা সম্পাদক জীবেশ সরকার মনে করেন, গুজরাতে বিজেপিকে জবরদস্ত টক্কর দিয়েছে কংগ্রেস। তিনি বলেন, ‘‘কেন্দ্র-রাজ্যের প্রশাসন সহ নানা শক্তি কাজে লাগিয়েও যে ফল হয়েছে তা নৈতিক ভাবে বিজেপির পক্ষে গৌরবজনক নয়। মোদী হাওয়া যে দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে সেটা বুঝিয়ে দিল প্রধানমন্ত্রীর খাসতালুকই।’’
দার্জিলিং জেলা কংগ্রেস সভাপতি শঙ্কর মালাকারের দাবি, ‘‘সাম্প্রদায়িক রাজনীতিতে বিরক্ত দেশের মানুষ। জিততে না পারলেও মানুষের আশীর্বাদ পেয়েছি আমরাই।’’
অন্য দলগুলি যা-ই বলুক, বিজেপির নেতা কর্মীরা অবশ্য এ দিন উচ্ছ্বাসে মেতেই কাটিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy