Advertisement
০৪ মে ২০২৪

বাড়ি ভাঙচুর, বোমা চাঁচলে, জখম ১২

ভোট মিটতেই সংঘর্ষ, বাড়ি ভাঙচুর ও বোমাবাজির ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠল মালদহের চাঁচলের মাস্তিপাড়া ও মালতীপুরের কুমারগঞ্জ এলাকা। রবিবার রাতে ও সোমবার সকালে ওই দুই এলাকায় রাজনৈতিক সংঘর্ষে আহত হয়েছেন পাঁচ মহিলা-সহ ১২ জন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
চাঁচল শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০১৬ ০২:১৫
Share: Save:

ভোট মিটতেই সংঘর্ষ, বাড়ি ভাঙচুর ও বোমাবাজির ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠল মালদহের চাঁচলের মাস্তিপাড়া ও মালতীপুরের কুমারগঞ্জ এলাকা। রবিবার রাতে ও সোমবার সকালে ওই দুই এলাকায় রাজনৈতিক সংঘর্ষে আহত হয়েছেন পাঁচ মহিলা-সহ ১২ জন। তাদের মধ্যে তিনজনকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। বাকিদের অবশ্য প্রাথমিক চিকিত্সার পর ছেড়ে দেওয়া হয়।

তৃণমূলকে ভোট না দেওয়ায় রবিবার রাতে চাঁচলের মাস্তিপাড়ায় জোট সমর্থকদের বাড়িতে চড়াও হয়ে মারধর করে বাড়ি ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ। মারধর করা হয় মহিলাদেরও।

ওই ঘটনায় জড়িয়ে গিয়েছে চাঁচল-১ ব্লক তৃণমূল সভাপতির নামও। তৃণমূল সভাপতি অবশ্য হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। জোটের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ তুলেছেন তাঁরা। সোমবার সকালে মালতীপুরের কুমারগঞ্জে কংগ্রেস ও আরএসপির গন্ডগোলের সময় ব্যাপক বোমাবাজিও করা হয় বলে অভিযোগ। তবে দু’টি এলাকাতেই পরিস্থিতি আপাতত নিয়ন্ত্রণে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।

চাঁচলের এসডিপিও রানা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দু’টি ঘটনাতেই অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগ হয়েছে। সব খতিয়ে দেখেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মাস্তিপাড়ায় রবিবার রাতে সিপিএম সমর্থক শেখ হানিফুল ও শেখ আলমের বাড়িতে তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা হাঁসুয়া, লাঠিসোটা নিয়ে চড়াও হয়ে ভাঙচুর শুরু করে। তৃণমূলকে ভোট না দেওয়ায় তাদের মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। জাহাঙ্গীর আলম নামে এক যুবকের মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়। হাঁসুয়ার আঘাতে রক্ত ঝরে মহিলাদেরও। এলাকা ছাড়া করার হুমকি দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ।

ওই এলাকাতেই বাড়ি চাঁচল-১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি ইনতাজ হোসেনের। তার মদতে ভাইপো জাকির হোসেন দলবল নিয়ে হামলা চালায় বলে অভিযোগ। তৃণমূলের অবশ্য পাল্টা অভিযোগ, জোটপ্রার্থীকে ভোট না দেওয়ায় সিপিএম ও কংগ্রেস কর্মীরাই লতিফুর রহমান নামে এক তৃণমূল সমর্থকের বাড়িতে ঢুকে পরিবারের লোকজনদের মারধর করে। তাদের মারে গুরুতর আহত লতিফুরের স্ত্রীকে চাঁচল মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।

জোটের নেতারা অবশ্য তৃণমূলের অভিযোগ মানতে চাননি। চাঁচলে বামফ্রন্টের আহ্বায়ক অমল মন্ডল ও চাঁচল-১ ব্লক কংগ্রেস সভাপতি ইন্দ্রনারায়ণ মজুমদার বলেন, ‘‘হারবে বুঝতে পেরে ওরা সন্ত্রাস শুরু করেছে। তৃণমূলকে ভোট না দেওয়ায় বাড়িতে চড়াও হয়ে ওরা মারধর করে। এখন নিজেদের বাঁচাতে পাল্টা হামলার হয়েছে বলে সাজানো অভিযোগ করছে।’’

যদিও ব্লক তৃণমূল সভাপতির দাবি, তাঁর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ, তা হাস্যকর। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূলকে ভোট দেওয়ায় ওরাই তো আমাদের সমর্থকের বাড়িতে চড়াও হয়ে হামলা চালিয়েছে। আমার ভাইপো বাধা দিতে গিয়েছিল। এখন তাকেও ফাঁসাতে চাইছে।’’

মালতীপুরে জোট হয়নি। এক আরএসপি নেতা আব্দুল কুদ্দুসকে কংগ্রেস কর্মীরা মারধর করে বলে অভিযোগ। তারপর কংগ্রেসী প্রধান সেরিনা বিবির ভাই সইদুল ইসলামকে রাস্তায় একা পেয়ে বাইক থেকে নামিয়ে আরএসপি কর্মীরা বেধড়ক মারধর করে বলে অভিযোগ। এরপর শুরু হয় বোমাবাজি।

আরএসপি প্রার্থী আব্দুর রহিম বক্সি বলেন, ‘‘কুদ্দুসকে ওরা প্রাণে মারার হুমকি দিচ্ছে। এ দিন ওকে কংগ্রেস কর্মীরা তাড়া করে। পালানোর সময় তাকে লক্ষ্য করে বোমাও ছোঁড়ে। যদিও মালতীপুরের কংগ্রেস প্রার্থী আলবেরুনি জুলকারনাইন বলেন, ‘‘আরএসপি ওখানে সন্ত্রাস শুরু করেছে। আমাদের কর্মীদের একা পেলেই মারধর করছে, ভয় দেখাতে বোমাবাজিও করছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

bomb blast injured
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE