Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Bimal Gurung. Binay Tamang

‘আটকে দেখাও দেখি’ বিনয়কে বললেন গুরুং

গুরুংয়ের সভা শেষ হতেই বিনয়পন্থী মোর্চার তরফে জানানো হয়েছে, আজ, সোমবার গুরুংয়ের খাসতালুক জামুনীতে অনীত থাপার সভা। 

জোয়ার: বিমল গুরুংয়ের সভায় ভিড় কর্মী-সমর্থকদের। রবিবার শিলিগুড়িতে। ছবি: স্বরূপ সরকার।

জোয়ার: বিমল গুরুংয়ের সভায় ভিড় কর্মী-সমর্থকদের। রবিবার শিলিগুড়িতে। ছবি: স্বরূপ সরকার।

কৌশিক চৌধুরী
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২০ ০৪:৩২
Share: Save:

এক মাসের প্রায় ব্যবধান। কলকাতা থেকে ফিরে বিনয় তামাং বলেছিলেন, ‘‘বিমল গুরুং ক্লোজড চ্যাপ্টার। আমরা সবুজ পতাকা দেখালেই উনি আসবেন পাহাড়ে।’’ আর রবিবার তাঁর মতোই কলকাতা থেকে ফিরে বিমল গুরুং বললেন, ‘‘হু আর ইউ (তুমি কে)? পাহাড়ে আমার যখন ইচ্ছে, যেখানে ইচ্ছে যাব। শিলিগুড়ি থেকে সাতদিন পর বাড়ি যাব। দার্জিলিঙে গিয়ে সভাও করব। কে কী করে দেখি! আমাকে আটকে দেখাও!’’

সাড়ে তিন বছর পর রবিবার বিকেলে নিজের জেলায় ফেরার পর সমতল থেকেই পুরানো সহকর্মী বিনয় তো বটেই, জিটিএ চেয়ারম্যান অনীত থাপাকেও এই ভাষাতেই কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়ে দিলেন গুরুং।

এতে পাহাড়ে উত্তেজনা যে আরও বাড়বে তা রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের কাছে পরিষ্কার।

গুরুংয়ের সভা শেষ হতেই বিনয়পন্থী মোর্চার তরফে জানানো হয়েছে, আজ, সোমবার গুরুংয়ের খাসতালুক জামুনীতে অনীত থাপার সভা। মুখপাত্র কেশবরাজ পোখরেল ঘোষণা করেন, আগামী ১৩ ডিসেম্বর রবিবার সুকনা খেলার মাঠে জনসভা। মুখ্য বক্তা বিনয় তামাং এবং অনীত থাপা। গুরুং-র মতো সমতলে সভা করে তাঁরা নিজেদের শক্তি প্রর্দশন করবেন তা বুঝিয়ে দিলেন।

গুরুংয়ের সভা, নানা মন্তব্য বা অভিযোগ নিয়ে বিনয় বলেছেন, ‘‘এখনই কোনও মন্তব্য নয়। যা বলার পরে বলব।’’ যদিও অনীতেরা এ দিন অবধি একবারও সরাসরি গুরুংকে পাহাড়ে উঠতে দেবেন না বলেননি। উল্টে অনীত বলেছেন, ‘‘যে কেউ পাহাড়ে আসতে পারে। কিন্তু শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে। নইলে আমরা ছাড়ব না।’’

বিমল এ দিন সভায় বিনয় ও অনীতকে নিয়ে বিজেপির পর সবচেয়ে বেশি সময় ভাষণে সময় দেন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ১৭০০ কোটি টাকা জিটিএতে দিয়েছেন। তার পরেও শিক্ষা থেকে মিড-ডে মিল, রাস্তা সব জায়গায় দুর্নীতি। হিসাব এ বার বুঝে নিতে হবে। পাহাড়ের টাকার হিসাব আমাদের চাই।’’ শুধু দুর্নীতির অভিযোগ নয়, ক্ষমতাসীন দুই নেতা ‘বেকার নেতা’ বলেও গুরুং কটাক্ষ করেছেন। তিনি জানান, দিদিকে (মমতা) বিষয়টা বুঝতে হবে। ওঁদের গাছে ভাল ফল নাই। লোকসভা ভোটে হারে। বিধানসভা উপ নির্বাচনে হারে।

মানুষ সব দেখছে, কাদের শক্তি কতটা।

বিজেপিকে উদ্দেশ্য করে ‘রামায়ণের যুদ্ধ’ শুরু হল বলেও গুরুং বলেছেন, ‘‘শান্তি বজায় রাখতে হবে। আমরা বাংলার আইন, সংবিধানকে সম্মান করি।’’

রাজনৈতিক নেতারা মনে করছেন, দুই পক্ষ তৃণমূলের পক্ষে থাকলেও দুই পক্ষ এখন একে অপরের বিরুদ্ধে লড়বে। তাই অনীত বলেন, ‘‘শক্তি প্রদর্শন আমরা করব। আর তা বদলার জন্য নয় বদলের জন্য, পাহাড়বাসী এই পরিবর্তনটাই চেয়েছেন।’’

এই অবস্থায় রাজ্য সরকারের তরফে প্রতিটা মুহূর্তে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে পাহাড়ে। আইন-শৃঙ্খলা যাতে না ভাঙে তা দেখা হচ্ছে।

উত্তরবঙ্গের তৃণমূল নেতা তথা পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেছেন, ‘‘আমরা শুধু শান্তি এবং উন্নয়নের পক্ষে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bimal Gurung Binay Tamang Siliguri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE