E-Paper

ভারতে ব্যবসা ভুটানের টাকায়

উত্তরের বিভিন্ন জেলা থেকে বহু মানুষ ভুটানে শ্রমিকের কাজ করতে যান। তাঁদের ভুটান টাকাতেই দৈনিক মজুরি দেওয়া হয়ে থাকে।

সৌম্যদ্বীপ সেন

শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০২৫ ০৭:১৭
ব্যবসা চলছে ভুটানের টাকায়।

ব্যবসা চলছে ভুটানের টাকায়। —ছবি : সংগৃহীত

বিদেশের টাকাতেই ব্যবসা চলছে উত্তরবঙ্গের অন্যতম বাণিজ্য-শহর জয়গাঁতে। বাসভাড়া মেটানো থেকে দোকান-বাজার— সব জায়গাতেই লেনদেন হচ্ছে ভুটানের টাকায়। কিন্তু, জয়গাঁ ও তার আশপাশের এলাকা ছাড়া কোথাও এই টাকা গ্রহণ করা হয় না। ফলে ‘বাট্টা’ প্রক্রিয়ায় ভুটানের টাকাকে ভারতীয় মুদ্রায় বদলে নিতে হচ্ছে ব্যবসায়ী ও ভুটানে কাজে যাওয়া শ্রমিকদের। এই ‘বাট্টা’য় বেশি অঙ্কের ভুটানের টাকা দিয়ে তার বিনিময়ে কম অঙ্কের ভারতীয় টাকা মিলছে বলে অভিযোগ।

উত্তরের বিভিন্ন জেলা থেকে বহু মানুষ ভুটানে শ্রমিকের কাজ করতে যান। তাঁদের ভুটান টাকাতেই দৈনিক মজুরি দেওয়া হয়ে থাকে। আবার, জয়গাঁয় আসা ভুটানের নাগরিকরাও ওই ভুটান টাকার বিনিময়েই কেনাকাটা করছেন। যে কারণে জয়গাঁ ও তার আশপাশের এলাকায় ছেয়ে গিয়েছে এই ভুটান নোট। সীমান্ত শহরের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, আগে একটি ভারতীয় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখা ছিল ভুটানে। সেখানেই অ্যাকাউন্ট ছিল অধিকাংশ ভারতীয় ব্যবসায়ী ও বাসিন্দাদের। কংগ্রেস জমানায় কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশে বন্ধ হয়ে যায় সেই ব্যাঙ্ক। এর পরে ভুটানের ব্যাঙ্কে ড্রাফট মারফত বদলি করা হতো এই ভুটান টাকা। এ ভাবেই ব্যবসায়ী এবং ভুটানে কাজ করা শ্রমিকেরা ভুটান নোট দিয়ে তার বদলে পেয়ে যেতেন ভারতীয় মুদ্রা।

কিন্তু করোনা পরে বন্ধ হয়ে যায় ড্রাফটের মাধ্যমে টাকা বদল। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, কোনও এক্সচেঞ্জ কাউন্টার না থাকায় জয়গাঁতে তিন শতাংশ তখনও তারও বেশি 'বাট্টা' দিয়ে ভুটানি টাকা ভারতের টাকায় বদল করতে হচ্ছে। জয়গাঁ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি রবিশঙ্কর গুপ্তা বলেন, ‘‘আমি ভারত ও ভুটান দু’দেশেই প্রশাসনের শীর্ষ মহলে এই সমস্যা সমাধানের আর্জি জানিয়েছি। কোনও কাজ হয়নি। এর প্রভাব ব্যবসাতেও পড়ছে।’’

প্রাক্তন সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জন বার্লা বলেন, ‘‘আমি দায়িত্বে থাকাকালীন এ নিয়ে একাধিক বার সরব হয়েছি। ভুটান প্রশাসনকেও বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখার আর্জি জানিয়েছি। তারা সমস্যা সমাধানের আশ্বাসও দিয়েছিলেন। তবে এখন কত দূর সেটা বাস্তবায়িত হয়েছে তা জানা নেই।’’

আলিপুরদুয়ার সাংসদ মনোজ টিগ্গা জানান, এ নিয়ে দ্রুত ব্য়াবসায়ীদের সঙ্গে একটি বৈঠক করার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর। তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ প্রকাশচিক বরাইক বলেন, ‘‘এ বিষয়ে এক বার ব্যবসায়ীরা বলেছিলেন। সে সময়ে সাংসদ ছিলাম না আমি। তবে এখন যখন আমার কাছে ক্ষমতা রয়েছে, আমি নিশ্চয়ই উপরমহলে বিষয়টি নিয়ে কথা বলবো।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Jaigaon

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy